শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
পশুদের করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা নেই বলে দাবি করেছিলেন প্রাণী বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সোমবার নিউইয়র্কে এক বাঘের শরীরে করোনা সংক্রমণের খবর আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বে। এই পরিস্থিতিতে আর কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না রাজ্য বন দফতর।
সেই কারণেই আলিপুর চিড়িয়াখানায় প্রত্যেক পশুপাখির প্রত্যেক দিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করল রাজ্য বন দফতর।একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র আলিপুর নয়, রাজ্যের সব চিড়িয়াখানাতেই পিপিই ব্যবহার করবেন কর্মীরা। ওই পোশাক পরেই তাদের পশুদের খাঁচায় ঢুকতে হবে।
আরও পড়ুনঃ কোয়ারেন্টাইনে থাকা আক্রান্তদের স্বাচ্ছন্দে থাকতে একরাশ উপহার প্রদান তরুণ দলের
ইতিমধ্যেই রাজ্যের চিড়িয়াখানা গুলিতে পিপিই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।এদিকে কেন্দ্রীয় জু অথরিটির তরফেও রাজ্য বন দফতরের কাছে একাধিক নির্দেশিকা এসে পৌঁছেছে। বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘নিউ ইয়র্কের ঘটনার খবর পেয়ে নয়, আমরা ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সতর্ক হয়েছিলাম।
মার্চ মাসের ১৭ তারিখ থেকে রাজ্যের সমস্ত চিড়িয়াখানায় দর্শকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিলাম। মাস্ক পরতে বলেছিলাম কর্মীদের। কিন্তু এখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের শরীর থেকে করোনাভাইরাস পৌঁছচ্ছে পশুদের শরীরেও। তাই আজ থেকে কিছু বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে।’
ঠিক হয়েছে যে সকল কর্মী সরাসরি পশু পাখিদের সংস্পর্শে আসেন, তারা পিপিই পড়ে খাঁচার ভেতর প্রবেশ করবেন। খাবার দিতে হোক বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য হোক সব সময় পড়তে হবে এই বিশেষ পোশাক। খাঁচায় ঢোকার সময় পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট মেশানো জলে জুতো ডুবিয়ে প্রবেশ করতে হবে।
পশুপাখিদের নাইট শেল্টার গুলিকে দিনে দু’বার করে কীটনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। যে খাবার বাঘ সিংহদের দেওয়া হচ্ছে সেগুলো দেওয়ার আগে চিড়িয়াখানার ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখছেন।
আলিপুর চিড়িয়াখানা হাসপাতালেও দিনে দু’বার করে স্যানিটাইজ করা হচ্ছে।কর্মী এবং বাঘ-সিংহের শরীরের তাপমাত্রা নিয়মিত মাপার জন্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের হাতে ‘থার্মাল গান’ পৌঁছে যাবে বলে খবর।
বন দফতর সূত্রে খবর, আলিপুর রাজ্যের বৃহত্তম চিড়িয়াখানা বলে একেই মডেল হিসেবে বেছে নেওয়া হচ্ছে। বাকি চিড়িয়াখানাগুলির মধ্যে দার্জিলিঙের পদ্মজা নায়ডু এবং শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে বেঙ্গল সাফারি পার্ককেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
পশু প্রানীদের মধ্যে কোনও রকম অস্বাভাবিক আচার-আচরণ চোখে পড়লেই সঙ্গে সঙ্গে তাদের আলাদা ভাবে অন্য খাঁচায় রেখে পরীক্ষা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন পড়লে দ্রুত রাজ্য বন দফতরকে জানাতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584