সুদীপ কুমার খাঁড়া,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ

চিন্তাবিদ্ চার্লস ডিউই বলেছেন “বিদ্যালয় সমাজের ক্ষুদ্রতম সংস্করণ।” বিদ্যালয় যেমন একদিকে সমাজের দর্পণ তেমনি বিদ্যালয়ের সাথে সমাজের সম্পর্কও নিবিড়।বিদ্যালয় যে সমাজ বিচ্ছিন্ন কোন দ্বীপ নয় বরং তা সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ তা আবার প্রমাণিত হলো কেশপুর ব্লকের গড়সেনাপত্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর-১ চক্রের এই বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ৮৮ জন। বুধবার সন্ধ্যায় ঝড়বৃষ্টির কারণে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়।যারফলে বিদ্যালয়ের পাম্প থেকে মিড ডে মিলের প্রয়োজনীয় জল সংগ্রহ করতে না পারার কারণে বৃহস্পতিবার যখন মিড ডে -মিলের রান্নার কাজ অনিশ্চিয়তার মুখে
তখন এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা গৃহবধূ মিঠু ধূল্যা।


তিনি তাঁর বাড়ির সঞ্চিত জল “মিড ডে মিল“এ ব্যবহার ও শিক্ষার্থীদের থালা ধোওয়ার কাজে দিলেন।পাশাপাশি নিজের বাড়ির পাশের নলকূপটি মেরামতির জন্য তৎপরতা দেখালেন। শিক্ষকদের আহ্বানে ও মায়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মিঠুদেবীর কলেজ ও স্কুল পড়ুয়া দুই ছেলে মানস ধূল্যা ও সুমন ধূল্যা নলকূপ সারাতে তৎপর হলো।
আরও পড়ুনঃ নববর্ষের পরে মিড ডে মিলে প্রিয় চাউমিন
শেষমেষ অনিশ্চয়তা কাটিয়ে মিড ডে মিলের গরম ভাত,ডাল,তরকারি খেয়ে খুশি পার্থ, লব, প্রীতি ,সুদেবদের মতো বিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীরা।তাদের কথায় “আমাদের শিক্ষক মহাশয়েরা পড়াশোনা,খেলাধুলার পাশাপাশি আমাদের মিড ডে মিলের বিষয়ে খুবই যত্নবান।”
সহশিক্ষক অনুপম রায় বলেন,”পুষ্টি প্রকল্প ধারাবাহিকভাবে বজায় রাখতে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় ।”
অপর দুই সহ শিক্ষক উমাশংকর গিরি ও তমাল কুমার মান্না জানান যে, ” কখনো কখনো চালপ্রাপ্তি বিলম্বিত হলেও স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠী এগিয়ে এসে নিরবচ্ছিন্নভাবে মিড ডে মিল প্রকল্প বজায় রাখতে সাহায্য করেন।”
প্রধান শিক্ষক স্নেহাশিস চৌধুরী জানান,
“অভিভাবিকা মিঠু দেবী যেভাবে এগিয়ে এসে আমাদের সাহায্য করলেন তাতে আমরা আপ্লুত ।দায়িত্বও বেড়ে গেল আমাদের।এইভাবে এলাকার সবার সাহায্য ও পরামর্শ নিয়ে আগামী দিনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের আরোও মান উন্নয়নে আমরা সবাই সচেষ্ট থাকবো।”
এই ঘটনা প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাতে চাইলে বিদ্যাসাগর শিক্ষক শিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.বিশ্বজিৎ সেন বলেন , এই ধরনের ঘটনা সমাজের সঙ্গে বিদ্যালয়ের সম্পর্ককে আরও নিবিড় ও মজবুত করে তুলবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584