নিজস্ব সংবাদদাতা, শিলিগুড়িঃ
গোটা দেশ জুড়ে চলছে লকডাউন। এর ফলে পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। যার প্রভাব এসে পড়েছে চাষীদের উৎপাদিত ফসলের উপর। শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগর সুস্বাদু আনারস উৎপাদনের জন্য খ্যাত। কিন্তু লকডাউনের জন্য ভিন রাজ্যে যাচ্ছে না এই আনারস। জানা গিয়েছে যে বিধাননগরে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়।
সব মিলিয়ে ৩ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে আনারস চাষের সঙ্গে যুক্ত। তবে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা করতে সরকারের নেওয়া এই লকডাউনে থমকে রয়েছে আনারস রপ্তানি। লকডাউনের ফলেআনারস চাষে প্রচণ্ড ভাবে ক্ষতি হয়েছে। চাষীরা আনারস বাজারে পাঠাতে না পারায় বাগানের মধ্যে আনারস নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে কয়েক কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এই বিষয়ে মনোরঞ্জন দাস বলেন যে ইতিমধ্যে বাগানের সব ফসল বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা করতে সরকার লকডাউন জারি করায়, আনারস বাজারে কিংবা ভিন্ন রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। এরফলে বাগানের যে ফল ১০ দিন আগে কাটতে হত সেগুলো এখন পাকতে শুরু করেছে। এর ফলে বাগানের পাকা ফল দূরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। এজন্য বর্তমান বাজারে দেড় কেজি একটি আনারসের দাম ৫ টাকা দাঁড়িয়েছে। গতবার আমরা ৩০-৩৫ টাকা প্রতি কেজি পেয়ে ছিলাম।
এরফলে এবারে আনারস চাষিরা বিরাট আর্থিক ক্ষতির মুখে রয়েছে। এর পাশাপাশি বিশ্বজিৎ সিংহ জানিয়েছে যে আনারসের একটি গাছ তৈরি করতে ১২-১৫ টাকা খরচ হয়ে থাকে। ফলে বাজারে আনারসের সঠিক দাম না পাওয়ায় ব্যাপক আর্থিক সমস্যায় রয়েছেন। এর পাশাপাশি তিনি আরও বলেন যে, কেসিসি ঋণ সহ অন্যান্য কৃষিজ ঋণ নিয়ে আনারস চাষ করেছি। যদিও সরকার ৩ মাসের জন্য ঋণ মুকুব করলেও ৩ মাস পর তা ফেরত দিতে হবে। সেক্ষেত্রে চাষীরা তা কিভাবে দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে একাধিক মহলে। জ্যাম, জেলি, জুস, আচার, স্কোয়াস সহ অন্যান্য খাদ্য তৈরি করা হয় আনারস দিয়ে।
আরও পড়ুনঃ লকডাউন অমান্য করায় টোটো গুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ট্রাফিক পুলিশের
এ রাজ্যের পাশাপাশি দিল্লি, কানপুর, লক্ষ্ণৌ, পাঞ্জাবের জলনধর, লুথিয়ানা, অমৃতসর, জম্বু, উত্তর প্রদেশের গোরখপুর সহ পাশ্ববর্তী দেশ নেপাল ও ভুটানেও রপ্তানি করা হয় বিধাননগরের আনারস। চাষীদের থেকে জানা যায় সিস্যানাল, ভাদুই ও শীত এই তিনটি শ্রেণীর আনারসের চাষ হয় বিধাননগরে। জানা যায় গত বছর প্রায় ১৩৫ হাজার মেট্রিক টন আনারসের চাষ হয়েছিল বিধাননগরে। এবারে লাভের আশায় বিধাননগরে মোট ১৫০ হাজার মেট্রিক টন আনারসের চাষ হয়েছিল। এর মধ্যে বর্তমানে শীত কার্পেট আনারসের প্রায় ২১ হাজার মেট্রিক টন আনারস মজুত রয়েছে বাগানে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584