উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
সোমেন-পুত্র রোহন মিত্রের সাম্প্রতিক ট্যুইট ঘিরে ফের কংগ্রেস দল অস্বস্তির মুখে পড়তে পারে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। তাঁর ট্যুইটে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর প্রতি তাঁর অনাস্থার কথা প্রকাশ পেল।এ বিষয়ে চেষ্টা করেও অধীর চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।
তবে এই অবস্থায় যদি জল্পনা সত্যি হয়, তবে আরও একদফা অস্বস্তির মুখে পড়বে প্রদেশ কংগ্রেসে। রোহন মিত্র শুধু নিজ দলের বিধায়কের তৃণমূলে যোগদানে নিজের সমর্থনের পাশাপাশি তৃণমূলের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না নিয়েও ইঙ্গিত বাহী ট্যুইটে করেছেন। সেই ট্যুইটে তিনি বেচারাম মান্নার নাম না করে বলেন, যাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না, তাদের মমতা বন্দোপাধ্যায় ও সোমেন মিত্ররা অনেক উঁচুতে বসিয়ে কী মমতা-সোমেনরা ভুল করেছিলেন? যাদের তুলেছেন আজ তারা বেইমানির রাস্তায় হাঁটছেন।
দক্ষিণ কলকাতার লোকসভার ভোটার, ballygaunge অ্যাসেম্বলির ভোটার, ওয়ার্ড ৬৯ এর ভোটার, প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তবুও নিজের জেলার কর্মী সম্মেলনে ডাক নেই! Instruction দিচ্ছে কে ??? #Bengal @INCWestBengal @adhirrcinc
— Rohan S Mitra (@rohansmitra) November 13, 2020
আরেকটা ট্যুইটে রোহন মিত্র বলেন, প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার জেলা কংগ্রেস কর্মী সম্মেলনে ডাকা হয়নি। আর তিনি যে দক্ষিণ কলকাতার ভোটার, তাও তিনি ট্যুইটে জানাতে ভোলেননি। তিনি আওয়াজ তুলেছেন, কার নির্দেশে তাঁকে ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কংগ্রেস কর্মী বলেন, ”রোহন ও রোহনের মা(শিখা মিত্র) কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি কোনো ক্ষোভ নেই। গান্ধী পরিবারের প্রতি তাঁরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু এক সময়ে যারা বিজেপিতে চলে গিয়ে ছিলেন, তাদের এখন দলে এনে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যেমন মধ্য কলকাতার জেলা কংগ্রেস সভাপতি সুমন পাল।“
রোহন মিত্র অবশ্য বারবার বলেছেন, “বাবার সঙ্গে মমতার লড়াই ছিল বটে, বাবা কখনও মমতাকে রাজনৈতিক ভাবে ছোট করতেন না। মমতা বন্দোপাধ্যায় যুব কংগ্রেস থেকে উঠেছিলেন, আমিও যুব কংগ্রেস করেছি। আমি মমতা বন্দোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা করি।
আরও পড়ুনঃ ‘গার্ড অফ অনার’ না দেওয়ার অভিযোগ তুলে টুইট করে ক্ষোভ প্রকাশ রাজ্যপালের
প্রসঙ্গত, উত্তর ২৪ পরগণার বাদুড়িয়ার কংগ্রেস বিধায়ক কাজি আবদুর রহিম (দিলু) সম্প্রতি দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। যদিও অধীর শিবিরের দাবি, তিনি অনেক দিন ধরেই তৃণমূলে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। দলের এক আইনজীবী নেতার কথায়, ‘‘লোকসভা ভোটে বসিরহাট আসনে দিলুকে আমরা প্রার্থী করেছিলাম। কিন্তু তিনি তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁর বিধানসভাতেও তৃণমূলকে এগিয়েছিল।“
আরও পড়ুনঃ বাংলায় অবাধ নির্বাচনে প্রয়োজন রাষ্ট্রপতি শাসন, দাবি দিলীপের
সেই দিলুর বিষয়েই রোহন উল্টো অবস্থান নিয়েছেন। দিলুর দলত্যাগের পর ৭ নভেম্বর পর পর তিনটি টুইট করেন রোহন। তার সারকথা— লাগাতার ‘অসম্মান’ করে উত্তর ২৪ পরগণার একমাত্র কংগ্রেস বিধায়ককে দল ছাড়তে বাধ্য করা হল! লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে দিলুর সমঝোতার দলীয় তত্ত্বও রোহন নস্যাৎ করেছেন টুইটে। উল্টে বলেন, কোনও তারকা প্রচারক ছাড়াই দিলু ১ লক্ষের বেশি ভোট পেয়েছিলেন।
যদিও প্রদেশ কংগ্রেসের অন্য অংশের দাবি, দিলু আরও ভাল ফল করতে পারতেন। তৃণমূলের সুবিধা করে দেবেন বলেই নিজের এলাকায় কোনও তারকা প্রচারককে তিনি ডাকেননি। বৃহস্পতিবার বেচারাম মান্নাকে নিয়েও টুইট করেছেন রোহন। সে টুইট আরও ‘ইঙ্গিতবহ’।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584