‘ক্ষমাহীন অপরাধ’ আখ্যা, আটচল্লিশ হাজার বাসকর্মী বরখাস্ত তেলেঙ্গনায়

0
80

ওয়েবডেস্ক, নিউজফ্রন্টঃ

সংগৃহীত চিত্র

তেলেঙ্গানা সরকার রবিবার (৬ই অক্টোবর) ‘সড়ক পরিবহন নিগমে’র ধর্মঘটে সামিল হওয়া কর্মীদের মধ্যে প্রায় ৪৮০০০ কর্মীকে বরখাস্ত করেছে। অনির্দিষ্ট কালের জন্য ডাকা এই ধর্মঘটকে মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও ‘ক্ষমাহীন অপরাধ’ বলে অবিহিত করেছেন।

ধর্মঘট তুলে নেওয়ার জন্য সরকার শনিবার সন্ধ্যে ৬ টা পর্যন্ত সময় দিয়েছিল তবে দু’ দিন ধরে লাগাতার সামিল হওয়া ধর্মঘটি কর্মীরা সরকারের সেই আবেদন নস্যাৎ করে দিয়েছে।

সংগৃহীত চিত্র

বরখাস্ত হওয়া কর্মীদের সঙ্গে কোন সামঝোতা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি এই ধর্মঘটের বিরোধিতা করে বলেন,’’ এই উৎসবের সময়ে ধর্মঘট ডেকে ওরা ক্ষমাহীন অপরাধ করেছে। বিশেষ করে এই মুহূর্তে যেখানে তেলেঙ্গানা সড়ক পরিবহন নিগমের প্রায় ১২০০ কোটি টাকার ক্ষতি শুধু নয় মাথার ওপর প্রায় ৫০০০ কোটি টাকার দেনা রয়েছে,’।

চন্দ্রশেখর রাও। সংগৃহীত চিত্র

২৬টি দাবী নিয়ে তেলেঙ্গানা ‘সড়ক পরিবহন নিগমে’র স্থায়ী এবং অস্থায়ী কর্মীরা শুক্রবার (৪ অক্টোবর ) থেকে লাগাতার ধর্মঘটে সামিল হয়েছে। এই ২৬ টির মধ্যে মুখ্য দাবি, পরিবহন নিগমকে সরকারী সংস্থায় পরিবর্তিত করতে হবে যাতে তারা সবাই সরকারী কর্মী হিসেবে নথিভুক্ত হতে পারে এবং যাবতীয় সরকারী সুযোগ সুবিধা পেতে পারে।

এই ধর্মঘটের ফলে উৎসবের সময়ে বহু সংখ্যক বাস রাস্তায় না নামার ফলে যাত্রীদের প্রভূত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উৎসবের জনজোয়ারের ধাক্কা সামলাতে রাজ্য সরকারকে আলাদা করে বাইরে থেকে ২৫০০ বাস ভাড়া নিতে হয়েছে।

আরো ৪১১৪ টি বাসকে রাজ্য সরকার অনুমতি দিয়ে নিগমের আওতা ভুক্ত করবে এবং আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই তা কার্যকর করা হবে বলে ঘোষনা করা হয়েছে।

তেলেঙ্গানা আদালত আগামী ১০ই অক্টোবর বৃহষ্পতিবার পর্যন্ত রাজ্য সরকারকে সময় দিয়েছে এই অবস্থার ব্যাখ্যা প্রদান করার জন্য।

এই ধর্মঘটের মধ্যে যাত্রীদের সমস্যামুক্ত পরিষেবা দেবার কী বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বা হবে তাও জানতে চেয়েছে আদালত।

প্রত্যেক দিন প্রায় এক কোটি যাত্রী এই পরিবহন ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। সংবাদ সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী যাত্রীদের বক্তব্য, ‘বেসরকারী চালকদের ভাড়া করেছে সরকার। যাত্রীদেরকে কোন টিকিট দেওয়া হচ্ছে না যেহেতু ডিপো আধিকারিকরা সবাই ধর্মঘট করছে উপরন্তু এই বেসরকারী বাসের কন্ডাক্টররা অস্বাভাবিক ভাড়া দাবী করছে যেহেতু তাদের কোন নিয়ম মানার দায় নেই।‘

রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোন ভাবেই পরিবহন নিগম সম্পৃক্ত হবে না যেমন হয়েছে অন্ধ্র প্রদেশে, এমনটা খুব পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন তেলেঙ্গানার মুখ্য মন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও। তিনি আরও বলেছেন, যে সরকার নিগম কর্মীদের কোন রকম বেনিয়ম এবং হুমকিকে বরদাস্ত করবেনা। এই মুহূর্তে অবশিষ্ট ১২০০ কর্মী দিয়েই নিগমের কাজ চালু থাকবে এবং পাশাপাশি নতুন কর্মী নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে তবে তা হবে শর্ত সাপেক্ষ। তাদের মুচলেকা দিতে হবে যে তারা কোন রকম শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হবে না।

স্বাভাবিক ভাবেই বিরোধী দল বিজেপি তেলেঙ্গানা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এসেছে। তারা বরখাস্ত হওয়া কর্মীদের দাবি দাওয়াকে সর্বান্তকরণে সমর্থন করছে। এই অব্যবস্থার জন্য সরাসরি তেলেঙ্গানা সরকার কে দায়ী করেছে।

প্রশ্ন তুলেছে যে তেলেঙ্গানা আন্দোলনে যারা সব চেয়ে বেশী সক্রিয় ছিল তাদের জন্য কী এটাই সরকারী পুরষ্কার? ধর্মঘটের মত পদক্ষেপ নেবার পূর্বে সড়ক পরিবহন নিগমের জয়েন্ট অ্যাকশান কমিটির নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করেন নি মুখ্যমন্ত্রী।

মুখোমুখি বসে সমস্যার সমাধান সূত্র না খুঁজে তাকে ইন্ধন দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনের কাজ করেছে এই মর্মে প্রকাশ্য সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ এনেছে বিজেপি নেতারা।

সাবধান করে দিয়েছে যদি সরকার কর্মী বরখাস্তের মত অনৈতিক এবং অবৈধ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা ও পরিবর্তন না করে তবে এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হবে।

এখন এটাই দেখার চন্দ্রশেখর রাও তার ঘোষনা বলবৎ রাখবে নাকি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য অন্য কোন বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here