শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
এতদিন পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় করোনা পজিটিভ আক্রান্তের খবর আসছিল। এবার একসঙ্গে তিন জন করোনা পজিটিভ মিলল একই পরিবারে। বালিগঞ্জের করোনা আক্রান্তের তরুণের বাবা, মা-ই শুধু নন, তাঁর বাড়ির পরিচারিকার করোনা রিপোর্ট এল পজিটিভ। ঘটনার পর তাদের আইসোলেশনে থাকাকালীনই এই রিপোর্ট আসে। বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগের বলছেন চিকিৎসকরাই।
প্রসঙ্গত, বালিগঞ্জের ওই যুবক বেশিরভাগ সময়ে লন্ডনে থাকেন। কিন্তু মাঝে মাঝে নিজের মা বাবার সঙ্গে দেখা করতে কলকাতা চলে আসেন। ১৩ মার্চ লন্ডন থেকে বালিগঞ্জের তরুণ আরও দুই বন্ধুর সাথে ফিরে আসেন। দিল্লি বিমানবন্দরে দেড় ঘন্টা ছিলেন তিনি। তারপরে ফিরে আসেন কলকাতায়। তার এই বন্ধু ছিলেন পাঞ্জাব এবং ছত্তিশগড়ের, যাদেরও পরে রিপোর্ট আসে পজিটিভ।
হাসপাতাল সুত্রের খবর, এই তরুণ কলকাতায় ফেরার পর তাঁকে হোম কোয়ারান্টাইনে থাকতে বলা হয়। তাঁর কাশি এবং হালকা জ্বর রয়েছে। ফলে ১৭ মার্চ বেলেঘাটা আইডিতে ওই ২২ বছরের তরুণ বাবার সঙ্গে বেলেঘাটা আইডি-তে আসেন। এর পরেই তার লালারসে নমুনা বেরোয় করোনা পজিটিভ।
আরও পড়ুনঃ জীব সেবায় শিবায়ন
এদিকে তাঁর বাবা মা, ভাই, দাদু, ঠাকুমাকেও সঙ্গে সঙ্গে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতা বাড়ছিল তাদেরও। সন্দেহ হওয়ায় বাকিদের করোনা পরীক্ষা করামাত্রই রিপোর্ট আসে আরও তিন জনের পজিটিভ।
বালিগঞ্জের ওই তরুণের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ফিরে এসে হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে নিজের ইচ্ছামত ঘুরে বেড়িয়েছেন। তিনি আবাসনে বন্ধুদের সঙ্গে, পাড়ার চায়ের দোকানে তো গেছিলেনই, এমনকি বাবার বাথরুম ফিটিংসের দুটি দোকান কালীঘাটে ঈশ্বর গাঙ্গুলি স্ট্রিটে এবং ১৪০ নম্বর এসপি মুখার্জি রোডে পারিবারিক দোকানেও পর পর দু’দিন যান ওই তরুণ।
ফলে একদিকে যেমন ক্রেতা ও কর্মীদের সংস্পর্শে আসেন, তেমনই সংস্পর্শে আসেন আবাসনের বাসিন্দাদেরও। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর এবং এবার পরিবারের আরও ৩ জন পজিটিভ আক্রান্ত হওয়ার পর আরও আতঙ্ক ছড়িয়েছে ওই আবাসনে। আবাসনটিতে নজর রাখছে স্বাস্থ্য দফতর। কারোর নিজেকে অসুস্থ মনে হলেই তাকে অবিলম্বে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের বিশেষ আইসোলেশনে ৩ করোনা-আক্রান্ত, জেনেরাল আইসোলেশনে আরও ২০
বর্তমানে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে করোনা সন্দেহে ভর্তি ২০ জন রয়েছেন জেনারেল আইসোলেশন ওয়ার্ডে। বিশেষ আইসোলেশনে রয়েছেন করোনা আক্রান্ত ২ তরুণ ও এক তরুণী।
সল্টলেকের আমরিতে ভর্তি প্রৌঢ় এখনও ভেন্টিলেশনে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সম্প্রতি ওই প্রৌঢ় পরিবারের বিদেশ ফেরত এক সদস্যের সংস্পর্শে এসেছিলেন।
ওই ব্যক্তি যদি কোয়ারেন্টিনে না থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্যে চালু হওয়া মহামারী আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার ভাবনা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আমরিতে ভর্তি হওয়ার আগে বাগুইআটির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন প্রৌঢ়। তিনি কোন ওয়ার্ডে, কোন রোগীদের সঙ্গে ছিলেন, তাঁর সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন, সেই সংক্রান্ত খবরাখবর নেওয়া হচ্ছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584