শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
করোনার সময়েও যাতে কোনও রোগীকে হাসপাতাল থেকে ফিরতে না হয়, তার জন্য ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ ঠিক করে দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। তার পরেও মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত পর পর দু’বার সন্তানসম্ভবা এক মহিলাকে ফিরিয়ে দিল হাজরা শিশুসদন হাসপাতাল।
তৃতীয়বার হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই গড়িয়াহাট মোড়ে অটোতেই পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন গৃহবধূ। এরপর গড়িয়াহাট থানার পুলিশ এসে মা ও সন্তানকে বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করায়। তবে হাসপাতালের এই ভূমিকা মানবিকতা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন তুলেছে ।
জানা গিয়েছে, কসবার বাসিন্দা সর্বানী সর্দার মঙ্গলবার রাতে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাজরার শিশু সদন হাসপাতালে যান। কারণ সেখানেই তাঁর কার্ড করা ছিল। অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই সময় তাঁকে ভর্তি না নিয়ে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এদিকে কার্ড করা থাকায় অন্য হাসপাতালে যেতেও পারছিলেন না। রাতে আরও বেশি প্রসব যন্ত্রণা হলে সহ্য করতে না পেরে ভোর ৪ টে নাগাদ সর্বানীকে ফের হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, সেই সময়ও তাঁকে ৪ ঘণ্টা হাসপাতালে ফেলে রাখা হয়। তার প্রাথমিক ভাবে দেখে বেড নেই বলে তাঁকে বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
আরও পড়ুনঃ গ্রিন,অরেঞ্জ জোনে সোমবার থেকে শিথিল লকডাউন, চলবে বাস, খুলবে দোকান
কিন্তু এবার প্রচন্ড যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন সর্বাণী। ফের একবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু এবার রাস্তাতেই অটোর মধ্যে সন্তান প্রসব করেন সর্বানী। পরিবারের সদস্যরা ১০০ ডায়াল করে লালবাজারে ফোন করেন। লালবাজারের তরফে গড়িয়াহাট থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর পুলিশ গিয়ে মা ও সন্তানকে নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়ে দেয়।জানা গিয়েছে, মা ও সন্তান দুজনেই ভালো রয়েছে।
কিন্তু এরকম জরুরি রোগীকে কেন ফিরিয়ে দিল হাসপাতাল? যেখানে তারা নিজেরাই চেকিং করার পর জানতেন, রোগী কি অবস্থায় রয়েছে? হাজরার শিশু সদন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘করোনা পরিস্থিতিতে চাপ বেশি, চিকিৎসক কম। তাই প্রসূতিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’ যদিও এভাবে দায়সারা বক্তব্য দিয়ে হাসপাতাল দায় এড়াতে পারে না, বলে অভিযোগ তুলেছেন সর্বাণীর পরিবারের লোকজন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584