নিউজফ্রন্টঃ
পশ্চিমবঙ্গে বনধ মানেই সরকারি কর্মীদের নাভিশ্বাস অবস্থা।রাজনীতির দড়ি টানাটানির জাঁতাকলে পিষ্ট সরকারি কর্মীরা। কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার অছিলায় সরকার বাহাদুরের ফরমান কর্মক্ষেত্রে যেতেই হবে, তাতে কর্মক্ষেত্র যতই কর্মশূন্য থাকনা কেন!
সাধারণত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সিংহভাগ বনধের দিন তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পায়। ফলে টিচিং-লার্নিংয়ের মূখ্য উদ্দেশ্যই সাধিত হয়না। অন্যান্য সরকারি অফিসেও অবস্থা একই- সাধারণত উপভোক্তারাও দিনটিকে এড়িয়ে চলে যানবাহন সমস্যা বা ঝামেলা এড়ানোর জন্য। মহিলা কর্মীরা নিরাপত্তা হীনতায় ভোগে।ছেলেরা যেকোন বাহনে উঠে পড়লেও মেয়েদের ক্ষেত্রে সেটি যথেষ্ট অসুবিধার।
তবে যেতে যতই অসুবিধা হোকনা কেন, যতই রাস্তায় যানবাহন চলাচল কম থাকুক বা গন্ডগোলের চান্স থাকুক না কেন, যেতে তো হবেই! প্রয়োজনে আগের দিনই কর্মক্ষেত্রে পৌঁছে যেতে হবে বা থেকে যেতে হবে,কাজ না থাকলে প্রয়োজনে বন্ধের দিনে চড়ুইভাতি করা যেতে পারে, তবু যেতে কিন্তু হবেই!
আগামী ১০ তারিখ সোমবার কংগ্রেস ও বামেদের ডাকা বনধকে সমর্থন করবে না সরকার। এই মর্মে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থ দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে রাজ্যের সমস্ত সরকারি অফিস ও যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান ‘গ্ৰান্ট ইন এইড’ পায় তাদের কর্মচারীদের আগামী ১০ই সেপ্টেম্বর কোন ক্যাজুয়াল লিভ এমনকি অর্ধদিবস ছুটিও নেওয়া যাবে না। যারা ৭ তারিখ ছুটিতে ছিলেন তাদের ১০ তারিখ রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। তবে ঐ দিন যদি কোন কর্মচারী হাসপাতালে ভর্তি থাকেন, বাড়িতে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, ৭তারিখের আগে থেকেই যদি কেউ খুব অসুস্থ থাকেন অথবা ৭ তারিখের আগে থেকেই কেউ যদি চাইল্ড কেয়ার লিভ, মেটারনিটি লিভ বা মেডিক্যাল লিভে থাকেন- তাহলেই একমাত্র ছুটি মঞ্জুর হবে, নচেৎ বেতন কাটা যাবে।
কোনো কর্মচারী যদি এই নির্দেশিকা অমান্য করেন তাহলে তাকে কারণ দর্শাতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে শরীর খারাপ, যানবাহনের অপ্রতুলতার কারণ গ্ৰহনযোগ্য হবেনা। উপরে উল্লিখিত কারণ ছাড়া অনুপস্থিত থেকে কারণ দর্শাতে না পারলে, সেই সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গেরও দায় চাপাতে পারে সরকার।
কিন্ত প্রশ্ন উঠছে এভাবে জোর করে কি কর্মসংস্কৃতি ফেরানো যায়? না এটা শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারনেই কর্মসংস্কৃতির গল্প, না রাজনীতির দড়ি টানাটানির ফলাফল। এই কর্মীরাই যখন ভোটের ডিউটিতে যায়, তখন সরকার নিরাপত্তা দিতে পারেনা বা দেওয়ার চেষ্টাও করেনা। সেটা আমরা শিক্ষক রাজকুমার বাবুর ক্ষেত্রে দেখেছি। গতকালই আলিপুর দুয়ারে জয়েন্ট বি ডিও সহ সরাকারি আধিকারিকগণ আক্রান্ত হয়েছেন। তাই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠবেই নিরাপত্তাহীনতার।
তবে উপস্থিত হতে বাধ্য করে কর্মসংস্কৃতির উদ্দেশ্য তো সাধিত হচ্ছেই না, বরং দেখা যাচ্ছে সরকার এই বনধের দিনে আসার পুরষ্কার স্বরূপ আরেক দিন ছুটি ঘোষণা করছে- ফলে দুদিন ছুটি হওয়ায় কর্মসংস্কৃতির কৃচ্ছসাধন অবশ্যই হচ্ছে!
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584