নিজস্ব সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ
মঙ্গলবার বাঁকুড়ায় নির্বাচনী সফরে এসে বিজেপি নেতাদের তুলোধোনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । অমিত শাহকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ওরা বহিরাগত গুন্ডা। একগাদা মন্ত্রী নিয়ে কলকাতায় মিটিং করছে। ভাবছে মমতাকে ভয় দেখিয়ে দমানো যাবে। সারা বছর ওই গুন্ডাদের দেখা যায় না।
যেই নির্বাচন শুরু হয়েছে অমনি আনাগোনা শুরু হয়েছে। কলকাতার সব হোটেল বুক। ওখানে গুন্ডাদের বসিয়ে রেখে ষড়যন্ত্র করছে কিভাবে মমতাকে হারানো যায়। সবখানেই এজেন্সি লাগিয়ে দিয়েছে। আমার হোম সেক্রেটারির বাড়িতেও সিবিআই পাঠিয়ে দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনকে চালাচ্ছে? সরাসরি না বললেও ইঙ্গিতে বলেন, আমার তো সন্দেহ হয় নির্বাচন কমিশনকেও অমিত শাহ চালাচ্ছে না তো! তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদী – অমিত শাহ মিলে দেশটাকে বেচে দিতে চাইছে।
রেল, কোল ইন্ডিয়া, থার্মাল পাওয়ার , বিএসএনএল, ব্যাঙ্ক সবই বিক্রি করে দেবে বলছে। রিজার্ভ ব্যাংকের ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। মেজিয়ার জনসভা থেকে তিনি বলেন, শালতোড়া বিধানসভার প্রার্থী সন্তোষ মন্ডলকে জেতাতে হবে। কারণ সন্তোষ মন্ডল না জিতলে এখানে যে কোল মাইনস, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে মোদী তা বিক্রি করে দেবে। তা আটকাতে হবে তো।
বিজেপি সাম্প্রদায়িক বোঝাতে গিয়ে বলেন, ওরা ফাইভ স্টার হোটেল থেকে খাবার আনিয়ে আদিবাসী বাড়িতে খেয়েছি বলে নাটক করেন। আমি তা করিনা। আমার বাড়িতে যে মেয়েটি রান্না করে, সে হলো বাউরি পরিবারের মেয়ে। তার আগে ছিল মাহাতো, মন্ডল, আদিবাসী। আমি এদেরকে মানুষ করেছি। তারপর বিয়ে দিয়েছি। যে ছেলেরা বিয়ে করেছে তাদের চাকরিও দিয়েছি। তিনি বলেন, বাঁকুড়ায় একসময় মাওবাদীরা ছিল। এখন সেই আতঙ্ক নেই। সব মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছে। তাদের কাজ দিয়েছি।
আমরা বাংলায় শান্তি দিয়েছি অথচ ২০১৯-এ ভোট পেয়েছে বিজেপি । এরা ভুল বুঝিয়ে ভোট নিয়েছে। এর বদলা নিতে হবে। তার ভাঙা পায়ের প্রসঙ্গে বলেন, বাংলার মা-বোনদের জোড়া পায়ের সাপোর্ট নিয়ে, ছাত্র যৌবনের জোড়া পায়ের সাপোর্ট নিয়ে আমি খেলব। তিনি বলেন, আমাদের সময়ে ৪০% বেকারি কমেছে। আর মোদী বাবুরা হাজার হাজার কল কারখানা বন্ধ করিয়েছেন। নোট বন্দি করে টাকা লুঠ করেছেন।
আরও পড়ুনঃ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন শমীক-জয়প্রকাশ
গ্যাসের দাম, পেট্রোপণ্যের দাম বাড়িয়ে গরীব মানুষকে মারার চক্রান্ত করেছেন। আমি বিনা পয়সায় রেশন দিচ্ছি। মে মাস থেকে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবে রেশন। বাংলার মানুষের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা বলুন মোদীকে, ‘গ্যাস বিনা পয়সায় দিতে হবে।’ মেজিয়া থেকে ছাতনা উড়ে যান তিনি। সেখানের মঞ্চে বসে তিনি বলেন, শুভাশিস বটব্যালকে জোড়া ফুল চিহ্নে ভোট দিয়ে জেতান। ও খুব ভালো ছেলে। দোষের মধ্যে একটাই, দোষ ফোনটা ধরে না। ওকে বলেছি ফোনটা ধরবে।
এক সময় আমাদের নাসিক থেকে পিঁয়াজ আনতে হত। শুভাশিসকে বলেছিলাম, তুমি তো কৃষি বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করেছো। দেখো না, পেঁয়াজ চাষ করা যায় কিনা। শুভাশিস বাঁকুড়ার রুক্ষ মাটিতে পেঁয়াজ চাষ করে দেখিয়ে দিয়েছে। তারপর বিভিন্ন জেলায় পেঁয়াজ চাষ শুরু হয়েছে। এখন ৫০% পেঁয়াজের উৎপাদন হচ্ছে রাজ্যে।
আরও পড়ুনঃ রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ স্বপনের, প্রার্থী হলেন তারকেশ্বর কেন্দ্রের
এখানে ৬৪ হাজার কোটি টাকার জঙ্গলমহল “শিল্প-সুন্দরী” প্রকল্প হবে। বহু মানুষের কাজ হবে। এছাড়াও আরও ১০ হাজার মহিলা স্বাবলম্বী গ্রুপ তৈরি হবে। ২৫ হাজার কোটি টাকা দেব এই প্রকল্পে। এরপর তার বিভিন্ন প্রকল্পের উল্লেখ করে রাজ্যের সব উন্নয়ন করে দিয়েছি বলে জানান তিনি। গায়ের জোরে বাংলা দখল করতে দেব না বিজেপিকে।
বিকেলে রাইপুরের জনসভায় তিনি জেলার পর্যটন, হোম ট্যুরিজমের কথা বলে এখানের প্রার্থী জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মূর্মুকে জেতানোর কথা বলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভাঙা পা নিয়ে অনেক সময় ধরে যন্ত্রণা সহ্য করে আপনাদের কাছে এসেছি। আপনারা ভুল বুঝে বিজেপিকে ভোট দেবেন না।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584