শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
করোনা পরিস্থিতিতে ৮১ জন চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ায় এমনিতেই আতঙ্কের আবহ এনআরএস হাসপাতালে। তার মধ্যে সোমবার দুই রোগীর মৃত্যু এবং মর্গে রাখা এক দেহের বদলে আরেক দেহ দিয়ে দেওয়ায় তুলকালাম কাণ্ড ঘটল এনআরএস হাসপাতালে। বিষয়টি মিটমাট করতে হস্তক্ষেপ করতে হয় রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন তথা চিকিৎসক শান্তনু সেনকে। শেষ পর্যন্ত ২ মহিলার দেহই দাহ করা হয় নিমতলা শ্মশানে।
এনআরএস সূত্রের খবর, সোমবার বেলেঘাটার বাসিন্দা মৌসুমী বসু (৪০) এবং নারকেলডাঙার বাসিন্দা বিমলা রায় (৫০) নামে দু’জন রোগিণীর কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে মৃত্যু হয়। দু’জনেই মহিলা মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন। দু’জনের করোনা পরীক্ষা করা হলেও দু’জনেরই নেগেটিভ আসে।
আরও পড়ুনঃ রেশনের বিপুল পরিমাণ চাল-গম পাচার করতে গিয়ে চিৎপুরে ধৃত যুবক
জানা গিয়েছে, বিকেল ৪টে নাগাদ বিমলাদেবীর স্বজনেরা প্রথমে দেহ নিতে হাসপাতালের মর্গে যান। অভিযোগ, তাঁদেরকে মৌসুমীদেবীর দেহ প্যাক করা অবস্থায় দিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আসেন মৌসুমীদেবীর আত্মীয়রা। তারা দেহ নিতে গিয়ে দেখেন, এ দেহ মৌসুমীদেবীর নয়, বিমলার। এরপরেই হাসপাতালে গণ্ডগোল শুরু হয়।
এদিকে মৌসুমীদেবীর দেহ নিয়ে বিমলাদেবীর স্বজনেরা নিমতলা শ্মশানঘাটে চলে যান এবং সেখানে নিয়ম মেনে সৎকার সম্পন্ন হয়। বিমলাদেবীর পরিবার না বুঝে দেহ নিয়ে চলে গিয়েছেন বলে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রশ্ন ওঠে, মর্গের সংশ্লিষ্ট কর্মী কেন নথি মিলিয়ে দেখেননি কেন? বিমলাদেবীর আত্মীয়দের ডেকে পাঠানো হয়।
এনআরএস সূত্রের খবর, দেহ চিনতে যে ভুল হয়েছে, প্রথমে তা মানতে চাননি বিমলাদেবীর আত্মীয়েরা। পরে তারা তা মেনে নেন।
খবর যায় রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান শান্তনুবাবুর কাছে। ঘটনাস্থলে আসে জোড়াবাগান থানার পুলিশও। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তৃণমূলের সাংসদ-চিকিৎসক শান্তনুবাবু দু’পক্ষকে বুঝিয়ে শান্ত করেন। নিমতলা শ্মশানে দুই পরিবারই যাতে নিজেদের আত্মীয়ার ডেথ সার্টিফিকেট পায়, তার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর গভীর রাতে মৌসুমীদেবীর পরিবারের সহায়তায় বিমলাদেবীর দেহও সৎকার সম্পন্ন হয়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584