নিজস্ব প্রতিবেদক,কলকাতাঃ
আজ জিকেসিআইইটি’র প্রতারিত ছাত্রছাত্রীরা সহ প্রায় পাঁচশোজনের স্বতঃস্ফূর্ত এবং প্রাণবন্ত এক মিছিল প্রত্যক্ষ করল মহানগরী। মিছিলের পর রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সাথে পূর্বনির্ধারিত দেখা করা।
সাইন, সুজন, নাজমুল, সাদিক,রাজ-রা যখন “হয় বৈধ সার্টিফিকেট নিয়ে ফিরবো,নয় আমাদের লাশ ফিরবে” এই স্লোগান নিয়ে কলকাতায় এলো তখন ওরা কথার ফাঁকে ফাঁকে আড্ডায় বারেবারে বলছিল তারা দূর মালদহে বসে নাকি এটাই জানে যে এ শহর খালি হাতে কাউকে ফেরায় না।আনন্দের শহরকে যে ভালোবাসার শহরও বলে,সেটা তারা তাদের গত একমাসের কঠিন পথচলায় অনুভব করেছে তিলে তিলে।
এই সেদিনই সাইন বলছিল যে “জানো? এতদিন অবদি এটাই জানতাম যে বন্যাদুর্গত বা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে মানুষ টাকাপয়সা দিয়ে পাশে দাঁড়ায়।মানে চোখের সামনে সেরকমই দেখে এসেছি এখনও অব্দি। কিন্তু এভাবে এতটা সক্রিয়ভাবে টাকাপয়সা, ভাত-জল-বিস্কুট, পরামর্শ,রাতে একসাথে থাকা ইত্যাদি নানাভাবে একটা এরকম কিছু অচেনা ছেলেমেয়ের আন্দোলনের পাশে যে মানুষ দাঁড়ায়,এইটা দেখেই জীবনে কিছু একটা অবিশ্বাস্য প্রত্যক্ষ করলাম মনে হল।ন্যায্য লড়াইয়ের পাশে এভাবে মানুষ দিনের পর দিন দাঁড়ায় সেটার উত্তাপ নেওয়াটাই কলকাতা আসার অন্যতম সেরা প্রাপ্তি হয়ে রইল। আন্দোলন যেখানে গিয়েই শেষ হোক না কেন,এই ভালোবাসা কোনোদিন ভুলতে পারবো না…” আরো কিসব বলছিল সবটা খেয়ালও নেই।
যাই হোক না কেন, এমন নাছোড়বান্দা আন্দোলনের চাপে পড়ে গতকাল এমএইচআরডি গেজেটেড নোটিফিকেশন দিয়ে স্বীকার করেছে যে সাইনদের প্রথম দু’বছরের ডিগ্রী উচ্চমাধ্যমিক সমতুল, পরের দু’বছর ডিপ্লোমার আর শেষ দু’বছর বি.টেকের। এটাই এতদিন এমএইচআরডি স্বীকার করেনি।কিন্তু এখনও যেটা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকছে সেটা হল কে কবে দেবে এই ডিগ্রী আর হায়ার এডুকেশনে ভর্তির ক্ষেত্রে এই নোটিফিকেশন গ্রাহ্য হবে তো?এই বিষয় দুটি তারা আজ রাজ্যপালকে জানিয়েওছে। রাজ্যপাল দেখবেন বলে জানিয়েছেন! যদিও সুজন আজ বলছিল যে “সরকার-প্রশাসন-কর্তৃপক্ষ সেই তিনবছর ধরে দেখেই চলেছে, দূরবীণ এদের বড়ই দুর্বল।“
এটা মাথায় রেখে কাল তারা ম্যাকাউট যাবে। সকাল ১১টায়।
দেখা যাক কি হয়!
আরেকটা ব্যাপার হল যে, আমাদের পাশে দাঁড়ানোয় সাইনরা খুব আপ্লুত।বলছিল যে “আসলে তো প্রতারিত আমরা সবাই।নানাভাবে,নান দিক থেকে।আসলে এটা আমাদের সকলেরই আন্দোলন। প্রতারকদের বিরুদ্ধে। সরকারি উদাসীনতার বিরুদ্ধে।তোমরা যেভাবে পাশে থাকছো, তারপর আজকে এলে সেটার জন্য ধন্যবাদ। যারা এসেছো আর যাদের জানিয়েছিলে কিন্তু এসে উঠতে পারলো না নানা কারণে তাদেরও জানিয়ে দিও যে আমরা সবসময় পাশে আছি তোমাদের। যে কোনো দরকারে।তা সে কলেজগত হোক বা পার্সোনাল।মালদহের এই ছেলেমেয়েদের সবসময় পাশে পাবে-এই বলে দিলাম। আন্দোলন করতে করতেই আমরা শিখছি জানছি দেখছি যে কেউই আসলে আমরা নিরাপদ নই।আজ আমরা লড়ছি,বন্ধু কাল হয়তো তোমাকেও লড়তে হবে।তোমার আমার এই লড়াই একসাথেই লড়ব।সবার জন্য একটা সুন্দর নিরাপদ জীবন আমরা গড়ে নেবো একসাথেই।”
আরো পড়ুনঃ স্ত্রীর বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক,ফেসবুক লাইভে আত্মঘাতী স্বামী
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584