শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
করোনা মহামারি যে পর্যায়েই থাকুক না কেন, রাজ্য প্রশাসনের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে পুজোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন শহরের সমস্ত পুজো উদ্যোক্তারা। যদিও এবারে সরকারি কোভিড নির্দেশাবলী মেনে সমস্ত মণ্ডপ খোলামেলা এবং মণ্ডপে মাস্ক, স্যানিটাইজার রাখা সহ আরও একাধিক নিয়মে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
কিন্তু এত কিছুর পরেও কি পুজোয় ঠাকুর দেখা থেকে ছড়াবে না সংক্রমণ? তার গ্যারান্টি কিন্তু কেউই দিতে পারছেন না। উল্টে চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, শহরের জনপ্রিয় ২৫ মণ্ডপই হয়ে উঠতে পারে প্রকৃত অর্থে ‘সুপার স্প্রেডার’। অন্যান্য বছর এই মণ্ডপগুলিতে মানুষের ভিড় সামলাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে।সাধারণভাবে ভিড় করে ঠাকুর দেখাই পছন্দ বাঙালির। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু মানুষজন ভিড় এড়াবেন, এটা নিশ্চিত।
আরও পড়ুনঃ সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো হবে দর্শকহীন
কিন্তু সিংহভাগ মানুষজনই মুখে মাস্ক এবং পকেটে স্যানিটাইজার নিয়েই যে পুজোর মণ্ডপে ভিড় করবেন, এটা নিশ্চিত। ঠিক যেমন ভাবে চিরাচরিত নেশায় মাস্ক স্যানিটাইজার নিয়েই পুজো শপিংয়ে ভিড় করেছে মানুষ। আর শহরের কিছু মণ্ডপ রাস্তার ওপর হলেও যে মণ্ডপগুলিতে লাইন দিয়ে ঢুকে মণ্ডপ ও ঠাকুর দেখে অন্য রাস্তা দিয়ে বেরোতে হয়, সেই মণ্ডপগুলিকেই ‘সুপার স্প্রেডার’ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ মণ্ডপ যতই খোলামেলা হোক, ভিতরে লাইন দিয়ে আসার সময়েই সংক্রমিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সোশ্যাল মিডিয়ার চাপে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পা রাখতে পারলেন না মা দুর্গা
কোন কোন পুজো মণ্ডপগুলি এভাবে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম’এর এক আধিকারিক বলেন, উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার বিশেষ ২৫ মণ্ডপ আমাদের নজরে রয়েছে। এর মধ্যে যেমন রয়েছে উত্তর কলকাতার বাগবাজার সার্বজনীন,দমদম পার্ক তরুণ দল, কুমোরটুলি পার্ক সার্বজনীন, হাতিবাগান নবীন পল্লি, তেলেঙ্গাবাগান, চালতাবাগান, কাশী বোস লেন, কলেজ স্কোয়ার, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার, ঠিক তেমনই দক্ষিণের ত্রিধারা সম্মিলনী, সেলিমপুর পল্লি, যোধপুর পার্ক, সুরুচি সঙ্ঘ, ম্যাডক্স স্কোয়ার, বেহালা নতুন দল, কসবা বোসপুকুর, খিদিরপুর সার্বজনীন, একডালিয়া এভারগ্রিন, সিংহী পার্কের মত একাধিক পুজো। তবে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার ইতিমধ্যেই দর্শকবিহীন ভাবে শুধু মাত্র পল্লীবাসীবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ স্ব-নির্ভর প্রকল্পের অধীনে এবার শহরে ‘স্বয়ংসিদ্ধা’-র বিশেষ প্রদর্শনী
আর দেশপ্রিয় পার্ক থেকে আহিরীটোলা সার্বজনীন, জগৎ মুখার্জি পার্কের মত পুজোগুলি রাস্তার ওপরে হওয়ায় এর থেকে খুব একটা সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের কার্ডিও থোরাসিক বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ কৌশিক মজুমদার বলছেন, ‘সারা রাজ্যে ১২০০০-এর ওপর বেড থাকলেও কলকাতায় কিন্তু বেড রয়েছে মাত্র ৩০০০-এর কিছু বেশি।
করোনা সংক্রমণের ধাক্কায় গুরুতর অসুস্থ হলে এবং এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মত পরিস্থিতি না থাকলে তখন কিন্তু ভুগতে হবে রোগী ও তাঁদের পরিবারকেই। মানুষ যদি নিজে থেকে সচেতন না হন, তাহলে চিকিৎসক বলুন বা রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা, কেউ কিছু করতে পারবে না।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584