উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
বাগবাজারের বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে অসহায় মানুষকে সাহায্যের আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আজ বেলা বারোটা নাগাদ ঘটনাস্থলে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও শশী পাঁজা, পুরবোর্ডের সদস্য অতীন ঘোষ ও পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা৷ আপাতত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বাগবাজার মহিলা কলেজে থাকার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ গতকাল ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়েন স্থানীয় কাউন্সিলর বাপী ঘোষ এবং রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজ ও শুক্রবার অগ্নিদগ্ধ এলাকা সাফ করা হবে।
এরপর আবার সেখানে নতুনভাবে গৃহহীনদের জন্য বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে।” মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলার সঙ্গে উদ্বোধন কার্যালয়ের মহারাজদের সঙ্গেও কথা বলেন। বাগবাজারের আগুন নিভলেও ছাই ঘাঁটছে মানুষ৷ ইতিউতি ছড়িয়ে আছে ঘর-গেরস্থালির আধপোড়া টুকরো। যেন সামনে পড়ে আছে বর্তমান-ইতিহাস৷ ছাই, গরম ছাই জমা হয়েছে৷
অনেকের আলমারিতে থাকা সোনা-রুপোর গয়নাও গ্রাস করেছে আগুন৷ হাতড়ে হাতড়ে গলে যাওয়া সোনা-রুপোর দলা খুঁজে চলেছে অসহায় চোখগুলো।চোখের সামনে এমন জতুগৃহ প্রত্যক্ষ করেনি এর আগে কেউ।
ক্ষতিগ্রস্তদের গৃহ নির্মাণের আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী।গতকাল বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বাগবাজার মহিলা কলেজ লাগোয়া বস্তির একশো পয়ত্রিশটি ঘর।
গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ বাগবাজার মহিলা কলেজের সামনের ঝুপড়িতে ভয়াবহ আগুন লাগে৷ প্রকট শব্দে পরপর পাঁচটি সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ হয়৷ সঙ্গে সঙ্গে আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে গোটা এলাকাকে ৷ ঘটনাস্থানে পৌঁছায় দমকলের সাতাশটি ইঞ্জিন৷
আরও পড়ুনঃ ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই বাগবাজারের বস্তি
কিন্তু আগুন লাগার অনেক পরে দমকল আসে। আর তাই ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের মনে৷ দমকল কর্মীদের উপর চড়াও হয় সাধারণ মানুষ৷ বাসস্থান হারানো মানুষগুলি সকাল থেকেই মনে বিষাদ আর চোখে জল নিয়ে ছাই ও জলের মধ্যে খুঁজে চলেছে আগুনের হাত থেকে রেহাই পাওয়া জিনিসপত্র।
কিন্তু, টিন, লোহা বাদ দিয়ে কিছুই প্রায় নেই তাঁদের। যাবতীয় আসবাবপত্র, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, সঞ্চিত টাকা, বইখাতা, জামাকাপড় সবই পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র পরনের জিনিসগুলিই রয়ে গিয়েছে একমাত্র সম্বল হিসেবে। বিষাদের সঙ্গে রয়েছে চরম ক্ষোভও। মাঝে মাঝেই ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, মায়ের বাড়ির অফিসেই প্রথম আগুন লাগে।
আরও পড়ুনঃ মানিকতলায় ব্যাটারি কারখানায় ভয়াবহ আগুন, ঘটনাস্থলে দমকলের ১১ ইঞ্জিন
সেখান থেকেই আগুন পড়ে বস্তিতে। আগুনের রোষানলে সর্বস্বান্ত হওয়ার পিছনে মহারাজদেরই দায়ী করছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ, অন্যান্যবার আগুন লাগলে উপর থেকে মহারাজরা জল দেন। এবার প্রথমদিকে তা দেননি মহারাজরা বলে অভিযোগ এই আগুনে সর্বহারা বস্তিবাসীদের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584