মণীশের মৃত্যুতে মুকুল-দিলীপ দূরত্ব স্পষ্ট দাবি রাজনৈতিক মহলের

0
133

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ

যুব নেতা মণীশ শুক্লার খুনের ঘটনার পর বিজেপির দলের ভেতরের চিত্র রীতিমত স্পষ্ট হয়ে গেল। সারা দিন কোথাও দেখা গেল না দিলীপ ঘোষ-সহ রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতাদের অনেককে। এমনকি সোমবার সারাদিন মণীশ শুক্লার পরিবারের লোকের সঙ্গে দেখা করা, মর্গে তদারকি করা বা কলকাতার পথে শবদেহ নিয়ে রাজভবনে যাওয়ার সময়ও রাজ্য বিজেপির একটা অংশ হাজির ছিলেন না।

dilip ghosh | newsfront.co
দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়। ফাইল চিত্র

টুইটে প্রতিবাদ করে দায় সেরেছেন অনেকেই। কার্যক্ষেত্রে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা নেতাদের সঙ্গে অনেকটাই দূরত্ব বজায় রাখলেন রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন মহল। অনেকের মতে, দলের কর্মসূচিতে মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের দূরত্ব যেন একেবারে প্রকট।

আরও পড়ুনঃ রাজ্যপালের জেলা ভিত্তিক ধর্ষণ পরিসংখ্যানের টুইট ঘিরে উঠছে প্রশ্ন

রবিবার রাতে টিটাগড়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং ঘনিষ্ঠ যুব নেতা মণীশ শুক্লা। এরপর একে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ঘটনার প্রতিবাদে টুইট করতে থাকেন। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষও টুইট করেন। কিন্তু সোমবার সারা দিন মণীশ শুক্লার বাড়িতে বা মৃতদেহের আশপাশে দেখা যায়নি তাঁকে।

কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে মৃতদেহের পোস্টমর্টেম হয়, সশরীরে প্রতিবাদে যোগ দেওয়া মোটেই কঠিন কাজ নয়। অনেকেই জানিয়েছেন আশপাশের জেলায় দলীয় কর্মসূচিতে ছিলেন কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, চাইলে কর্মসূচি একটু কাটছাঁট করে কলকাতায় ফিরতেই পারতেন ওই নেতারা। অর্থাৎ তাঁরা ফিরতে চাননি তাই ফেরেননি।

আরও পড়ুনঃ নারদ তদন্তের চার্জশিট প্রকাশে মিলছে না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অনুমতি, হতাশ সিবিআই

সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারাণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ছাড়া যেসব বিজেপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা সকলেই তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে গেছেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়, সাংসদ অর্জুন সিং, সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, শঙ্কুদেব পন্ডা। এঁরা প্রত্যেকেই একসময় তৃণমূলেই ছিলেন। রাজভবনের প্রতিনিধি দলেও একই চিত্র।

বঙ্গ বিজেপির আন্দোলনের নেতৃত্বের সাথে বদলেছে আন্দোলনের ধারাও। বামফ্রণ্ট আমলে কলকাতার রাস্তায় মৃতদেহ নিয়ে এসে আন্দোলন করত তৃণমূল কংগ্রেস। জেলার দলীয় কর্মীর রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত্যু হলে সেই মৃতদেহ কলকাতার পথে নিয়ে আসা হত, রাজভবন যাত্রা নিয়ে চলত প্রতিবাদ। সেক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকায় থাকতেন তৎকালীন তৃণমূলের মুকুল রায়।

আরও পড়ুনঃ কোচবিহার জেলাশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে স্মারকলিপি প্রদান

এবার সেই পথে আন্দোলনে বঙ্গ বিজেপি; তৃণমূল রাজনীতির প্রভাব স্পষ্ট। রাজভবনে নালিশ জানানো হবে বলে মণীশ শুক্লার দেহ নিয়ে এসএন ব্যানার্জী রোডে দীর্ঘক্ষণ পড়ে রইল শববাহী গাড়ি। নিউ মার্কেটের সামনে চলল বিস্তর গোলমাল। সেখানেও রাজ্য বিজেপির নেতারা অনুপস্থিত। এবার দলের ভেতরেই কথা উঠছে যে, শীর্ষ নেতৃত্বকে মঞ্চে যতই এক ফ্রেমে দেখা যাক না কেন বাস্তবে তা নয়। একথা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই বলেই তাঁদের অভিমত।

কৃষি বিলের সমর্থনে ও আমফান দুর্নীতির প্রতিবাদে রাজ্যের সর্বত্র মিছিল, বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বিজেপি। কিন্তু মণীশ শুক্লর মৃত্যুর পর, দলীয় কার্যকর্তাদের দূরত্বটা স্পষ্ট হয়ে গেল।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here