উমার ফারুক,নিউজ ফ্রন্ট,মশালদহ:,১৯আগস্ট:
বন্যা বলে মানুষ ভুলেই গিয়েছিল।কিন্তু ২০১৭সালের বন্যা সবকিছুকেই চাপিয়ে গেছে।১৯৯৮-৯৯সালের বন্যায় মানুষ এতটা ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হয়নি।এলাকার প্রবীণ মানুষজন বলছেন ১৯৭১সালের বন্যা এতটা ভয়ংকর রূপ ধারনকরেনি।মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুর ২ ব্লকের মশালদহ অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি খুবই সংকটজনক অবস্থায়।
হরিশচন্দ্রপুরের সঙ্গে চাঁচলের সংযোগ করি বারোমাসীয়া নদীর উপরের ব্রীজ এখন জলের তলায়।হরিশচন্দ্রপুরের মোহনপুর ওচাঁচলের শুক্রবারি গ্রামের মাঝ বরাবর বারোমাসীয়া নদী বয়ে গেছে।এই নদীর জলেই প্লাবিত আশপাশের গ্রামগুলি। এই অঞ্চলের মোহনপুর,আজহার হাজি টোলা, টিকরামপুর,উদয়পুর,সোনাপুর,মোহন্তপুর,মোমিনপাড়া,কড়িয়ালী, তালগাছি প্রভৃতি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে প্রাণ নিয়ে কোন মতো নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।জলের তলায় চলেগেছে ঘরবাড়ি,কোন গ্রামে কোন মাটির বাড়ি আস্ত নেই জল ঢুকে সব ভেঙে পড়েছে।গৃহহীন মানুষজন আশ্রয় নিয়েছেন মোহনপুর ঈদগাহ ময়দান,মোহনপুর ম্যানেজড প্রাইমারি স্কুল,রেল লাইনের ধারে, ভালুকারোড স্টেশনের প্লাটফর্মে,মশালদহ বেসিক স্কুল,মশালদহ গণপত রায় হাই স্কুলে।মানুষ ও গবাদিপশু একসাথে চরম দুর্দশায়,দুঃখ কষ্টের মধ্যে দিনগুজরান করছেন।
খাদ্যও পানীয় জলের অভাবে চরম সংকটে এই এলাকার মানুষজন।ভালুকারোড স্টেশন থেকে মানুষ পানীয় জল বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।এই অঞ্চলের বাসিন্দা আনওয়ারুল ইসলাম,সাজ্জাদ আলী,মাইনুল হক,আবদুল হক,আব্দুর রশিদ,আমিনুল ইসলাম, মোজাহার হোসেন প্রমুখ মানুষরা জানান-আমরা আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে চলে এসেছি।মেয়েছেলে,ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।নিজেরাই ট্রিপল টাঙিয়ে তাঁবুর ব্যবস্থা করে আছি।কিন্তু প্রশাসনের উদ্যোগে আমাদের জন্য কোন ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয় নি।সরকার বা প্রশাসন বলে কোন জিনিস আছে কি না আমরা বুঝতে পারছিনা।আমাদের জন্য যদি একটি নৌকার ব্যবস্থা করত প্রশাসন তবে আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে খাবার ও খোঁজ খবর আনতে পারতাম।এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন আমাদের অঞ্চলের প্রধানও আমাদের জন্য কোন ত্রাণ নিয়ে আসেন নি।হরিশচন্দ্রপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত সদস্য বেলাল হোসেন জানান-এই অঞ্চলের মানুষ খুবই সংকটের মধ্যে আছেন।আমার নিজের বাড়িতেও জল ঢুকেছে, ছাদের উপরে আছি।প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত মানুষরা যেখানে যেখানে আশ্রয় নিয়ে আছেন সেখানে একটি নলকূপ এর ব্যবস্থা করলে ও মানুষ পানীয় জলটুকু পেত।আমি ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে এই ব্যাপারে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি কিন্তু সাড়া পায়নি।
উত্তর মালদার সাংসদ মৌসম বেনজির নূর ফোনে জানান- মশালদহ অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির খবর আমার জানা ছিলনা,আপনার মাধ্যমে জানলাম।আমি আজই জেলা শাসকের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলছি।সোমবার উনার সঙ্গে দেখা করে যথা শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করব।প্রশাসনের মাধ্যমেই ত্রাণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584