মোহনা বিশ্বাস, হুগলীঃ
দুর্গাপুজো, কালীপুজোর মতোই করোনা বিধি মেনে শুভারম্ভ হয়েছে জগদ্ধাত্রী পুজোর। প্রতিবছরের মতো পুজোর সেই জৌলুস এবছর থাকছে না। আর এতেই মন ভাল নেই আলোর শহর চন্দনগরের। এই শহরে জগদ্ধাত্রী পুজোর রীতি ৩০০ বছরের বেশি পুরনো।
কৃষ্ণনগরের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় বাংলায় জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করলেও চন্দননগরের পুজোর জৌলুসই আলাদা। প্রতিমার উচ্চতা ২০-২৫ ফুট হয়। সঙ্গে মানানসই চালচিত্র ও ডাকের সাজ। আর সব থেকে বড় কথা মন মাতানো, চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা।
কিন্তু এ বার করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক কিছুই হবে পরিমিত। মন্ডপে মন্ডপে থাকবে স্যানিটাইজার, মাস্ক। আজ, শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে করোনা বিধি মেনে তৈরি করা নির্দেশাবলী প্রকাশ করলেন চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ সাউ।
চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির এই গাইডলাইনে বলা হয়েছে,
১) তিন দিক খোলা পুজো মন্ডপ নির্মাণ করতে হবে।
২) সহজ ও সুষ্ঠভাবে গাড়ি চালানোর জন্য চওড়া পথ রেখে পুজোমন্ডপ নির্মাণ করতে হবে।
৩) পুজো মন্ডপে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।
৪) প্রত্যেক পুজো মন্ডপে প্রথম দিন থেকে প্রতিমা বিসর্জনের দিন পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা পাহারার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ফালাকাটায় সাড়ম্বরে উদযাপিত ছটপুজো
৫) প্রতিটি পুজো মন্ডপের সমস্ত খোলা দিকগুলি থেকে ৫ মিটার ব্যবধান পর্যন্ত এলাকা ‘প্রবেশ নিষেধ অঞ্চল বা নো এন্ট্রি জোন রূপে চিহ্নিত থাকবে। একমাত্র ঢাকিরা মন্ডপ সহ প্রবেশ নিষেধ অঞ্চলে অবাধ যাতায়াত করতে পারবেন, এবং এই ব্যতিক্রম ছাড়া ৫ মিটার ঘোষিত প্রবেশ নিষেধ এলাকা সর্বদা সর্বদা ফাঁকা রাখতে হবে।
৬) পুজো মন্ডপ ও সংলগ্ন স্থানে স্যানিটাইজার, মাস্ক ও শারীরিক দূরত্ব বিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
৭) জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি কর্তৃক কোনো মেলা বসানো যাবে না।
৮) আয়তনে ছোটো মন্ডপগুলিতে যেখানে মঞ্চ ছাড়া মোট ১৫০ বর্গমিটার এলাকা সেখানে একসাথে মোট ১০ জন ব্যক্তি থাকতে পারবেন। ১৫০ বর্গমিটার থেকে ৩০০ বর্গমিটার পর্যন্ত একসাথে মোট ১৫ জন ব্যক্তি থাকতে পারবেন। ৩০০ বর্গমিটারের উর্ধ্বে একসাথে ৪৫ জন ব্যক্তি অবস্থান করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ কুলপিতে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ মহিলাদের
এবছর চন্দননগরে মোট ১৭১ টি জগদ্ধাত্রী পুজোর মধ্যে ১৪ টি পুজো কমিটি প্রতিমা বিহীন ঘটপুজো করছে। ১৫৭ টি পুজো কমিটি প্রতিমা পুজো করবেন। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিধি মেনে পুজোর নির্দেশ মেনে হাইকোর্টের গাইড লাইন মেনেই চন্দননগরে এবছর জগদ্ধাত্রী পুজো উদযাপন হবে। ২০২০ সালে ১০ টি জগদ্ধাত্রী পুজো ৫০ বর্ষ পূর্ণ করলেও এবছর করোনা পরিস্থিতির কারণে জুবিলি বর্ষ উদযাপন করছে না পুজো কমিটিগুলি।
আরও পড়ুনঃ আদালতের নিষেধ সত্ত্বেও রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো করার দাবিতে বিক্ষোভ
তবে পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে তাহলে ২০২০ সালের জুবিলি উদযাপন করবে পুজো কমিটিগুলি। সবমিলিয়ে এবারের খানিকটা ভারাক্রান্ত মনেই জগদ্ধাত্রী পুজো কাটাবেন চন্দননগরবাসী।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584