তপন চক্রবর্তী,উত্তর দিনাজপুরঃ
বিশ্ব জল দিবস উপলক্ষ্যে জল সংরক্ষণ ও জল সংকটের কারণ নিয়ে এক ঘন্টার জ্বালামুখী ভাষণ দিলেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের সহ অধ্যাপক ড: তাপস পাল।গত ২৩ শে মার্চ হরিরামপুর আব্দুল দেওয়ান গনি কলেজে এই আলোচনা হয়।আলোচনায় আহ্বায়ক ছিলেন অধ্যাপক মহম্মদ ইসমাইল ও কলেজের টিচার ইনচার্জ সাহির মিয়াঁ সহ অন্যান্য অধ্যাপক ও গবেষকরা।গত দুই বছর ধরে তিনি স্থিতিশীল উন্নয়ন নিয়ে আমেরিকা,দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভুটান, থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশে কাজ করার মধ্য দিয়ে যে অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছেন তার উপর ভিত্তি করে ড:পাল জলের গুরুত্ব, বর্তমান,ভবিষ্যৎ ও স্থিতিশীল উন্নয়নে জলের গুরুত্ব নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন- ‘মানুষের জলে
জন্ম,জলে বৃদ্ধি ও জলেই পরিণতি।’ তিনি বলেন মাতৃগর্ভে শিশু থাকার সময় এমনিওটিক ফ্লুইড ৯৮% জল।ভৌমজল সঠিকভাবে রিফিলিং হতে না পারার কারণ হিসেবে প্ল্যানবিহীন যোগাযোগ বিপ্লবকেই তিনি দায়ি করেছেন।তথ্য অনুযায়ী প্রতি আটজনে একজন মানুষ পানীয় জল পাচ্ছেনা এবং ২০৩০ সালে জনসংখ্যা বেড়ে হবে 8.3 বিলিয়ন ও জলের চাহিদাও ৩০ শতাংশ বাড়বে।ড. পাল মানুষের মধ্যে জল অপচয়ের স্বভাব হিসেবে পরিবারের অপ জলের অভ্যাস যা তারা ছোট থেকে দেখে আসছে এমনকি যে সমস্ত অ্যাডভার্টিসমেন্ট শিশুরা ছোট্ট থেকে টিভিতে দেখে আসছে সেখানেও জলের অপচয় লক্ষ্য করা যায়।আলোচনাতে ড:পাল কবিগুরুর গীতাঞ্জলি ‘জল তোমায় নমি’, ‘কেন মরে গেলে
নদী?’, ‘ডিকমিশানিং বাঁধ’, ‘পুকুর চুরি’ (উদাহরণ হিসেবে বোলপুরের হাটতলার
কাছে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে শিববাড়ি আবাসিক এলাকায় পুকুর ভরে
বহুতলবাড়ি)’।এপিজে আব্দুল কালামের ‘২০৭০ সালের চিঠি’, জলকে কেন্দ্র করে তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সম্ভাবনা সম্প্রতি ২১ লিটারের পানীয় জলের ড্রামের ব্যবহার,জলকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশ ও রাজ্যের মধ্যে ঘটে জল যুদ্ধ (উদাহরণ দিয়েছেন জর্ডন নদী নিয়ে ইজরাইল ও জর্ডনের মধ্যে, নীল নদী নিয়ে
ইজিপ্ট ও ইথিওপিয়ার মধ্যে,গঙ্গা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ইত্যাদি)।সংরক্ষণের উপায় হিসেবে ডঃ তাপস পাল বলেন স্থিতিশীল উন্নয়ন, স্থিতিশীল ব্যবহার ও ট্র্যাডিশনাল টেকনোলজির সাথে আধুনিক নিও- টেকনোলজির যুগ্ম
ব্যবহার করতে হবে,জল সচেতনতা বাড়ানো ও সর্বোপরি বৈজ্ঞানিক একটি ভাবনা দিলেন ‘জল যত কমবে,জল তত কমবে’।পরিশেষে সুকুমার রায়ের অবাক জলপানের বিখ্যাত লাইন ‘একটু জল পাই কোথায় বলতে পারেন?’,বলে শেষ করেন।
আরও পড়ুনঃ আন্তর্জাতিক কবিতা দিবস উদযাপন গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘের
আলোচনায় ড: ইসমাইল তুলে ধরেন কলকাতা সহ বড় বড় শহরের জল সংকট,মাটির নিচ
থেকে জল তুলে ফেলা,ভবিষ্যৎ জলের প্রয়োজনীয়তা,জল নিয়ে সমস্যা প্রভৃতি।ওই কলেজের IQAC ও NCC র যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা সভা।টিচার ইনচার্জ সাহির আলী মিয়াঁ এই ধরণের অনুষ্ঠানের প্রতি খুবই উৎসাহ প্রকাশ করেন ও বলেন জলের উন্নয়নে তিনি নিবেদিত প্রাণ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584