শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
সরকারি স্কুলের পঠন পাঠন নিয়ে অনেক গাফিলতির অভিযোগ থাকায় সামর্থ্যমত বেসরকারি স্কুল বেছে নিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু শহর কলকাতায় গত কয়েকদিন ধরেই বেসরকারি স্কুল গুলিতে ফি বৃদ্ধি বা অনলাইন ক্লাসের নামে পূর্ণ পরিষেবার দেওয়ার দাবির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আন্দোলনে সামিল হতে হচ্ছে অভিভাবকদের।
শুক্রবার কলকাতা জুড়ে একসঙ্গে ৪ টি বেসরকারি স্কুলে ফি সংক্রান্ত প্রতিবাদে শামিল হন অভিভাবকরা। জোকা বাকরা হাট দিল্লি পাবলিক স্কুল (ডিপিএস), হরিয়ানা বিদ্যামন্দির স্কুল, অ্যাসেম্বলি অফ গড চার্চ এবং টালিগঞ্জ প্রতাপআদিত্য রোডে জিএসএস গার্লস স্কুলের সামনে এদিন অভিভাবকরা স্কুলের ফি বৃদ্ধি নিয়ে বিক্ষোভ দেখান।
বর্তমানে লকডাউন অবস্থায় পড়ুয়াদের বাড়িতেই অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে স্কুল গুলির পক্ষ থেকে। এমন অবস্থায় ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলের দরজায় পা রাখতে পারছেন না। তবুও তাদের মাসোহারা ফি-র মধ্যে এসি, গ্রাউন্ড ফেসিলিটি, লাইব্রেরি, ইলেকট্রিক সহ আরো অন্যান্য পরিষেবার খরচ শামিল করা হচ্ছে। যা অত্যন্ত অন্যায় বলে মনে করছে বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকরা। তাদের মতে শুধু অনলাইন ক্লাস এর জন্য স্কুলগুলি টিউশন ফি নিক, বাকি মুকুব করুক। কিন্তু লকডাউনের বাহানায় এক পয়সাও স্কুলের ফি মকুব করতে নারাজ স্কুল কর্তৃপক্ষগুলি।
আরও পড়ুনঃ বেহাল রাস্তা মেরামতের দাবিতে দুই পঞ্চায়েত অফিসে বিক্ষোভ স্থানীয়দের
ডিপিএস স্কুলের অভিভাবকদের অভিযোগ, তিনমাস স্কুল না হওয়া সত্বেও স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের কাছে বাসের ফিজ চাইছে। পাশাপাশি মাসিক বেতন ৩১০০ টাকা ছিল সেটা বাড়িয়ে ৩৪০০ টাকা করা হয়েছে। অভিভাবকদের বক্তব্য লকডাউনের ফলে তাঁদের অনেকেরই কোম্পানির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ, সেক্ষেত্রে মাসিক বেতন যেটুকু সেটুকুই তাঁরা দিতে পারবেন, কোনওরকম বাড়তি ও আনুষঙ্গিক ফিজ তাঁরা দিতে পারবেন না।
এদিন সকালে দিল্লি পাবলিক স্কুলের সামনে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ এখনও এবিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনও কথা বলেনি।
অন্যদিকে, হরিয়ানা বিদ্যামন্দির স্কুলের অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলের তরফে নাকি নোটিস জারি করা হয়েছে, ৩০ জুনের মধ্যে স্কুলের আনুষঙ্গিক ফিজ না দিলে ১০০০ টাকা করে ফাইন করা হবে।অভিভাবকদের বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্কুলের টিউশন ফিজ তাঁরা দিতে পারবেন, অন্যান্য খরচ দেওয়ার ক্ষমতা তাঁদের নেই।
এই প্রতিবাদে প্ল্যাকার্ড হাতে এদিন স্কুল গেটের সামনেই বিক্ষোভ দেখান তাঁরা ।
প্রথম দিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ গার্জিয়ানদের কথা শুনতে চাইনি অবশেষে ৩ জনের প্রতিনিধি দলকে ভেতরে ডেকে পাঠায়। অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের বৈঠক হলেও কিন্তু কোনও মীমাংসা হয়নি।
আরও পড়ুনঃ চিনের প্রেসিডেন্টের কুশপুতুল দাহ করে, তিনদিনের মাথায় শ্রাদ্ধ করলো বিজেপি
অন্যদিকে, টালিগঞ্জ প্রতাপআদিত্য রোডে জিএসএস গার্লস স্কুলের সামনে অভিভাবকদের বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন অভিভাবকরা। এখানেও মূলত ফি বৃদ্ধি নিয়ে বিক্ষোভ। অভিভাবকদের বক্তব্য, শুধুমাত্র মাসিক টিউশন ফি ছাড়া বর্ধিত কোনও টাকা ও পাশাপাশি আনুষঙ্গিক কোন টাকা-পয়সা তারা দেবে না।
এই নিয়ে স্কুলের সামনে সকাল থেকে বিক্ষোভ চলে। একইভাবে অনৈতিক ভাবে ফি আদায়ের অভিযোগ অ্যাসেম্বলি অফ গড চার্চ স্কুলের বিরুদ্ধে ও সরব হয় অভিভাবকরা। স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হলেও পাওয়া যায়নি সদুত্তর। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায় ২০ শতাংশের বেশি ছাড় দেওয়া যাবে না। এরপরই স্কুলের সামনের পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584