আর্থিক অনটনেই রিজেন্ট পার্কে মা-দুই ছেলের আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা

0
51

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

লকডাউনে কাজ হারানোর পরে আর সেভাবে কাজের সুযোগ পাননি পেশায় হাইকোর্টের ক্লার্ক বড় ছেলে দেবেন্দর সিং সোহেল। ছোট ছেলে অতীন্দ্র সিং সোহেল প্রতিবন্ধী হওয়ায় রীতিমতো সঞ্চয়ে টান পড়েছিল বছর ৬৫-এর প্রণতি সিং সোহেল-য়ের পরিবারে। বাড়িভাড়া ও অন্যান্য খরচের ধাক্কায় প্রবল আর্থিক অনটনে একসঙ্গে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন তিনজনেই। শুক্রবার সকালে রিজেন্ট পার্ক থানার সোনালী পার্কের ঘটনা। তবে আপাতত তিন জনেই স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।

Depression | newsfront.co
প্রতীকী চিত্র

প্রসঙ্গত, লকডাউনে আত্মহত্যার চেষ্টা নতুন কিছু নয়। সারা দেশের মত খোদ কলকাতা শহরেও অভাব-অনটন বা মানসিক অবসাদে মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। ঠিক তেমনই ঘটনা ঘটেছে রিজেন্ট পার্কেও। জানা গিয়েছে, আত্মহত্যার চেষ্টার আগে শুক্রবার সকালে ছোট ছেলে ফোন করে তা জানান এক আত্মীয়কে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই আত্মহত্যা করছি।’ এরপরই সেই আত্মীয় পুলিশ নিয়ে ছুটে আসেন সোনালি পার্ক আবাসনে।

আরও পড়ুনঃ কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় শহীদ সিআরপিএফ জওয়ান সবং-র শ্যামল দে

পুলিশ সূত্রে খবর, রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার সোনালি পার্ক আবাসনে ২ ছেলেকে নিয়ে থাকেন প্রণতি সিং সোহেল। ১২ বছর আগে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। তারপর থেকে বড় ছেলে দেবেন্দ্র সিং সোহেল (বয়স ৪৫ বছর) ও ছোট ছেলে অতীন্দ্র সিং সোহেল (বয়স ৪০ বছর)-কে নিয়ে ওই বাড়িতেই আছেন ৬০ বছরের প্রৌঢ়া প্রণতি সিং সোহেল। ছোট ছেলে অতীন্দ্র আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত। তাঁর নিজেরও বাঁ পায়ের হাড় ভাঙা।

আরও পড়ুনঃ মা-সন্তান মিলে আত্মহত্যার চেষ্টা রিজেন্ট পার্কে

বহু বছর ধরে সেইভাবেই আছেন তিনি। তাই নিয়েই কাজ করে সংসার চালাতেন। বাঁশদ্রোণী বাজারে সিটি গোল্ডের চুরি, হার ইত্যাদি ফেরি করতেন। তা থেকে যা আয় হত, তাই দিয়েই কোনওমতে সংসার চালাচ্ছিলেন প্রণতিদেবী। বড় ছেলে হাই কোর্টের ক্লার্কের কাজ করে যৎসামান্য রোজগার করতেন। কিন্তু লকডাউনের জেরে সেই সমস্ত রোজগার বন্ধ হয়ে যায়।

পুলিশ ঘরের দরজা ভেঙে দেখতে পায়, দুই ছেলে বাইরের ঘরের মাটিতে পড়ে আছেন। ছোট ছেলে অচৈতন্য হয়ে পড়ে থাকলেও বড় ছেলের কিছুটা জ্ঞান ছিল। আর মা প্রণতি সিং সোহেল শোওয়ার ঘরে পড়ে ছিলেন। সকলের মুখ থেকেই গ্যাঁজলা বেরোচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সে করে বাঘাযতীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পাম্প করে পেট থেকে বিষ বের করেন চিকিৎসকরা।
তার পরেই তারা কিছুটা সুস্থ হন।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here