নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলিঃ
গত সোমবারই করোনায় মৃত্যু হয়েছে চন্দননগরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবদত্তা রায়-এর। এই ঘটনার একদিন পরেই করোনা আক্রান্ত হল মৃতার চার বছরের সন্তানও। মঙ্গলবার জানা যায়, দেবদত্তা রায়ের চার বছরের সন্তান, স্বামী এবং শাশুড়িও নোভেল করোনাভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছেন। এও জানা গেছে যে, এখন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা চলছে তাঁদের। কিন্তু বেড পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছে পরিবার।
দমদম লিচুবাগানের বাসিন্দা ছিলেন দেবদত্তা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রবিবার শ্রীরামপুর শ্রমজীবী কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সোমবার সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। চন্দননগর মহকুমা শাসকের দফতরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে কর্মরত ছিলেন দেবদত্তা রায়। তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে আসে চন্দননগর মহকুমা শাসকের দফতরে।
এর আগে পুরুলিয়া ২ ব্লকের বিডিও ছিলেন দেবদত্তা। সেখান থেকেই বদলি হয়ে চন্দননগর মহকুমায় এসেছিলেন তিনি। জানা যায়, সম্প্রতি হুগলির ডানকুনিতে ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেনে যে সব পরিযায়ী শ্রমিক আসছিলেন তাঁদের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব সামলেছিলেন এই তরুণী আধিকারিক। তারপর নিজেই করোনায় আক্রান্ত হন। তবে তিনি একা নন। দেবদত্তার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর স্বামীও করোনা আক্রান্ত হন।
আরও পড়ুনঃ করোনায় আক্রান্ত চন্দননগরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের মৃত্যু
কিছুদিন আগেই কীভাবে তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তার একটা বিবরণ লিখে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবদত্তা রায়। জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে দশ দিনের ছুটি নিয়েছিলেন তিনি। দেবদত্তার ইচ্ছা ছিল ওই সময়টা সন্তানকে নিজের কাছে পাবেন। ৩০ জুন বাড়ি ফেরার পথেই শরীর দুর্বল হতে শুরু করে তাঁর। এরপরই দেবদত্তার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তাই সন্তানকে আর কাছে পাওয়া হল না তাঁর। অবশেষে করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে গেলেন চন্দননগরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবদত্তা রায়।
আরও পড়ুনঃ চিকিৎসায় গাফিলতির জের! মা-হারা সন্তানদের নামে ১০ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিটের নির্দেশ কমিশনের
পরিবার সূত্রে খবর, করোনা উপসর্গ দেখা দিতেই ব্যারাকপুরে গিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন স্বামী-স্ত্রী দুজনেই। দেবদত্তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করারও চেষ্টা চলছিল। কিন্তু রবিবার বাড়াবাড়ি হওয়ায় তাঁকে শ্রীরামপুরের শ্রমজীবী কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সোমবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
এবার বিপদ আরও বাড়ল। চন্দননগরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবদত্তা রায়ের ছোট্ট সন্তান এখনও বুঝেই উঠতে পারেনি মাতৃশোক। সেও করোনায় সংক্রামিত হল মঙ্গলবার। মৃত দেবদত্তার বয়স্কা শাশুড়ির শরীরেও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। দেবদত্তার স্বামীরও কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসায় পারিবারিক সাপোর্ট পাওয়াও মুশকিল হয়েছে। এই অবস্থায় ভর্তির জন্য বেডও পাচ্ছেন না তাঁরা। ফলে আরও সমস্যা দেখা দিয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584