নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
নয়া কৃষি আইন প্রণয়নের আগে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছিল কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে এতদিন ইতিবাচক উত্তরই দিয়ে আসছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। কিন্তু সম্প্রতি এক আরটিআই বিভ্রান্তি বাড়ালো, আরটিআই এর উত্তরে জানা গিয়েছে এই আলোচনা সংক্রান্ত কোনও রেকর্ডই কেন্দ্রের কাছে নেই।
তিন বিতর্কিত কৃষি আইন নিয়ে আজ আবার বৈঠকে কেন্দ্র ও কৃষকরা। এরই মাঝে মঙ্গলবার আরও এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। পাঞ্জাবের বাসিন্দা পিয়ারা সিং তিকরি সীমানায় চার সপ্তাহ ধরে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলেন। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় দীর্ঘদিন অবস্থান বিক্ষোভ করায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন তিনি। গতকাল তাঁর মৃত্যু হয়েছে। একের পর এক কৃষকের মৃত্যু মোদী সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।
আরও পড়ুনঃ বিয়ের নামে ধর্মান্তকরণ নিয়ে মুখ খুললেন রাজনাথ সিং
ষষ্ঠদফার আলোচনার আগে নিজেদের অবস্থানে অনড় মোদী সরকার। সরকার পক্ষের বক্তব্য, কৃষক কল্যাণেই এই কৃষি আইন কার্যকর করা হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে চাষিরা চাইছিলেন এই আইন কার্যকর হোক।
এ নিয়ে কৃষক সংগঠন, মান্ডি আধিকারিকদের সঙ্গে তাঁরা বিভিন্ন সময় আলোচনাও করেছেন। কিন্তু বাস্তবে উল্টো কথাই জানা যাচ্ছে। এই দাবির সমর্থনে কোনও নথি পাওয়া যায়নি। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম গত ১৫ ডিসেম্বর এ নিয়ে আরটিআই করে।
আরও পড়ুনঃ করোনা নিয়ে প্রতিবেদন, মহিলা সাংবাদিককে কারাদন্ড চিনের
জানতে চাওয়া হয়েছিল, কৃষি আইন কার্যকর করার আগে কেন্দ্রীয় সরকার কাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে, কতগুলি বৈঠক হয়েছে, সেই বৈঠক নিয়ে কী কী নথি আছে। উত্তরে কেন্দ্রের তরফে ২২ ডিসেম্বর জানানো হয়, এ ধরণের কোনও বৈঠক নিয়ে কোনও তথ্য তাঁদের কাছে নেই। এই উত্তরের পরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে।
কৃষক- সরকার পাঁচ দফার বৈঠকেও মেলেনি কোনো রফা সূত্র। দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে এক মাসের ওপর আন্দোলন করে চলেছেন দেশের অন্নদাতারা। তা বন্ধ করে বৈঠকে এসে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্র খোঁজার বার্তা দিয়ে কৃষকদের চিঠি দিয়েছিল কেন্দ্র।
আরও পড়ুনঃ শালিমারে তৃণমূল যুব নেতা খুনে গ্রেফতার ৩
যার জবাবে মঙ্গলবার সকাল এগারোটায় আলোচনার কথা জানায় আন্দোলনরত চল্লিশ কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। তাঁরা ও জানিয়ে দেন যে, আলোচনা হবে শুধুমাত্র, তিন কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ বিল প্রত্যা্হার এবং দূষণ ঠেকাতে কেন্দ্রের নতুন আইনে কৃষিক্ষেত্রকে বাদ দেওয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে। যদিও কেন্দ্র জানিয়েছিল যে, বৈঠকে আসতে হবে খোলা মনে, কোনওরকম শর্ত না রেখে। একইসঙ্গে মঙ্গলবার সকাল এগারোটার বদলে বুধবার দুপুর দু’টোয় বৈঠকের কথা বলা হয়।
একদিকে যখন কৃষকরা নিজেদের দাবিতে অনড়, তখন নিজেদের ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত কেন্দ্র। বৈঠকের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা দলের অন্য তম শীর্ষনেতা অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন তোমর এবং পীযুষ গোয়েল। এই বৈঠকে মন্ত্রীরা কী কী কথা বলবেন এবং সরকার কতদূর পর্যন্ত দরাদরি করবে তা ঠিক করে দিয়েছেন মোদী সরকারের চাণক্য, এমনটাই ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584