স্বাধীনতা সংগ্রামী বটুকেশ্বর দত্তর ভিটে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্রের দাবি স্থানীয়দের

0
97

সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে উনিশ শতকের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন বটুকেশ্বর দত্ত। অবিভক্ত বর্ধমান জেলার খন্ডঘোষ থানা এলাকার ওঁয়াড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বটুকেশ্বর দত্ত। ওয়ারি গ্রাম এখন পড়ে পূর্ব বধমান জেলায়। কয়েকদিন আগে বর্ধমান স্টেশনের নাম বদল করে বটুকেশ্বর দত্ত নাম করা হবে এরকম একটি আলোচনা উঠে এসেছিল। শেষমেশ অবশ্য বর্ধমান স্টেশনের নাম বর্ধমানই রয়ে গেল। তবে ওঁয়াড়ি গ্রামের স্টেশনের নাম বটুকেশ্বর দত্ত করা হোক বলে সবাই আর্জি জানিয়েছেন।

demands the property of Batukeshwar Dutt as Tourist center
নিজস্ব চিত্র

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের ছাত্র ঝন্টু পাল বলেন, ১৯২৯ সালের ৮ এপ্রিল দিল্লিতে কেন্দ্রীয় আইনসভা কক্ষে ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত বোমা ফেলেন, “ইনকিলাব জিন্দাবাদ” স্লোগান দিয়ে দেশমুক্তির দাবিতে লিফলেট ছড়ান ও তারপর দু’জনেই স্বেচ্ছায় ধরা দেন। লাহোর ষড়যন্ত্র মামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ ভগৎ সিং, শুকদেব ও রাজগুরুর ফাঁসি হলেও বটুকেশ্বর দত্তের বয়স কম থাকায় তাঁকে ১৯৩০ সালের ৬ জুন ব্রিটিশ সরকার আন্দামানের সেলুলার জেলে পাঠিয়ে দেয়। জেলে ব্যাপকভাবে অত্যাচার করা হয়েছে তাঁকে। সে সময়ে অত্যাচারের যে চিত্রটি ফুটে ওঠে তা হল, তাঁর হাত দুটি পিছন দিকে ঘুরিয়ে শিরদাঁড়ার কাছে লোহার বেরি দিয়ে বাঁধা। পায়ের জন্য তৈরি একটি বিশেষ অলংকার। আড়াই ফুট লম্বা একটি মোটা রড তার শেষ প্রান্ত দুটিতে লোহার কড়া পরানো। কড়া দুটি মলেের মত দুটি পায়ের সঙ্গে আটকানো। এই সময়ে তাঁর ওপর নির্যাতনের মাত্রা এত বেড়ে গিয়েছিল যে, তাঁর বিষাক্ত ক্ষত থেকে রক্ত এবং পুঁজ ক্রমাগত নির্গত হতো। শেষমেশ পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে দেখে ১৯৩৮ সালের তাঁকে নজর বন্দি অবস্থায় জেল থেকে ছাড়তে বাধ্য হয় বৃটিশ।

আরও পড়ুনঃ শঙ্খ বাজিয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সূচনা গোপীবল্লভপুরে

ভারত স্বাধীন হওয়ার পর পাটনাতে তিনি জীবন যাপন করেন। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বর্তমানে ওঁয়াড়ি গ্রামের বাসিন্দারা চাইছেন, বটুকেশ্বর দত্তর ভিটেকে একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হোক। তাতে একদিকে যেরকম বিপ্লবীকে শ্রদ্ধা জানানো যাবে অন্যদিকে এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে। এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, বটুকেশ্বর দত্তের বন্দেমাতরম ধ্বনি আজও ছড়িয়ে আছে তাঁর বাল্যকালের গ্রামে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here