টরান্টোতে আমন্ত্রিত রাজাদিত্যর তথ্যচিত্র ‘ডেথ অফ ডেথ’

0
54

নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ

আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা তথা চলচ্চিত্র নির্মাতা রাজাদিত্য ব্যানার্জির ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ পৃথিবীখ্যাত৷ ফিনল্যান্ড নিবাসী রাজাদিত্য নির্মিত মৃত্যু বিষয়ক ট্রিলজি ‘ডেথ সার্টিফিকেট’, ‘শিবরাত্রি’, ‘শববাহিকা’র পর বানালেন ‘ডেথ অফ ডেথ’। মানে ‘মৃত্যুর মৃত্যু’।

Death of Death | newsfront.co

‘ব্যাকবেঞ্চারস ফিল্মস’ প্র যোজিত এই তথ্যচিত্রটি ডোমরাজার কাহিনিনির্ভর। বারাণসীতে ভ্রমণে আসা মৃত্যুকামী পুণ্যার্থীদের প্রয়জনদের হাতে ডোমরাজ অগ্নিশিখা তুলে দেন। বারাণসীতে মৃত্যু একটি বিশাল উৎসব। ওখানে মারা গেলে নাকি মোক্ষলাভ হয় এমনই প্রবাদ প্রচলিত আছে। সবথেকে বড় প্রহসন হল, যে ডোমরাজের হাত থেকে নেওয়া আগুনে মানুষ মোক্ষলাভ করেন সেই ডোমরাজের মন্দিরের অন্দরে প্রবেশের অনুমতি নেই।

মৃত্যুর পরে কি ভারতের আধ্যাত্মিক রাজধানী বারাণসীতে মৃত্যুর মৃত্যু ঘটে? রাজাদিত্য অসম্ভব দক্ষতার সঙ্গে এই তথ্যচিত্রটিতে আধ্যাত্মিক ও ডিজিটাল বারাণসীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। আধ্যাত্মিক বারাণসী এবং ডিজিটাল বারাণসী কি একে অপরের পরিপূরক নাকি প্রতিদ্বন্দী? জানতে হলে দেখতে হবে তথ্যচিত্রটি। আশা করা যায় চলতি বছরের অগাস্ট মাসে টরান্টোতে প্রদর্শিত হবে ‘ডেথ অফ ডেথ’। টরান্টো থেকে ইতিমধ্যেও আমন্ত্রণ পেয়েছে তথ্যচিত্রটি।

আরও পড়ুনঃ এক রানি কাহিনি

রাজাদিত্য জানান- “আমার দাদা প্রখ্যাত পরিচালক বাপ্পাদিত্য ও বাবা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক দেবাশিস বন্দোপাধ্যায়কে দশ মাসের ভিতরে হারানোর পর মৃত্যুকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার তাগিদ অনুভব করি। ডেথ ট্রিলজি তিনটে ফিচারের মাঝে (ডেথ সার্টিফিকেট, শিবরাত্রি ও শববাহিকা ) ২০১৭ সালে নির্মাণ করি ‘ডেথ অফ ডেথ’।

২০১৭-র ৩ মে কলকাতার প্রিন্সটন ক্লাবে প্রেস কনফারেন্সে এই ছবিটির কথা ঘোষণা করি। ‘ডেথ অফ ডেথ’ একটি ইন্দো-ফিনিশ যৌথ প্রয়াস। এই প্রথম সুদূর ফিনল্যান্ডের একটি প্রযোজনা সংস্থা ভারতের ব্যাকবেঞ্চার্স ফিল্মসের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে তথ্যচিত্রটি বানালো। এই সিনেমার প্রিমিয়ার হবে টরোন্টো, কানাডাতে। গ্লোবাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালস যাবে এই সিনেমা। ‘ডেথ অফ ডেথ’ আমার কাছে একান্তই ব্যক্তিগত সিনেমা।

আরও পড়ুনঃ আসন্ন অস্কারে আমন্ত্রিত আলিয়া-হৃত্বিক

গভীর শোকের মধ্যেও মৃত্যু কোথাও আমাকে অবাক করেছে। মৃত্যু ব্যাপারটা আসলে কী এবং এটার সঙ্গে যে রহস্য জড়িয়ে আছে তা জানার একটা অদম্য আগ্রহ তৈরি হয়।সাধারণ মানুষের কাছে এ এক ভয়ানক অভিজ্ঞতা হলেও এমন অনেক মানুষ আছেন যাঁরা মৃত্যুকে সেলিব্রেট করেন।

মেক্সিকোতে এবং আমাদের দেশের আধ্যাত্মিক রাজধানী বেনারস বা কাশীতে হিন্দু পুণ্যার্থীরা বেনারস আসেন দেহ ত্যাগকরতে। তাঁদের গভীর বিশ্বাস এখানে মৃত্যু হলে তাঁরা মোক্ষ লাভ করবেন। অর্থাৎ জন্ম মৃত্যু ও পুনর্জন্মের চক্র থেকে মুক্তি পাবেন। রবীন্দ্রনাথ যেমন মৃত্যুকে প্রেম বলেছিলেন, বেনারসে মৃত্যুকে সেলিব্রেশন বললে ভুল বলা হবেনা। বেনারসে মৃত্যুর সেলিব্রেশন সালভাদোর দালির সুররিয়ালিজমের মতো।

নীচু জাতের ডোমরাজার হাতে অগ্নিশিখা পেয়ে মুখাগ্নি করলে তবেই মৃত ব্যক্তি মোক্ষ লাভ করতে পারবেন। যার জন্যে হিন্দুরা মোক্ষ লাভ করছেন তাঁকেই কিন্তু কোনও মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়না। এই কন্ট্রাডিকশনটা ছবিতে তুলে ধরতে চেয়েছিলাম। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেনারস বদলাচ্ছে। ডিজিটাল বেনারস কি গ্রাস করবে আধ্যাত্মিক বেনারসকে?”

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here