নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ
করোনার কবলে গোটা বিশ্ব। ক্রমশ বাড়ছে সংক্রামিত ও মৃতের সংখ্যা। করোনা কালে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশাও কোনওদিন ভুলবে না দেশবাসী। যেমন ভোলেনি কলকাতার বারোয়ারি বড়িশা ক্লাব। তাই এবছর দেবী দুর্গার বদলে পরিযায়ী শ্রমিক মায়ের মূর্তি পুজো করেছে বেহালার এই ক্লাবের পুজো উদ্যোক্তারা। কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির মৃৎশিল্পী পল্লব ভৌমিকের সেই অপরূপ সৃষ্টি এবার বিসর্জন যাচ্ছে না।
বরং সেই প্রতিমা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। পরিযায়ী শ্রমিকদের যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখগুলি যাতে কেউ ভুলে না যান সেই জন্য বড়িশা ক্লাবের দেবী প্রতিমা সংরক্ষণের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর নির্দেশ মতোই বড়িশা ক্লাবের প্রতিমা সংরক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম।
করোনা আবহে পুজো উদ্বোধন মূলত ভার্চুয়ালি সারেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে কয়েকটি মণ্ডপে গিয়ে নিজেই প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন। সেই তালিকাতেই ছিল বড়িশা ক্লাবও। সেখানে গিয়ে দেবী প্রতিমা দেখে অবাক হন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
আরও পড়ুনঃ রাজ্যের সব থানার ওসি-আইসিদের বিজয়ায় শুভেচ্ছাপত্র মুখ্যমন্ত্রীর
পরিযায়ী মায়ের আদলে গড়া সেই দেবী প্রতিমার ছবি ভাইরাল হতেও বিশেষ সময় লাগেনি। সকলেই ধন্য ধন্য করতে থাকেন। এবার ওই প্রতিমাই সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ক্লাব কর্তৃপক্ষকে সেকথা জানান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
জানা গিয়েছে, আপাতত রবীন্দ্র সরোবরের ‘মা ফিরে এল’ প্রদর্শন কক্ষে রাখা হবে পরিযায়ী শ্রমিক মায়ের প্রতিমাকে। পরে ওই প্রতিমা কোনও আইল্যান্ডে রাখা হবে। তারপর ওই মূর্তির নামানুসারে আইল্যান্ড সংলগ্ন রাস্তার নামকরণ করা হবে।
আরও পড়ুনঃ আগামী একমাস পাহাড়ই রাজ্যপালের ঠিকানা! শুরু জল্পনা
সেইমতো জায়গা খোঁজার কাজ শুরু হয়েছে। বড়িশা ক্লাবের পুজোর থিমের মূল ভাবনা যাঁর, সেই থিমমেকার শিল্পী রিন্টু দাস জানিয়েছেন, মূর্তিটি যাতে রোদে নষ্ট না হয় তাই আচ্ছাদনের বন্দোবস্ত করা প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, বড়িশা ক্লাবের এবারের থিম ‘ত্রাণ’। লড়াকু পরিযায়ী শ্রমিক মাকে কুর্নিশ জানিয়েছে বড়িশা ক্লাব। বেহালার এই ক্লাবের দুর্গোৎসবে পরিযায়ী শ্রমিক মায়ের রূপে দেবী দুর্গাকে আদল দেওয়া হয়। মায়ের হাতে কোনও অস্ত্র ছিল না। কোলে সন্তান আর হাতে ছিল ত্রাণের থলি। কোলের সন্তানটি কার্তিক। গণেশ বসে অসুরের উপর।
শিল্পী রিন্টু দাসের ভাবনায় কৃষ্ণনগরের পল্লব ভৌমিক দেবী প্রতিমা তৈরি করেছিলেন। যা ব্যতিক্রমী দুর্গাপুজোয় সত্যিই সকলকে অবাক করেছে। বড়িশা ক্লাবে পুজো উদ্বোধন করতে গিয়ে সেই প্রতিমার ছবিই নিজের মোবাইলে তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক ও টুইটারেও সেই ছবি পোস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই ভাবনা ও রূপায়ণ এতটাই পছন্দ হয়েছে যে প্রতিমা সংরক্ষণের নির্দেশ দেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584