শরীয়তুল্লাহ সোহন, ওয়েব ডেস্কঃ
রাজনৈতিক মহলে নানা দিক থেকে বিজেপি বিরোধী জোটে কংগ্রেসের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিভিন্ন প্রথম সারির রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। অন্যদিকে কংগ্রেস জেরবার হয়ে আছে দলীয় কোন্দলে। “জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ”.. এমন ঘোর অবস্থার মধ্যে দিয়ে দল চলছে। একে একে চারিদিক থেকে দলত্যাগ করছে বিভিন্ন বর্ষীয়ান নেতা-নেত্রীরা । সবথেকে বেশি ভাঙন দেখা গিয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যে গুলিতে। মেঘালয়ের একসাথে ১২ জন বিধায়ক কংগ্রেস ত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করে এক বিশাল আকারের ধাক্কা দেন দলকে। সেই ধাক্কা সামলে উঠার আগেই পুনরায় দলত্যাগের ধাক্কায় কেঁপে উঠল কংগ্রেসের অন্দরমহল।

এবার দলত্যাগ করলেন মিজোরামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি লাল থানহাওলা। বহু টালবাহানার অবশেষে দলত্যাগ করলেন ৮০ বছরের প্রবীণ, বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতা।
মিজোরামে কংগ্রেসের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার অন্যতম কান্ডারি ছিলেন এই বর্ষীয়ান নেতা। এককথায় বলতে গেলে মিজোরামে কংগ্রেসের প্রতিচ্ছবি ছিলেন লাল থানহাওলা। দীর্ঘদিন উত্তর পূর্বাঞ্চলে একাধারে কংগ্রেস দলটিকে সামলেছেন তিনি। পাঁচ দফায় অর্থাৎ ২৫ বছরের রাজনৈতিক প্লটে তিনি ২২ বছরেরও অধিক সময় ধরে মিজোরামের মূখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এছাড়াও প্রায় পাঁচ দশক ধরে মিজোরাম কংগ্রেসের প্রধান ছিলেন তিনি । গান্ধী পরিবারের অন্দরমহলে তাঁর সখ্যতা ও ঘনিষ্ঠতা ছিল দারুণ। ১৯৭৩ সালে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে তিনি প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন।
কংগ্রেস দলের বিশেষ সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, “সপ্তাহ তিনেক আগে তিনি বয়সের অজুহাত দেখিয়ে নতুনদেরকে জায়গা দেওয়ার জন্য কংগ্রেস দলের সুপ্রিমো সোনিয়া গান্ধীকে পদত্যাগপত্র পাঠান।” তবে তিনি যতই নতুনদের জায়গা ছাড়ার নাম করে পদত্যাগ পাঠান না কেন, তিনি যে এখনই রাজনীতিতে সন্ন্যাস নিচ্ছেন না, তা তাঁর সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যে প্রমাণ মেলে। সেটা আগে ভাগে বুঝতে পেরে কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে সোনিয়া গান্ধী প্রথম পর্যায়ে তাঁর পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেনি। জরুরি তলব করে ব্যক্তিগত ভাবে একান্তে সাক্ষাৎ করেন তিনি। কংগ্রেসের শীর্ষ স্থানীয় কার্যকর সমিতিতে তাকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেন। এতেও চিড়ে ভিজেনি দেখে অবশেষে গত শনিবার দলের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠিয়ে পদত্যাগ মেনে নেন কংগ্রেস।
আরও পড়ুনঃ কৃষকদের একাধিক দাবি নিয়ে সরকারের সাথে আলোচনায় বসতে কৃষক নেতাদের ফোন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
রাজনৈতিক বিশেজ্ঞ প্যানেল যদিও লাল থানহাওলার দলত্যাগে অন্যরকম গন্ধ পাচ্ছেন। কারণ বেশ কিছু দিন আগে বয়সের অজুহাত দেখিয়ে একইভাবে দলত্যাগ করেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরো। দলত্যাগের কিছু দিনের মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। লাল থানহাওলা কি একই পথে হাটবে! এই প্রশ্ন ঘুরছে রাজনৈতিক অন্দরমহলে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584