উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
বিধানসভার আসন সমঝোতা নিয়ে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ)দাবি মানা সম্ভব নয় বলে প্রদেশ কংগ্রেস জানিয়ে দেবার পরই মুখে কুলুপ আব্বাস সিদ্দিকীদের। মুর্শিদাবাদ ও মালদহে একটাও আসন ছাড়া যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন বিধানভবন নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, মালদহ, মুর্শিদাবাদে এখনও দাপট রয়েছে কংগ্রেসের। আর ওই জেলাতেই একাধিক আসন দাবি করে বসেছে আইএসএফ! তার মধ্যে রয়েছে কংগ্রেসের জেতা আসনগুলিও। একটি সূত্রের খবর, সুজাপুর পশ্চিম প্রয়াত গনি খানের কেন্দ্র। তার সঙ্গে আবেগের যোগ প্রদেশ নেতৃত্বের। সূত্রের খবর, ওই আসনটিও রয়েছে আইএসএফের তালিকায়। মোহিত সেনগুপ্ত, মিল্টন রশিদদের জেতা আসনও চাই তাদের। কয়েক দিন আগে, আব্বাস সিদ্দিকী এপ্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছিলেন,’ কংগ্রেসের বিধায়ক দল থেকে বেরিয়ে অন্য দলে যোগ দিলে সেই আসন আর কংগ্রেসের থাকে?’ শনিবার প্রদীপ ভট্টাচার্য ফোনে জানালেন, ‘আজ এ বিষয়ে কোনও বৈঠক নেই। আর কংগ্রেসের পক্ষে মালদা মুর্শিদাবাদে ওদের কোনো আসন ছাড়া সম্ভব নয়। তবে ওখানে ওদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পূর্ণ লড়াই হবে কিনা তা ভবিষ্যত বলবে।’
সিপিএম খানিকটা নমনীয় হয়ে আইএসএফ-কে জলঙ্গির জেতা আসন ছেড়েছে। কিন্তু, তাদের পক্ষে মালদহ ও মুর্শিদাবাদে আসন ছাড়া সম্ভব নয় বলে আলিমুদ্দিনকেও জানিয়ে দিয়েছে প্রদেশ নেতৃত্ব। শনিবার এবিষয়ে আব্বাস সিদ্দিকী ও আইএসএফের চেয়ারম্যান নওয়াজ সিদ্দিকীকে বার বার ফোন করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার থেকে আইএসএফের চেয়ারম্যানকে বারবার ফোন করেও যোগাযোগ করতে পারেননি আবদুল মান্নান। আসন রফা নিয়ে একটা বৈঠকেও আসেননি আব্বাস সিদ্দিকী। কংগ্রেসের অন্দরের প্রশ্ন উঠছে, বিমান বসুও বৈঠকে থাকছেন। তখন আব্বাস কত বড় নেতা যে থাকতে পারবেন না? তার উপরে একটা নতুন দল কীভাবে এত দাবিদাওয়া করতে পারে? সবমিলিয়ে যারপরনাই ক্ষুব্ধ প্রদেশ নেতৃত্ব। কংগ্রেসের সাফ কথা, মালদহ, মুর্শিদাবাদে আসন ছাড়া সম্ভব নয়। অন্য জায়গায় আটটি আসন দিতে রাজি তারা। এ দিকে, মুর্শিদাবাদ ও মালদহ নিয়ে অনড় আইএসএফ-ও। এটাই ভাবিয়ে তুলেছে আলিমুদ্দিনকে।
আরও পড়ুনঃ ক্ষমতায় এলে শিক্ষকদের সব বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলীপের
সূত্রের খবর, পঞ্চাশটি আসনের দাবি করেছেন আব্বাস সিদ্দিকীরা। তা ত্রিশটি পঁয়ত্রিশের মধ্যে বেঁধে ফেলতে সচেষ্ট আলিমুদ্দিন। আইএসএফের ‘আবদার’ মেটাতে মোট সাতাশটি আসন ছাড়ছে বামেরা। নতুন বন্ধুকে সিপিআই(এম) একাই উপহার দিচ্ছে কুড়িটি আসন। বাকি সাতটির মধ্যে রয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লকের চারটি, আরএসপি-র দুটি ও সিপিআই একটি আসন। সিপিএমের এহেন সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট শরিকরাও। তারাও মনে করছে,অতিরিক্ত প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে আব্বাসকে। ফলে, শরিকি তো বটেই, জোটসঙ্গীর প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে সিপিএম নেতৃত্বকে।
আরও পড়ুনঃ পনেরো দিনে তিনবার বাংলা সফর প্রধানমন্ত্রীর
প্রসঙ্গত, হায়দরাবাদের সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন বা মিম সুপ্রিমো রাজ্যে এসে সোজা দেখা করতে গিয়েছিলেন ফুরফুরার পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে। তারপর সাংবাদিকদের তিনি জানান, এ রাজ্যের মিম আব্বাস সিদ্দিকীর দেখানো পথেই চলবে। তাই এতদিন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এরাজ্যে কোনো মিটিং মিছিল করেননি। ইতিমধ্যে আব্বাস সিদ্দিকী নতুন দল ঘোষণা করেছেন। তারপর থেকে আব্বাস ঘনিষ্ঠতায় একটু ছেদ পড়ে।
মিম বিভিন্ন জেলায় পর্যবেক্ষক পাঠান। ওয়াইসি নিজেই এ রাজ্যে আসছেন পঁচিশে ফেব্রুয়ারি। এই খবর জানা গেছে মিম-এর মুখপাত্র ইমরান সোনালকি সূত্রে। আরো জানা গেছে ওয়াইসি মেটিয়াবুরুজ সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় সভা করবেন। তবে আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে যৌথ মিটিং করবেন কিনা জানা যায়নি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584