নিউজডেস্কঃজেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধনের প্রতিবাদ ও ‘গ্ৰেট মার্চ অফ রিটার্ন’-এ যোগ দেওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনির উপর ইজরাইলি সেনার গুলিতে নিহত হল অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নাগরিক ও আহত কয়েক হাজার।ফিলিস্তিনিদের ওপর স্নাইপারদের দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
সোমবার জেরুজালেমে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস খোলায় ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিরা। আমেরিকার এই পদক্ষেপকে ইসরায়েলকে রাস্ট্রের মর্যাদা দেওয়ার স্পষ্ট সমর্থন হিসাবেই দেখছে তারা। যে জেরুজালেমের পূর্বাঞ্চলকে ফিলিস্তিনিরা নিজেদের বলে দাবি করে আসছে।
সোমবার মার্কিন প্রতিনিধি এবং ইসরায়েলি নেতাদের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দূতাবাস উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী ঘোষণায় ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রেইডম্যান বলেন, “আজ আমরা ইসরায়েলের জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস খুলছি।”
ওদিকে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “ইসরায়েল একটি সার্বভৌম জাতি। তাদের নিজেদের রাজধানী নির্ধারণের অধিকার আছে। কিন্তু বহুদিন ধরে আমরা এই সুষ্পষ্ট বিষয়টিকে স্বীকৃতি দিতে পারিনি।”
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দূতাবাসের উদ্বোধনী বক্তব্যে ট্রাম্পকে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং দিনটিকে ইসরায়েলের জন্য ‘গৌরবজ্জ্বল দিন’ বলে বর্ণনা করেন।
দূতাবাস খোলার আগে থেকেই গাজা সীমান্তে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে ফিলিস্তিনিরা।‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ আন্দোলনের অংশ হিসাবে ফিলিস্তিনিরা গত ছয় সপ্তাহ ধরে সীমান্তে বিক্ষোভ করে আসছে। বিক্ষোভকারীরা বেষ্টনি ভাঙার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ। ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি ১৩ টি স্থানে বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।নিজ ভূমিতে ফেরত যাওয়ার অধিকারের দাবিতে গত ৩০ মার্চ থেকে ফিলিস্তিনিরা গাজা সীমান্তে বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্ব উদ্বেগ প্রকাশ করলেও আমেরিকা ইসরায়েলকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।সোমবার জেরুজালেমে উদ্বোধন করা নতুন মার্কিন দূতাবাসের সামনে ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়ানো বিক্ষোভকারীদের সঙ্গেও ইসরায়েলি পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। আটক হয়েছে কয়েকজন বিক্ষোভকারী।
জেরুজালেমে বর্তমানে অবস্থিত মার্কিন কনস্যুলেট ভবনের ভেতরই ছোট আকারে দূতাবাসের কাজ শুরু হচ্ছে সোমবার থেকে। পরে ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস পুরোপুরি উঠে গেলে তখন বড় একটি জায়গা খুঁজে নিয়ে সেখানে দূতাবাস ভবন করা হবে।
ইসরায়েল রাষ্ট্রের ৭০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের দিনটিতেই মার্কিন দূতাবাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হল।অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইসরায়েলে যান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কা ও তার স্বামী জারেড কুশনার।কুশনার-ইভাঙ্কা দম্পতির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিফেন মিউচিন ও উপ-পরাষ্ট্রমন্ত্রী জন সুলিভান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে আনার এ সিদ্ধান্তকে ইসরায়েল প্রশংসা করলেও ফিলিস্তিনিরা শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে এর প্রবল বিরোধিতা করে আসছে।
একদিকে,জেরুজালেমকে নিজেদের ‘শাশ্বত ও অখণ্ড’ রাজধানী বলে বিবেচনা করে ইসরায়েল। অপরদিকে, ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে পূর্ব জেরুজালেম দাবি করে।
(ছবি-সংগৃহীত/টুইটার)
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584