শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
সন্তানকে নিজের জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করে দিয়েও একাকী নিঃসঙ্গতায় মৃত্যু হয়েছে শহরের অনেক প্রবীণ-প্রবীণাদেরই। ঠিক সেরকমই ঘটনা ঘটল ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডে টালিগঞ্জের রানি ভবানি রোডে। দিন তিনেক ধরে ওই এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে ধীরে ধীরে কটু গন্ধ আসছিল।
প্রথমে তাতে আমল না দিলেও রবিবার রাতে গন্ধটা প্রকট হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা খবর দেন পুলিশে। পুলিশ এসে দরজা ভাঙতেই উদ্ধার হল এক বৃদ্ধার পচাগলা দেহ। মৃতের নাম সন্ধ্যারানি দাস বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। তার ছেলে থাকেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, সন্ধ্যারানি দাস নামে ওই মহিলার স্বামী ৫ বছর আগে প্রয়াত হন। তারপর থেকে ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন মহিলা। সম্প্রতি করোনার উপদ্রব বাড়ায় পরিচারিকাকে আসতে বারণ করেছিলেন তিনি। প্রতিবেশীদের দাবি, তিন দিন আগে থেকে গন্ধ পেলেও গন্ধের উৎস বোঝা যাচ্ছিল না। রবিবার রাতে সন্ধ্যারানি দেবীর বাড়ি থেকে গন্ধের উৎস বুঝতে পেরে তারা পুলিশকে ডাকেন।
টালিগঞ্জ থানার পুলিশ এসে দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢোকে। দেখা যায়, খাটের ওপর পড়ে রয়েছে বৃদ্ধার দেহ। দুর্গন্ধে শ্বাস নেওয়া দুষ্কর। বিছানার ওপর পড়ে রয়েছে সম্পূর্ণ পচে যাওয়া একটা লাশ। পচন ধরায় কালো হয়ে দেহের ওপর থেকে খসে পড়তে শুরু করেছে চামড়া। শরীর থেকে রস নিঃসৃত হতে শুরু করেছে। দেখে বোঝবার উপায় নেই, দেহটি আদৌ কার! বীভৎস ওই দৃশ্য দেখে ঘটনাস্থলে অসুস্থ হয়ে বমিও করে ফেলেন আরেক পুলিশকর্মী। দরজার বাইরে থেকে দেখেও চমকে ওঠেন প্রতিবেশীরাও।
আরও পড়ুনঃ করোনার ভয়ে অবহেলা সকলের, বাড়িতে ৬ ঘণ্টা সংজ্ঞাহীন পড়ে থেকে মৃত্যু বৃদ্ধার
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকদিন আগেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, , তাহলে কি এই কয়েকদিনে কি একবারও মাকে ফোন করে খোঁজ নেননি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রবাসী ছেলে। তাহলে তো তিনিই থানায় যোগাযোগ করতেন। বৃদ্ধার এই মর্মান্তিক পরিণতি দেখে দুঃখপ্রকাশ করেছেন স্থানীয় বহু মানুষজন। সন্তানদের সুপ্রতিষ্ঠিত করেও প্রবীণ-প্রবীণাদের এই মর্মান্তিক পরিণতি মানতে পারছেন না অনেকেই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584