শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
রাজ্যের এমনিতেই আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তার ওপর করোনা আবহে জিএসটি বাবদ রাজ্যের প্রাপ্য আটকে দেওয়ায় আরও কঠিন অবস্থা হয়েছে রাজ্যের। এভাবে বিশ্বাসভঙ্গের ঘটনা ঘটলে কেন্দ্রের ওপর রাজ্য ভরসা রাখতে পারবে না, বুধবার নবান্নে এমনটাই অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুধু তাই নয়, কেন্দ্রের জেদের কারণেই নিট-জেইই পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি এবং লকডাউন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র রাজ্যেরই, এমনটাও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
জিএসটি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, জিএসটি কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়েরই জিএসটি বাবদ টাকা প্রাপ্য থাকে। কিন্তু করোনা আবহে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, জিএসটি বাবদ ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা বাকি পশ্চিমবঙ্গের। তা এখনই দিতে পারবে না কেন্দ্র। তার জন্য ঋণ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আরও পাঁচ রাজ্যের অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বর্তমান পরিস্থিতিতে জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। প্ৰশ্ন তুলেছেন এই নীতির বিরুদ্ধে। যার তালিকায় আছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কেরলের পিনারাই বিজয়ন, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী কে.পালানিস্বামী, তেলেঙ্গানার কে চন্দ্রশেখর রাও এবং ছত্তিশগড়ের ভূপেশ বাঘল। এদিন নবান্নেও এই সিদ্ধান্তেরই বিরোধিতা করেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ আগামীকাল রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসবে মেট্রো কর্তৃপক্ষ
এরপরেই চলে আসেন ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া নিট-জেইই পরীক্ষা প্রসঙ্গে। লকডাউন সংক্রান্ত গণপরিবহনের সমস্যার কারণে বেশিরভাগ পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। বুধবার নবান্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়ে বলেন, “কেন্দ্রের জেদের কারণেই সমস্যায় পড়েছেন পরীক্ষার্থীরা। বাধা পেরিয়ে কিছু সংখ্যক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিলেও কিন্তু সকলের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। ফলে তাঁদের বছর নষ্ট হল। পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিল। কিন্তু কেন্দ্র তা মানেনি। প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কে আপনাকে অধিকার দিয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের বিপাকে ফেলার, ওদের ভবিষ্যত নষ্ট করার?”
আরও পড়ুনঃ ৫ দিনে পিএম কেয়ারে ৩,৭০৬ কোটি! কে দিল- প্রশ্ন চিদাম্বরমের
এরপর মুখ্যমন্ত্রীকে বলা হয়, কেন্দ্রের আনলক ফোরের নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছিল, এরপর থেকে কেন্দ্রের অনুমতি ব্যতিরেকে কোনও রাজ্য সম্পূর্ণ লকডাউন করতে পারবে না। তাহলে রাজ্য কি ভাবে আগামী সপ্তাহে তিন দিন লকডাউন করবে?
এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় কেন্দ্র সরকার রাজ্যের অভিভাবক। কিন্তু এখানে শুধুমাত্র প্রতিযোগিতামূলক আচরণ করা হচ্ছে।গাইডলাইন প্রকাশের মাধ্যমে কেন্দ্র পরামর্শ দিতে পারে, কিন্তু কোন রাজ্যে তা কতটা মানা হবে, সে বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে রাজ্যের। তাই রাজ্যে লকডাউন ঘোষণা ও পালন করার অধিকারও রাজ্য সরকারের রয়েছে।’
এরপরে তাঁকে শহরে মেট্রো চলাচল কবে চালু হবে, তা জিজ্ঞাসা করা হয়। কারণ ইতিমধ্যেই এই নিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক খবর বেরিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা সম্ভবত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে মেট্রো চালু করতে চাইছে। বিষয়টা মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা দেখতে বলেছি। নবান্নে বৈঠকের পর এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ সরাসরি যাত্রীদের জানিয়ে দেবেন।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584