নিজস্ব সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ারঃ
অসমে নাগরিকপঞ্জির চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরই অসম বাংলা সীমানা ঘেঁষা জেলা আলিপুরদুয়ারের ঘরে ঘরে উৎকন্ঠার ছবি। নাগরিক পঞ্জির তালিকাতে নিজেদের আত্মীয় পরিজনদের নাম রয়েছে কিনা তা দেখতেই চরম উৎকন্ঠায় একবেলা কাটালেন অনেকে।
আর তারপরে বিকেলের দিকে অনেকেই হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছেন। আবার নাগরিক পঞ্জিতে নাম খুঁজে পেয়ে শেষ বেলায় চওড়া হাসি হেসেছেন অনেকে। আলিপুরদুয়ার পুরসভাতে চাকরি করেন কনককান্তি সরকার। বিয়ে করেছেন অসমের নিউ বঙ্গাইগাওয়ের ডাংতলা এলাকার গুহ পরিবারের সোমা গুহকে। সকাল থেকেই চরম উৎকন্ঠায় ছিলেন আলিপুরদুয়ার শহরের ১১ হাত কালিবাড়ি এলাকার কনকবাবুর পরিবার।
কনকবাবুর শ্বশুর, শ্যালক ও শ্যালকের ছেলের নাম নেই নাগরিক পঞ্জির তালিকাতে। দুপুরের পর থেকে যেন হতাশা গ্রাস করেছে গোটা পরিবারকে। শ্বশুর মশাই প্রাক্তন রেলকর্মী অসিত গুহ ও তার ছেলে মিন্টু গুহ এবং নাতি বিবেক গুহ কারও নাম এই নাগরিক পঞ্জিতে নেই। নাম উঠেছে মিন্টু বাবুর স্ত্রী মধুমিতা গুহর।
এদিন আলিপুরদুয়ারের কনক কান্তি সরকার বলেন, “ বাড়িতে খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা। বাবা ভাইয়েরা নিজ গৃহে একেবারে পরবাসি হয়ে গেলে কোন মেয়ের মুখে ভাত উঠতে পারে বলুন। সব কাগজ জমা দেওয়া হয়েছিল। তাও চুড়ান্ত নাগরিক পঞ্জিতে নাম নেই। এদিক থেকে কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। এই উৎকন্ঠার অবসান কোন পথে তাও বুঝতে পারছি না। আমার স্ত্রী খুব ভেঙ্গে পরেছেন।”
একই অবস্থা আলিপুরদুয়ারের নেতাজি রোডের কুন্ডুপাড়ার বিবেক পালদের অবস্থা।দিন রাত ফোনে আলাপ আলোচনা হচ্ছে। দুই পরিবারের নাওয়া খাওয়া প্রায় সব বন্ধ। এত কেবল দুটো পরিবারের কথা। একই অবস্থা আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন পরিবারের অবস্থা। নাগরিক পঞ্জির চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর অবশ্য ঘরে ঘরে এই হতাশার ছবি থাকলেও অসম বাংলা সীমানায় এই ঘটনার তেমন কোন প্রভাব পড়েনি।
আরও পড়ুনঃ চুড়ান্ত নাগরিকপঞ্জিতে নাম নেই, আত্মঘাতী মহিলা
আলিপুরদুয়ারের অসম সীমানায় পাকড়িগুড়ির বাসিন্দা মিন্টু বিশ্বাস বলেন, “ সীমানায় এই ঘটনার কোন প্রভাব নেই। অসমের দিকে সীমানা লাগোয়া শিমুলটাপু এলাকায় হাট প্রতি শনিবারের মতোই এদিনও স্বাভাবিক ভাবেই হয়েছে। অসমে কোন গন্ডগোল হলেই এই হাট এপারে পাকড়িগুড়িতে চলে আসে। কিন্তু শিমুলটাপুতেই সাপ্তাহিক এই হাট হওয়া মানে কোন সমস্যা নেই ওপারে। আর এপারেও কোন সমস্যা নেই।”
বিষয়টি নিয়ে আলিপুরদুয়ারের জেলা শাসক সুরেন্দ্রকুমার মীনা বলেন, “এই বিষয়ে রাজ্য থেকে কোন নির্দেশ এখনও আসেনি। এদিকের পরিস্থিতি সব ঠিক রয়েছে। আমরা সব রকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি আছি। ”একদিনের নাগরিক পঞ্জি কেমন যেন সব বিশ্বাসে আঘাত হেনে দিয়েছে। ছারখার করে দিচ্ছে পুরনো মেলবন্ধনের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584