শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
করোনা আতঙ্কে মৃত্যুর পরেও ফিরতে পারছেন না তাদের প্রিয়জনের কাছে। চিকিৎসকরা যতই আগুনে পুড়ে ভাইরাস নিঃশেষিত হয়ে যাওয়ার আশ্বাসবাণী দিন, প্রিয়জনের অস্থির সংগ্রহে কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা। সরকারি সদ ইচ্ছা থাকলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে গড়ে ওঠা করোনা আতঙ্ক প্রিয়জনের মৃতদেহের অস্থি বিসর্জনে অনীহা প্রকাশ করছে। এর ফলে সমস্যায় পড়েছে কলকাতা পুরসভা-সহ অন্য পুরসভাগুলি।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই করোনা মৃতদের এই অস্থিতে ভরে গিয়েছে জায়গা। ফলে এত সংখ্যক মৃতদেহের অস্থি কলস সংরক্ষণ করে রাখা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। এর আগে ঠিক করা হয়েছিল, যেহেতু পরিবারের লোকজন মৃতদেহ সৎকার করতে পারছেন না, সেই কারণে হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ আসার আগেই পরিবারের লোকেদের থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হবে। যাঁরা চাইবেন, তাঁদের আগে থেকেই হাসপাতালে বলে রাখতে হবে। সেই অনুযায়ী চিতাভস্ম সংরক্ষণ করবে পুরসভা। নির্দিষ্ট সময়ে ডেথ সার্টিফিকেট প্রাপ্তির সঙ্গে পরিবারের লোকেরা সেই কলস নিয়ে যেতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ কর্মক্ষেত্রে হয়রানি ঠেকাতে ‘করোনা নেগেটিভ’ সার্টিফিকেট দেওয়ার সিদ্ধান্ত কলকাতা পুরসভা
উল্লেখ্য, করোনায় মারা গেলে সরকারি নীতি অনুযায়ী মৃতদেহ সৎকারের যে প্রক্রিয়া তা করার পর বাড়ির সদস্যদের হাতে ডেথ সার্টিফিকেট ও চিতাভস্ম তুলে দেওয়াই দস্তুর। এই নিয়ে প্রথম দিকে অনেক প্রশ্নও শুনতে হয়ে প্রশাসনকে। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনেরও পরিবর্তন হয়েছে। অনেকে এই চিতাভস্ম নিতে এলেও বেশিরভাগ পরিবারের সদস্যরা যদিও তা নিতে আসছেন না।
আরও পড়ুনঃ কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যৌথ সমন্বয়ে নাগরিকদের চিকিৎসার পরামর্শ দেবে আইএমএ
কোথাও ইতস্ততবোধ, কোথাও আবার চরম আতঙ্ক, ফলে পরিবারের মৃত ব্যক্তির অস্থি কলস নিতেও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না অনেক পরিবারই। আবেদনও তেমন জমাও পড়ছে না। অনেকে আবেদন করেও নিচ্ছেন না। তাই সেই অস্থি কলস সাতদিন পর ধাপায় ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের অন্যতম সদস্য তথা স্বাস্থ্যবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতীন ঘোষ বলেন, ‘পুরসভা পরিবারের সদস্যদের এই সুযোগ দিয়েছে। যাঁরা চিতাভস্ম নিতে চাইছেন, তাঁরা এসে নিয়ে যাচ্ছেন। যাঁরা চাইছেন না, সাতদিন দেখে তা আমরা ধাপায় ফেলে দিচ্ছি।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584