পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
বিশ্বভারতীর পৌষ মেলার মাঠ ঘেরার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে মাঠ বাঁচাও কমিটি, জানিয়েছেন বোলপুর ব্যাবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ সুব্রত ভকত। অথচ বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আদর্শ ও স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দিয়ে মেলার মাঠ ঘিরে ফেলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
পাঁচিলের বিরোধিতা করে বহু মানুষ বিশ্বভারতীকে আবেদন করেছে নানা রকম ভাবে। কিন্তু উপাচার্য কোন বিষয়ে কর্ণপাত করার প্রয়োজন মনে করেননি। কারণ মাথার উপর আছে গুরু পদ্মপাল। গুরু-শিষ্যের মাথার ওপর আছে বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্বভারতীর আচার্য গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর উদাহরণ দেন। এখানেই প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বভারতীর একাধিক আশ্রমিক ও প্রাক্তনীরা।
তাদের বক্তব্য, কথায় কথায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুরুদেবের বিভিন্ন আদর্শের কথা দেশবাসীকে মনে করান। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তিনি নিজেই গুরুদেবের কোন আদর্শকে সম্মান দেন না। প্রকৃষ্ট উদাহরণ, পৌষ মেলার মাঠ ঘিরে ফেলার বিষয় নিয়ে আচার্য হস্তক্ষেপ বারবার চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনিও আশ্চর্যজনকভাবে নির্বাক থেকেছেন।
আরও পড়ুনঃ প্রশাসনকে শাস্তি দেওয়ার হুঁশিয়ারি লকেটের
দিনের-পর-দিন মানুষ উপাচার্যের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে রাস্তায় নেমেছে আন্দোলনে সেই দৃশ্য সংবাদমাধ্যমে নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে। তবুও তিনি চুপ থেকেছেন। এখান থেকেই বোঝা যাচ্ছে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর এত দুঃসাহস পাচ্ছেন কিভাবে।
পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত জানিয়েছেন, জাতীয় পরিবেশ আদালত মেলার মাঠ ঘেরা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে যে নির্দেশিকা দিয়েছে তার সঠিক প্রয়োগ বিশ্বভারতী করছে না। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আশ্রমিক সুবোধ মিত্র জানিয়েছেন, এভাবে বিশ্বভারতী ভাবাবেগে কোন উপাচার্য আঘাত হেনেছে বলে মনে পড়ছে না। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী যা করছেন, তা শুধু গুরুদেব কে অপমান নয় সমগ্র বাঙালি জাতিকে তিনি নিচু দেখানোর চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুনঃ তমলুকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ সহ-সভাপতির
আসলে এইসব কাজকর্ম করে বিজেপির চোখে ভালো সাজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ভবিষ্যতে বড় কোনো পদ পাওয়ার জন্য। যেভাবে অধ্যাপক দের উপর বিভিন্ন রকমের স্বৈরাচারী মূলক আচরণ করছে উপাচার্য তাতে প্রবীন প্রাক্তনীরাও মেলার মাঠ ঘেরা নিয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে রীতিমত ভয় পাচ্ছেন।
তাদের আশঙ্কা নানা ধরনের মামলায় তাদেরকে জড়িয়ে দিয়ে পেনশন বন্ধ করে দিতে একটুও ভাববেননা উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাদের সামনে জ্বলন্ত উদাহরণ বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজ কলি সেন। তাকে যেভাবে হেনস্থা পড়েছে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আপাতত অনেকেই সরাসরি মেলার মাঠ সংক্রান্ত বিষয়ে মুখ বন্ধ রেখে সুপ্রিমকোর্টের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584