নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ
পিএম কিষাণনিধি যোজনা প্রসঙ্গে ফের সংঘাত প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রবিবার হলদিয়ায় এসে কেন্দ্রের ওই প্রকল্প বাংলায় বাস্তবায়িত না হওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকারকে দায়ী করেন নরেন্দ্র মোদী। আর তার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পিএম কিষাণনিধি নিয়ে বিধানসভায় কেন্দ্র ও প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমন করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাজেট নিয়ে সোমবার বিধানসভায় বলার সময় কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী সরকারকে ‘নিষ্ঠুর-নির্দয়’ বলে অভিযোগ তাঁর। বক্তৃতার সময় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, গোটা দেশের কৃষকরা পিএম কিষাণনিধি যোজনার সুবিধা পেলেও একমাত্র বাংলার চাষীরাই তা পায়নি। কারণ রাজ্য সরকার এই প্রকল্প রূপায়ণে বাধা সৃষ্টি করেছে। পরে বাধ্য হয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার নাকি এই প্রকল্প রূপায়ণে সম্মতি জানিয়েছে।
মোদী বলেন, অনলাইনে বাংলায় ২৫ লক্ষ কৃষক কিষাণ নিধির জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু মাত্র ৬ হাজার কৃষকের তথ্য দিয়েছে রাজ্য। ব্যাঙ্ক ডিটেলস না থাকার কারণে সবার অ্যাকাউন্টে টাকা দিতে পারেনি কেন্দ্র।
আরও পড়ুনঃ পর্দার আড়ালে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সমঝোতা চলছেঃ মোদী
মোদির এই মন্তব্যের সূত্র ধরে এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদীর মিথ্যা কথা বলা প্রায় অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কিষাণনিধির জন্য পৃথক পোর্টাল কেন্দ্র করেছে। বলছে ২২ লক্ষ রেজিষ্ট্রার করেছে। আর এখন আমাদের বলছে ভেরিফাই করে দিতে। ৬ লক্ষ আছে। আমরা ২.৫ লক্ষ করে দিয়েছি। দাও তোমরা টাকা।”
পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কৃষক প্রকল্পের আর্থিক সুবিধার সঙ্গে পিএম কিষাণনিধির তুলনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নরেন্দ্র মোদী বলছেন আমরা কৃষকদের দিচ্ছি না। ওরা যে ৬ হাজার টাকা দেয় সে তো একরে। আমরা এক কাঠা থাকলেও দিই। আমি চাই চাষী থেকে ক্ষেত মজুর সবাই কিষাণ নিধির সুবিধা পাক।”
আরও পড়ুনঃ উলুবেড়িয়ায় মহম্মদ রফির গান গেয়ে গণবিবাহের আসর মাতালেন কৈলাস
মুখ্যমন্ত্রীর আরও বলেন, “এত নির্দয় কেন্দ্রীয় সরকার কখনও দেখিনি। রাজ্যের প্রাপ্য কিছুই দিচ্ছে না। এখন বাংলায় নির্বাচন বলে বাংলা ওদের টার্গেট। ভোটের সময় বাংলা প্রীতি হয়েছে। বিবেকানন্দকে ঠাকুর বানিয়েছে।”
প্রসঙ্গত, শনিবার নবদ্বীপে বক্তৃতার সময় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা স্বামীজিকে ‘বিবেকানন্দ ঠাকুর’ বলে মন্তব্য করেন। যা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক ।
বিধানসভার শেষ দিনে আর তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় ফিরবে না বলে তোপ দেগেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এ প্রসঙ্গে সোমবার বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেউ কেউ বলছেন আমরা আর কিছুদিন আছি। কিন্তু এবার আমরা একুশে এমন জয়লাভ করব যে জোট ঘোট ভোট সবাই টের পাবে।”
আরও পড়ুনঃ মুর্শিদাবাদ এসে শুভেন্দু অধিকারী প্রমাণ করুন তিনি তোলাবাজ ননঃ শাহনাজ বেগম
এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মাথায় ঋণের বোঝা প্রসঙ্গে একদিকে যেমন পূর্বতন বাম সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তেমনই কেন্দ্রের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হন।
এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের আগে বক্তব্য রাখেন কংগ্রেসের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী। তিনি রাজ্য বাজেটকে ‘ভোটের ইস্তেহার’ বলে খোঁচা দেন। যার জবাবে মুখ্যমন্ত্রী চড়া সুরে বলেন, “যদি ইস্তাহারই হয়, তাতে আপত্তি কী? মানুষের কাজ করতে ভোটের দরকার হয় না। ১২০০০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা আছে। আর অর্থ কমিশনের টাকাও পাচ্ছি ১৭০০০ কোটি।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584