নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অব্যাহত কৃষক আন্দোলন। যার জেরে তোলপাড় গোটা দেশ। কৃষি আইনের উপর আপাতত স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্র-কৃষক প্রতিনিধিদের একাদশতম বৈঠকও নিষ্ফলা। এই পরিস্থিতিতে এবার কৃষকদের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করল কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর স্পষ্ট বলেছেন, ‘বল এখন কৃষক প্রতিনিধিদের কোর্টে।’ তাঁর অভিযোগ, ‘কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় জন্য ইউনিয়ন আন্তরিক নয়।’ আন্দোলনকারীদের মধ্যে পার্থক্য গড়ে তুলতে তোমর এই মনোভাব ব্যক্ত করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে লড়াই এখানেই শেষ করবে না আন্দোলনরত কৃষকরা। আর তাই দিল্লি সীমানায় এখনও অবস্থানরত কৃষকরা। উল্টে প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজপথে ট্রাক্টর ব়্যালির মধ্যে দিয়েই শক্তি প্রদর্শনে মরিয়া তাঁরা।
আন্দোলনকারী কৃষকদের মতে, কেন্দ্রের প্রস্তাবে রাজি হলে এই আন্দোলন ‘নিরর্থক’ হয়ে পড়বে। ট্রাক্টর ব়্যালি ঘিরে প্রশাসনের উপর যে চাপ তৈরি হয়েছে তাও কার্যত অচল হয়ে যাবে। মোদী সরকার এর সুযোগ নিতে পারে বলে মনে করছেন কৃষকরা।
সিঙ্ঘু সীমানায় অবস্থান বিক্ষোভে বসা হরিয়ানার আম্বালার কৃষক ৭৩ বছরের জগন সিং বলেছেন, ‘আইন স্থগিতের কেন্দ্রীয় প্রস্তাব নৈতিকভাবে আমাদের জয়। কিন্তু, কৃষি আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনও মতেই এখান থেকে উঠব না।’ জদনের ছেলে, নাতিরাও এই আন্দোলনে দিল্লি সীমানায় বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ কৃষক নেতাদের হত্যার সুপারি! সিংঘু সীমান্তে অস্ত্র-সহ ধৃত যুবকের দাবি
কৃষকদের পাখির চোখ আপাতত প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজপথে ট্রাক্টর ব়্যালি। এই কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য শয়ে শয়ে কৃষক দিল্লি সীমানায় এসে পৌঁছচ্ছে। এই অবস্থায় আন্দোলন লঘু করার অর্থ কার্যত হার শিকার করে নেওয়া। দাবি, ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ানের সদস্য হর্ষ গিলের। আইন প্রত্যাহারের লিখিত প্রতিশ্রুতি ছাড়া আন্দোলন বন্ধ হবে না বলে দাবি তাঁর।
আরও পড়ুনঃ কর্পোরেট-গণতন্ত্র বিতর্ক তুঙ্গে, অস্ট্রেলিয়ায় সার্চ ইঞ্জিন বন্ধের হুঁশিয়ারি গুগলের
একই দাবি, পাঞ্জাবের হোসিয়ারপুরের দেবা সংঘর্ষপুর কমিটির নেতা বছর ৩৮-এর হরমিন্দর সিংয়ের। এতদূর এগিয়ে গিয়ে পিছিয়ে আসার কোনও অর্থ হয়না বলে দাবি তাঁর। গাজিপুরে অবস্থানরত উত্তরপ্রদেশের রামপুরের কৃষক হাসিব আহমেদ বলেছেন, ‘কেন্দ্র মনে করছে চাপ দিলেই আমরা উঠে যাব। কিন্তু ঠিক তার উল্টো হবে। আমরা এখন ২৬ জানুয়ারি দিল্লিতে ট্রাক্টর ব়্যালির জন্য মরিয়া।
এ সবের মধ্যেই শুক্রবার রাতে এক মুখোশধারী ব্যক্তিকে দিল্লির সিঙ্ঘু সীমানা থেকে হাতেনাতে পাকড়াও করেন কৃষকরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই ব্যক্তি জেরায় তাঁদের কাছে স্বীকার করেছেন ২৬ জানুয়ারি দিল্লিতে কৃষকদের র্যালি বানচাল করতে দু’টি দলকে কাজে লাগানো হয়েছে। ফলে একটা চাপা উত্তেজনা রয়েছে দিল্লি সীমানায়।
কেন্দ্র-কৃষক নিজেদের অবস্থানে অনড়। এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর দাবি, সরকার তাদের পক্ষে ‘সর্বোচ্চ প্রস্তাব’ দিয়েছিল। কিন্তু কৃষক নেতারা তা না মানায় আন্দোলনকারীদের কোর্টেই এখন বল রয়েছে বলে দাবি তোমরের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584