উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
এম এল এ, মন্ত্রী, কর্মী সব দল ছেড়ে চলে আসছেন। দিশেহারা হয়ে পড়ছেন যুবরাজ ভাইপো। সব হারিয়ে এবার বুঝতে পারবেন কত ধানের কত চাল। এবার তোলাবাজি আর কাটমানি খাওয়ার জমিদারি বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আমাকে গুণ্ডা বলছেন।
এতে ভাইপোর দোষ দেখি না। – সাতগাছিয়ার জনসভায় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে গুণ্ডা বলার পর এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। একই সঙ্গে ডিসেম্বর মাসটা তৃণমূলের খুব চাপের বলেই মন্তব্য করলেন দিলীপ ঘোষ। রবিবার কাঁথি হলদিয়া ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি সভা ডাকা হয়েছে এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ জানান, “আমি কাল যেটা বলেছি তৃণমূলের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট শুরু হয়েছে। এখন ওরা ভাঙন ঠেকাতে ব্যস্ত।
যে নেতারা কোনও দিনও বাইরে বেরোন না তারা বেরোতে আরম্ভ করেছেন। এজন্য ডিসেম্বর মাসটা টিএমসির জন্য খুবই চাপের। বছরের শেষটা মোটেও ভালও যাচ্ছে না টিএমসির।” রবিবার সকালে ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এরকমই মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুনঃ মাদারিহাট বীরপাড়ায় তৃণমূলের সভায় অনেক নেতাই অনুপস্থিত
জঙ্গলমহলের পর মুখ্যমন্ত্রীর ৭ ডিসেম্বরের মেদিনীপুরের সভাকে নিয়ে কটাক্ষ করে দিলীপের মন্তব্য, “জঙ্গলমহলের মানুষ ভরসা করেছিল, জঙ্গলমহলের সঙ্গে যেভাবে প্রতারণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, মানুষ তার জবাব দিয়ে দিয়েছে। তারা মুখ ঘুড়িয়ে নিয়েছে। উনি যদি জঙ্গলমহলে পড়েও থাকেন কোনও লাভ হবে না। শেষ চেষ্টা করে দেখেছেন।”
জেপি নাড্ডা আসার আগে মুখ্যমন্ত্রীর সভা প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা নিয়মিত তো সভা করছি। ওনারা সবে নেমেছেন। কারণ তৃণমূলের ভাষণ শুনতে লোক আসে না বিভিন্ন জায়গা থেকে দূর দূর থেকে লোক নিয়ে আসতে হয়। তাই একবার পরীক্ষা করে নিচ্ছেন কী পরিস্থিতি। এখন ঘর সামলান আগে তারপর সভা করবেন।” গতকাল অনুকূল ঠাকুরের পুত্রের সঙ্গে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় সাক্ষাৎ নিয়ে দিলীপের মন্তব্য, “যত ধার্মিক সংগঠন আছে তাদের সমস্যা শোনা, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার কাজটা আমাদের পার্টি সব সময় করে থাকে।”
আরও পড়ুনঃ বুকের পাটা থাকলে নাম নিয়ে দেখান! বজবজের সভায় হুংকার অভিষেকের
শনিবার মালদহের নেতৃত্বের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে কয়েকজন নেতৃত্বের অনুপস্থিতি নিয়ে বলেন, ওনারা একটু দেখে নিচ্ছেন কে আছেন, কে নেই। ডিসেম্বর মাসে জল আর দুধ আলাদা হয়ে যাবে।” বেশ কয়েকদিন আগেই বাংলাকে গুজরাট বানানোর কথা বলেছিলেন দিলীপ, তবে মমতা তার পাল্টা মন্তব্যে বলেছিলেন, বাংলাকে গুজরাট বানাতে দেবেন না।
আজ এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “আগে তো টিকুন ,তারপরে আটকাবেন। টিএমসি পার্টিই থাকবে না। আমরা তো গুজরাট বানাব। কারণ গুজরাটে শিল্প হয়েছে, শিক্ষা হয়েছে, আর্থিক উন্নতি হয়েছে, সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, গণতন্ত্র আছে, সংখ্যালঘুরাও আজ গুজরাটে সুরক্ষিত। এরা যে ভুল প্রচার করতেন সেটা আজ ভুল প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। তাই গুজরাট আমাদের সামনে আদর্শ।” এছাড়াও শুভেন্দু ইস্যুতে দিলীপের বক্তব্য, “টিএমসি-র কাউকে বহিষ্কার করার মত শক্তি নেই। তাহলে তো ফাঁকা হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ জল্পনায় জল ঢেলে মমতার স্তুতি গাইলেন তপনের বিধায়ক বাচ্চু হাসদা
সেজন্য আজকে তারা কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন না। এখন কিছু করতে গেলে দল ফাঁকা হয়ে যাবে।” অন্য দিকে এদিন বিজেপি দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে দিলীপ ঘোষ বলেন,”কাটমানি নেওয়ায় বাজারে আলু ও পেঁয়াজের দাম এত বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্য সরকার কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় সাধারণ মানুষকে বেশি দামে আলু ও পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে।”
অন্য দিকে রবিবার তৃণমূলের জনসভা থেকে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিলীপ ঘোষকে গুণ্ডা বলা নিয়ে বিজেপির এই শীর্ষ রাজ্য নেতা বলেন,”উনি করোনার সময়ে ডায়মন্ড হারবারে কল্পতরু নামে মানুষকে রোজ খাবার দেওয়ার প্রকল্প চালু করে একদিন দিয়ে পালিয়ে যান। ডায়মন্ড হারবারের গরীব মানুষ এত ভিখারি নন। আর কে বা কারা গুণ্ডা, ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে কান পাতলেই বুঝতে পারবে সাধারণ মানুষ।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584