শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
এমনিতেই কলকাতা শহরে প্রবীণ-প্রবীণাদের ভিড়ই বেশি। তার মধ্যে কিছু হলে বয়স্কদের হাসপাতালে আসা কতটা সমস্যার, সেটা ১৩ বছর আগে ২০০৭ সালেই বুঝেছিলেন চিকিৎসক ধীরেশ চৌধুরী।
নিজস্ব টিম তৈরি করে নার্স, প্যারা মেডিক্স, চিকিৎসার যন্ত্রপাতি সহ একটি চলমান ভ্যানে বানিয়ে ফেলেছিলেন ‘হসপিটাল অন হুইলস’। যা আজকের লকডাউনের কঠিন পরিস্থিতিতেও রাস্তায় বেরোতে অসুস্থ বয়স্ক-বয়স্কাদের মারাত্মক লাইফলাইন। তাই লকডাউন সমানতালে ম্যারাথন দৌড় দৌড়ে চলেছেন তিনি ও তার টিম।
ধীরেশ বাবু জানান, লক ডাউন চালু হতেই তাঁর মনে হয়েছিল, ‘হসপিটাল অন হুইলস’-এর প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়বে। কারণ এই শহরে এমন অনেক মানুষ থাকেন যাঁদের ছেলেমেয়েরা বাইরে থাকে বা বিদেশে থাকেন। লক ডাউনের মাঝে যদি আপদ বিপদ একটা কিছু হয়, তখন কী হবে।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনে শিশু মনের কথা ভেবে উদ্যোগী কলকাতা পুলিশ
লোকজন পরিস্থিতিতে এমনিতেই হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক বা ওষুধের দোকানে ওষুধ অপর্যাপ্ত। সে কথা ভেবেই ধীরেশবাবু নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন ‘হসপিটাল অন হুইলস’এর যোগাযোগ নম্বর। এরপর যখনই ফোন আসছে, তখনই তিনি সঙ্গীসাথীদের নিয়ে নেমে পড়ছেন তার লক্ষ্যপূরণে। শুধু বয়স্করাই নয়, ফোন করছেন মধ্যবয়স্ক যুবক-যুবতীরাও।
জানা গিয়েছে, মূলত দক্ষিণ কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকাতেও দৌড়চ্ছে ‘হসপিটাল অন হুইলস’। চলমান ভ্যানেই প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রও থাকছে। যদি বাড়িতেই চিকিৎসা সম্ভব হলে তা-ই করে দেওয়া হচ্ছে। আর তা সম্ভব না হলে রেফার করা হচ্ছে হাসপাতালে।ধীরেশবাবুর এই সামান্য পরিষেবাটাই এখন অনেকেরই কাছে হাতে চাঁদ পাওয়ার সমান।
ধীরেশ চৌধুরীর কথায়, “এই সময়ে বয়স্ক মানুষেরা একটুতেই আতঙ্কিত হয়ে উঠছেন। আর আতঙ্কিত হলেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাই তাদের কাছ থেকেই বেশি ফোনটা আসছে। তবে তিনি এই পুরো পরিষেবাই দিচ্ছেন সামান্য অর্থের বিনিময়ে। বয়স্করাও চিকিৎসা খরচ-ওষুধ বাবদ তা দিচ্ছেনও। এই কদিনে মোটামুটি শ’খানেক রোগী দেখে ফেলেছেন তাঁরা। তবে প্রয়োজনে আরো অনেক রোগীকে পরিষেবা দিতে তৈরি ‘ হসপিটাল অন হুইলস।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584