নাতিদের আনন্দের কথা ভেবে খোল-করতালের বদলে ডিজে বাজিয়ে দাদুকে দাহ

0
111

পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ

তারস্বরে বাজছে ডিজে বক্স। আর সেই বক্স বাজিয়ে দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এক বৃদ্ধকে। এই ছবি সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বীরভূমের সিউড়িতে।

Grandson playing dj when father in law burning | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কেউ মারা যাওয়ার পর তাকে শব দাহ করতে নিয়ে যাওয়ার সময় খোল করতাল বাজানোর রীতি প্রাচীন কালের। সেই রীতি মানা হয়ে থাকে বর্তমান কালেও। কিন্তু এবার সেই রীতিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ডিজে বক্স বাজিয়ে শব দাহ করতে নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা সামনে এল।ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের সিউড়ি থানার অন্তর্গত আনন্দপুর ডাঙ্গালপাড়ায়।

জানা গিয়েছে, মৃতের নাম শঙ্কর চরণ মাল। ওই এলাকারই বাসিন্দা ছিলেন ৯২ বছর বয়সী শঙ্কর চরণ। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁকে যখন দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন শববাহী গাড়ির সামনে খোল করতালের বদলে ছিল ডিজে বক্স! এমনকি ডিজে বক্সে তারস্বরে বাজতে থাকা গানের সঙ্গে রীতিমতো নাচতে নাচতে যেতে দেখা যায় ওই শববাহী গাড়ির সঙ্গে থাকা শ্মশানযাত্রীদেরও।

Grandson playing dj when father in law burning | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুনঃ রাত বাড়লেই রিজার্ভের নামে যাত্রীর পকেট কাটায় রীতি দুর্গাপুরে

এই ছবি সামনে আসতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধ সরকারি কর্মী ছিলেন। একইসঙ্গে অন্যান্য বিভিন্ন কাজের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। বৃদ্ধের ১০ মেয়ে। তাঁরা প্রত্যেকেই বিয়ের পর ওই এলাকাযতেই বাড়ি তৈরি করে বসবাস করেন।

কিছুদিন আগেই অশীতিপর বৃদ্ধকে অসুস্থ অবস্থায় সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার তেমন কোনও পরিবর্তন না ঘটায়, চিকিৎসকরা রোগীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। এরপরই বুধবার রাতে মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধের।

কিন্তু এভাবে কেন ডিজে বক্স বাজিয়ে শব দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হল? জবাবে বৃদ্ধের জামাই ও এক মেয়ে দাবী করেন, বাবার ১০ মেয়ে, সব সন্তান মিলে ২৪ জন নাতি রয়েছে। তাই ওই নাতিদের একটা আনন্দ তো আছে! গতকাল রাতে আমার শ্বশুরের মৃত্যুর পর ওরাই সিদ্ধান্ত নেয় বক্স বাজিয়ে অন্তিম ক্রিয়া সম্পূর্ণ করার।

তারপরই তারা তিনটি গাড়ি ভাড়া করে ও ডিজে বক্স বাজিয়ে বক্রেশ্বর যায় শেষকৃত্য সম্পূর্ণ করতে।” জামাইয়ের বক্তব্যকে সম্মতি জানিয়ে শঙ্করী চরণ মালের মেয়ের টুলু মালের বক্তব্য, “বাবার অনেক বয়স হয়েছিল।

আর তারপর এমন হওয়ায় সব নাতিরা আনন্দ করার জন্য বক্স বাজিয়ে অন্তিম ক্রিয়া করতে গিয়েছে।নাতি দের আবদার ফেলা গেল না। “প্রিয়জনের মৃত্যু তো শোকের, দুঃখের। সেখানে মৃত্যুতে আনন্দ? বক্স বাজিয়ে শ্মশানযাত্রীদের আনন্দ উৎসব? বিষয় টি নিয়ে নাক কুঁচকেছ প্রতিবেশীরা।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here