শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
অসহ্য পায়ের যন্ত্রণা, হাসপাতালে দীর্ঘক্ষণ বসে থেকেও বিনা চিকিৎসায় ফেরত আসা, সরকারি হাসপাতালে ‘করোনা-ভয়’ আর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে না পারায় ব্যর্থতা- এই তিনের ফাঁসে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন এক প্রৌঢ়। আর ছেলের আত্মহত্যার কথা শুনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল তার বাবারও। খোদ কলকাতার হরিদেবপুরে ঘটল মর্মান্তিক ঘটনা। একই দিনে দুটি মর্মান্তিক ঘটনায় ভেঙে পড়েছে পরিবার।
আরও পড়ুনঃ নামছে না বেসরকারি বাস, ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে অনড় বাসমালিকদের সংগঠন
পুলিশ জানিয়েছে, ছেলের নাম গোপাল মণ্ডল (৫৯)। বাবার নাম ভূতনাথ মণ্ডল (৮৪)। তারা হরিদেবপুরের ধারাপাড়ার বাসিন্দা। রবিবার সকালে বাড়িরই পরিত্যক্ত ঘর থেকে গোপালবাবুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসা করাতে না পারায় যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পেতে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৫ বছর আগে গোপাল মণ্ডলের জীবনে একটি দুর্ঘটনা ঘটে। ডান পায়ে মারাত্মক চোট পান তিনি। এরপর তাঁর পায়ে প্লেট বসাতে হয়। ইদানীং সেই পায়েই যন্ত্রণা বেড়ে গিয়েছিল তাঁর। শনিবার তাঁকে বেহালা বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যান। অভিযোগ, জরুরি বিভাগে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন তিনি। এরপর ডাক্তার না আসায় তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত খেজুরি
সরকারি হাসপাতালে করোনা সংক্রমণের ভয় ছিল পরিবারের মনে। আর বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মতন আর্থিক অবস্থাও তাঁদের নেই। বাধ্য হয়েই স্ত্রীর হাত ধরে বাড়ি ফিরে আসতে হয় গোপালবাবুকে। এরপর সকলের চোখের আড়ালে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই সব শেষ!
এদিকে ছেলে আত্মহত্যা করেছে জানা মাত্রই অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবা ভূতনাথ মণ্ডল। স্ট্রোক হয়ে মৃত্যু হয়ে তাঁরও। ঘটনায় শোকে মুহ্যমান পরিবার এবং বিস্মিত প্রতিবেশীরা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584