শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সদ্য প্রয়াত রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র ব্যাটেলিয়নের কমান্ডিং অফিসার দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায় তার জীবনকালেই দেখিয়ে দিয়েছিলেন, পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও পুলিশে যথেষ্ট দক্ষতার ছাপ রাখতে পারেন। সামান্য সাব ইনস্পেক্টর থেকে কলকাতা পুলিশের ২ টি থানার মহিলা ওসি হয়ে ডেপুটি কমিশনার হয়েছিলেন তিনি।
আর পুলিশ বাহিনীতে যাতে মহিলাদের গুরুত্ব আরও বাড়ে, তার জন্য নবান্নেও তাদের পুরুষদের সম-পদোন্নতির ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার প্রবেশনে থাকা মহিলা সাব ইন্সপেক্টরদের এবার পোস্টিং হবে সাধারণ থানাতেও। স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে এমনটাই ঘোষণা করা হয়েছে।
এতদিন পর্যন্ত রাজ্যের বেশিরভাগ থানাতেই ছিল পুরুষ পুলিশকর্মীদের আধিপত্য। মহিলাঘটিত কোনও সমস্যা হলে কলকাতা পুলিশের ক্ষেত্রে লালবাজার থেকে এবং রাজ্য পুলি়শে বিভাগীয় দফতর অতিরিক্ত মহিলা বাহিনীকে নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হত।
আরও পড়ুনঃ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ১৫ জানুয়ারি
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাহিনীতে আরও বেশি করে মহিলা পুলিশের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে রাজ্য প্রশাসন। তাই সাধারণ থানা থেকেই যাতে পেশাগতভাবে তাঁরা সব ধরনের কাজ করতে পারেন এবং দক্ষতা অর্জন করতে পারেন, সেই কারণেই জারি এই নির্দেশিকা। এই মর্মে এবং সদ্য নিযুক্ত হওয়া অফিসারদের করণীয় কাজ সম্পর্কেও রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর নির্দেশিকা জারি করেছে।
প্রসঙ্গত, প্রবেশন সময়ে কোনও থানার সঙ্গে যুক্ত না থাকলে সমস্যায় পড়তে হয় পু্লিশকর্মীদের। তদন্ত করতে গিয়ে যেমন আইনের ফাঁক থেকে যায়, ঠিক তেমনই মামলার বিবরণ ও ব্যাখ্যা ঠিকভাবে কেস ডাইরিতে না লেখার ফলে দ্রুত জামিন পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরাও। এদের অপারগতার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা যায়, এই অফিসাররা যখন প্রবেশনে ছিলেন, তখন তাঁদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণে ঘাটতি ছিল।
আরও পড়ুনঃ ভিভিআইপি-দের যাতায়াতে লাইফলাইন তৈরিতে মা ফ্লাইওভারে ৪৫দিনের মধ্যে নতুন হাইট-বার
পুরুষ পুলিশকর্মীরা অনেকে স্পেশাল ব্রাঞ্চে কম চাপ কাটিয়েছেন, সেভাবেই অনেক মহিলা অফিসারও পুরো প্রবেশন পিরিয়ডই কাটিয়ে দিচ্ছেন মহিলা থানায়। এই কারণেই সাধারণ থানা বা ফাঁড়িতে কাজের ধারণা তাঁদের তৈরি হচ্ছে না। সাধারণ থানায় পোস্টিং পেলেই তাঁরা নাজেহাল হচ্ছেন।
তাই সমান-পদোন্নতির সঙ্গে পুরনো পদ্ধতি ঝেড়ে ফেলে সমান ভাবে দক্ষতা তৈরিতে এবার নজর দিল রাজ্য প্রশাসন। রাজনৈতিক মিটিং মিছিলে মহিলাদের অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে মহিলাঘটিত অপরাধের সংখ্যাও রাজ্যে বিপুল পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে।বতাই পুলিসের চাকরিতে যোগ দেওয়া নতুনদের ঝালিয়ে নিতেই এরকম একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পুরুষদের তো বটেই, তার সঙ্গে এবার থেকে নতুন মহিলা পুলিশকর্মীদেরও অপরাধস্থলে নিয়ে যেতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ডিউটি দিতে হবে। সেইসঙ্গে নিয়মিত তাঁদের দিয়ে রাতে পেট্রলিং-এর কাজ করানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কোনও ইউনিটে নয়, দু’বছরের প্রবেশন পিরিয়ডে তাঁদের থানাতেও ডিউটি দিতে হবে। এসপি, ডিআইজি রেঞ্জ এবং কমিশনারেটের সিপিরা তাঁদের কাজের মূল্যায়ন করবেন। অর্থাৎ একেবারে আসল চাকরির মত মূল্যায়ন করা হবে তাঁদের। যাতে ভবিষ্যতে তারা প্রকৃত অর্থে বাহিনীর কাজে আসতে পারেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584