মুসলিম তরুণীদের ছবি ব্যবহার করে আপত্তিকর মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, FIR দায়ের দিল্লি পুলিশের

0
77

ওয়েব ডেস্ক, নিউজ ফ্রন্টঃ

মহিলাদের বিভিন্ন ছবি দিয়ে তাঁদের মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে, অভিযোগ এমনটাই। সবথেকে বড় কথা, যাঁদের ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে তাঁরা সকলেই সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের এবং ছবি ব্যবহার করা হয়েছে তাঁদের অজান্তেই। এমনকি অ্যাপ্লিকেশনের নামকরণ পর্যন্ত করা হয়েছে মুসলিম মহিলাদের সম্পর্কে অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করেই। আর যেসব মহিলারা অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা সকলেই মুসলিম এবং সামাজিক মাধ্যমে যথেষ্ট সোচ্চার; টার্গেট করা হয়েছে তাঁদেরই।

Fraud application
প্রতীকী চিত্র

গত সপ্তাহে দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল একটি এফআইআর দায়ের করেছে এই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের বিরুদ্ধে এবং যে ওয়েব প্ল্যাটফর্ম থেকে এই অ্যাপ্লিকেশন হোস্ট করা হয়েছে তাদের নোটিশও পাঠানো হয়েছে পুলিশের তরফে।

হানা মহসিন খান, পেশায় একজন পাইলট, তিনি জানিয়েছেন যে এক বন্ধুর মাধ্যমে ওই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের লিংকের একটি টুইট পান তিনি। লিংকটি খোলেন সেখানে আরো অন্তত ৮৩ জন মহিলার ছবির সাথে তাঁর নিজের ছবিও দেখেন তিনি। পোর্টালটির হোমপেজ খুলতেই দেখতে পান তাতে লেখা রয়েছে ” খুঁজে নিন আপনার (মহিলাদের সম্পর্কে অবমাননাকর একটি শব্দ)”।

মেসেজে ক্লিক করা মাত্রই দেখেন এক মহিলার ছবি এবং তার বিবরণ দেওয়া রয়েছে ‘ডিল অফ দ্য ডে’ বলে। তিনি আরো জানান, “ছবির সাথে একটি বাটন রয়েছে যা প্রেস করে ছবিটি অন্যদের মধ্যে শেয়ারও করা যায়।” উল্লেখ্য, হানা মহসিন খান সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন বিষয়ে ব্যক্তিগত মত শেয়ার করার বিষয়ে খুবই সোচ্চার।

আরও পড়ুনঃ মিশ্র টিকার ফল হতে পারে বড় ক্ষতি, সতর্ক বার্তা হু-এর প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যার

৩৪ বছর বয়স্ক এক তরুণী সাংবাদিক, তিনি জানিয়েছেন গত বছর ওই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন থেকে ছড়িয়ে দেওয়া পাকিস্তানি কিছু মহিলার ছবি শেয়ার হয় বিভিন্ন টুইটার প্রোফাইলে। তার মধ্যে বেশ কিছু প্রোফাইলগুলিকে তিনি চিহ্নিতও করেন। ফলত তাঁর ছবি নিয়েও একই ভাবে নিলাম হয়, গণধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয় ওই টুইটার প্রোফাইলগুলি থেকে।

আরও পড়ুনঃ চলতি মাসেই শুরু হতে চলেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর মহড়া

গত মে মাস নাগাদ, ঈদের কাছাকাছি সময়ে একই অভিজ্ঞতা হয়েছে আরেক তরুণী হাসিবা আমিনেরও। তাঁর ছবি দিয়েও একই ভাবে ‘নিলাম’ হয়। বহু পুরুষ তাঁর ছবিতে ‘দর’ হাঁকেন অনলাইনে। শেষ পর্যন্ত ‘বিক্রয়’ মূল্য স্থির হয় ৭৭ পয়সা। এই ঘটনার বিরুদ্ধে তিনি এফআইআর দায়ের করেন কিন্তু এখনো পর্যন্ত পুলিসের তরফে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

হাসিবা আমিন বলেন, মুসলিম মহিলা এবং তাঁদের নিজস্ব মতামত সামাজিক মাধ্যমে অত্যন্ত স্পষ্ট অর্থাৎ স্বাধীনচেতা মুসলমান মহিলা এই ব্যাপারটি পিতৃতান্ত্রিকতা এবং ইসলামফোবিয়া দুই মানসিকতার মানুষের কাছেই খুবই মারাত্মক সংমিশ্রণ। সাধারণভাবে মহিলারা ‘অপ্রেসড’ হবেন বিশেষত মুসলমান মহিলারা আরোই ‘অপ্রেসড’ এটাই আমাদের সমাজের ধারণা, কাজেই তাঁরা মাথা তুলে দাঁড়ালে সেটা হজম করতে পারেননা এইসব নিকৃষ্ট মানসিকতার মানুষজন। তার ফলেই তাঁদের সম্মানহানিকর বিষয় কিভাবে ঘটানো যায় সেই পরিকল্পনা চলতে থাকে নিরন্তর।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here