শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
লকডাউন কেটে যাওয়ার পরে এবার দেশে শুরু হয়েছে আনলক পর্ব। ঘরে বসে কাজ করলেও বাইরে না বেরোতে পারায় শরীরের ওজন বৃদ্ধি হয়েছে অনেকেরই। কিন্তু আনলক প্রথম ফেজে হোটেল-রেস্তোরাঁ-শপিং মলের ঝাঁপ খুললেও, জিমের দরজা এখনও বন্ধ।
এদিকে মানুষকে শরীরচর্চায় সাহায্য করাও পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু এখনও জিমের দরজা খোলার অনুমতি না পাওয়ায় চূড়ান্ত অনিশ্চয়তায় জিম মালিকরা। জিম খোলার ইতিমধ্যেই তারা রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের মত সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে যেখানে সামাজিক দূরত্বের নিদান দিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, সেখানে শরীরচর্চায় সাহায্য করতে কিছুটা কাছে আসতেই হয় জিম-ট্রেনারদের। তাই আনলক ফেজ ১ ঘোষণা করেও প্রথম পর্যায়ে জিম নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি নবান্ন থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
আরও পড়ুনঃ বাড়ছে সংক্রমণ, জীবাণুমুক্ত হল থানা-গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস
কিন্তু জিম চালিয়ে, শরীরচর্চার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ঠিকঠাক রেখে এবং মানুষকে ট্রেনিং দিয়েও আয় হত বহু মানুষের। কিন্তু প্রায় তিনমাস হতে চলল কোনও আয় নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি যাতে নষ্ট না হয়, তার জন্য খরচ চালু রাখতেই হয়েছে। তাই সব মিলিয়ে বেহাল দশায় জিম মালিকরা।
কসবা এলাকার এক মাল্টিজিমের কর্ণধার সঞ্জয় রায় বলেন, ‘ ২ মাস ধরে বাড়িভাড়া ও বিদ্যুতের বিল বাবদ প্রচুর টাকা দিতে হচ্ছে মাসে। যন্ত্রপাতিগুলো ঠিক রাখতে খরচ হচ্ছে। আয় না থাকাতেও জমা টাকা থেকেই কর্মীদের অল্প করে বেতন দিয়েছি।
জিমের ক্ষেত্রে সরকারের ভেবে দেখা উচিত।’ আরেক জিম ট্রেনার সমীরণ সরকার বলেন, ‘প্রথম মাসে মাইনে পাওয়ার পর বেতন নেই। এই রোজগার থেকেই সংসার চলে। ইতিমধ্যেই সাহায্যের জন্য হাত পেতেছি। ত্রাণের চাল, ডাল নিতে হচ্ছে।’ জিমে ঘাম ঝরালে বাড়বে প্রতিরোধ ক্ষমতা। বাড়বে আত্মবিশ্বাস, সুস্থ থাকবে শরীর। তা দিয়েই ঠেকানো যাবে করোনা। তাই সরকারের উচিত অবিলম্বে জিম খোলা, এমনই মত জিম কর্তৃপক্ষগুলির।
মানিকতলা এলাকার এক মাল্টি জিমের কর্ণধার সুদীপ্ত চৌধুরী বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই কী করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জিম করা যায় তার একটা গাইডলাইন করেছি। জীবাণুমুক্ত করার পাশাপাশি মাস্ক বাধ্যতামূলক। প্রত্যেকের থার্মাল স্ক্যানিং হবে।
আরও পড়ুনঃ করোনা রুখতে পূজা দিনহাটায়, উদ্যোগী স্থানীয়রা
৪-৫ জন করে একেকটা গ্রুপে ভাগ করে শুরু করা যেতে পারে। প্রয়োজনে সরকার আরও যদি কোনও গাইডলাইন দেয়, আমরা সেটাও মানতে তৈরি। তবে অনুরোধ সরকার আমাদের শিল্প নিয়ে একটু ভাবনা-চিন্তা করুক।”
প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, জিমে ঢোকার আগেই হবে থার্মাল স্ক্রিনিং। হাতে দেওয়া হবে স্যানিটাইজার। তারপর দূরত্ববিধি মেনে হবে শরীরচর্চা। সংক্রমণ ঠেকাতে কী কী করা হবে, তার একটা তালিকাও তৈরি করার পাশাপাশি ভিডিও তৈরি করে রেখেছে জিম কর্তৃপক্ষগুলি। সরকার তাদের পরিকল্পনা জানতে চাইলে তারা সেটা দেখাতেও পারবেন।
কিন্তু এবার তাদের পেশার বিষয়েও ভাবুক সরকার, এমনটাই ভাবছেন জিম মালিকরা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584