শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
লকডাউন শুরু হওয়ার ৪৬ দিন পর অবশেষে শিশুদের টিকাকরণ শুরু করার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিল স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার থেকেই গর্ভবতী মহিলা এবং শিশুদের প্রয়োজনীয় টিকাকরণ এ রাজ্যে ফের চালু করা হচ্ছে। এই বিষয়ে ২৪ ও ২৮ এপ্রিল, ২০২০ জারি হওয়া কেন্দ্রীয় সরকারি নির্দেশ অনুসরণ করবে রাজ্য সরকার। এটা শুধু জনসংখ্যা ধরে রাখাই নয়, একই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে মৃত্যুহার কমাতে সাহায্য করবে।
বুধবার রাতে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জারি হওয়া ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে, হটস্পট জোন (রেড জোন), নন-হটস্পট জোন (অরেঞ্জ জোন) এবং নন-ইনফেক্টেটেড জোন (গ্রিন জোন)। হটস্পট ও নন-হটস্পট এলাকার মধ্যে আবার তিন ভাগে ভাগ রয়েছে, কনটেনমেন্ট জোন, বাফার জোন এবং বাফার জোনের বাইরের এলাকা। এই সমস্ত এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং সমস্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে ভ্যাক্সিন চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে কিছু এলাকায় বিশেষ কিছু নিয়ম মানতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হটস্পট হোক অথবা নন-হটস্পট, সমস্ত এলাকাতেই জন্মের সময় টিকাকরণ অবশ্যই দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু কনটেনমেন্ট এবং বাফার জোনে জন্মের সময় টিকাকরণ দিলেও অন্যান্য স্বাস্থ্য পরিষেবা বা সচেতনতামূলক প্রচার বন্ধ থাকবে। সেক্ষেত্রে বাফার জোনের বাইরে এসে অন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যের ৬৮তম করোনা হাসপাতাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ
সচেতনতা মূলক প্রচার বা মা-শিশুর স্বাস্থ্যের পরামর্শের বিষয়েও এই একই নিয়ম অনুসরণ করা হবে। ১০ থেকে ১৫ টি সেশনের মাধ্যমে ধাপে ধাপে ৫০০ জনকে পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে। প্রত্যেক সেশনে ৫ জনের বেশি না রাখার এবং প্রত্যেকের মধ্যে ১ মিটার দূরত্ব রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবশ্যই মাস্ক পরিহিত থাকতে হবে। তবে অসংক্রামিত এলাকায় জন্ম টিকাকরণ, মা-শিশুর প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং সচেতনতামূলক প্রচার সবকিছুই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে স্বাভাবিক থাকবে।
যেসব এলাকায় টিকাকরণ কর্মসূচি চালানো হবে সেখানে স্বাস্থ্য কর্মীর সংখ্যা অনুযায়ী আগে থেকেই দিন ভিত্তিক পরিকল্পনা বানিয়ে নিতে হবে স্বাস্থ্যকর্মীদের সার্জিকাল মাস্ক এবং গ্লাভস পড়তে হবে। গর্ভবতী মহিলাদের বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে হাসপাতালের সমস্ত কিছু আগে থেকে জীবানুনাশক করে রাখতে হবে। সাধারণ মানুষের হাত ধোয়ার জন্য ব্যবস্থা রাখতে হবে।
এছাড়াও ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বাচ্চাদের টিকাকরণ কার্ডে নিয়মিত টিকাকরণের হিসেব রাখতে হবে। প্রত্যেক হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে টিকা মজুত রাখতে হবে এবং পরিমাণ কম থাকলে অবিলম্বে স্বাস্থ্য দফতরকে জানাতে হবে। গত এক মাসে যাদের টিকাকরণ হয়নি তাদের প্রতি বিশেষ নজর এবং অগ্রাধিকার দিতে হবে।
এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় যেখানে স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা আশা কর্মীদের মাধ্যমে টিকা দেওয়া হয়, সেই প্রক্রিয়াও এ দিন থেকে চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকাকরণের ক্ষেত্রেও অবশ্যই মাস্ক পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন শিশু, আয়া বা গর্ভবতী মহিলা যদি জ্বরের মতো কোনও উপসর্গ ভোগেন, তাহলে তাদেরকে অবিলম্বে ফিভার ক্লিনিকে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিতে হবে। টিকাকরণ এর জন্য ব্যবহৃত সমস্ত জিনিসপত্র এবং যন্ত্রপাতি অবশ্যই স্যানিটাইজ করতে হবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584