শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি,নতুন করে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের নির্দেশ হাইকোর্টের

0
115

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ধরে থমকে রয়েছে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ৷ থমকে থাকায় মেধাতালিকায় অনিয়ম-সহ গুচ্ছ অভিযোগ তুলে দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে মামলা৷ আর তার জেরেই দীর্ঘদিন ধরেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর জারি ছিল স্থগিতাদেশ৷ দীর্ঘ শুনানি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর অবশেষে রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট৷ তাতে বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার৷ গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন করে নিয়োগের রায় ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট৷ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসূমী ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চ৷

high court | newsfront.co
ফাইল চিত্র

প্রসঙ্গত, রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বরাবরই গলার কাঁটা রাজ্য সরকারের। সবকিছু সামলে বিধানসভা ভোটের আগে সমস্ত কিছু ঠিক করতে চেয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু হাইকোর্টের এই রায়ে রীতিমতো বিপদে ফেলে দিলো রাজ্য প্রশাসনকে।আদালতের নির্দেশ আসার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ প্রস্তুতি নিচ্ছে স্কুল সার্ভিস কমিশনও৷

আরও পড়ুনঃ নয়া তিন কৃষি আইনের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন

২০১১-২০১৬ সাল পর্যন্ত উচ্চ প্রাথমিকে সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দিয়েছে হাইকোর্ট৷ নিয়োগের গোটা প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল এই সমস্ত শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৷ সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ উচ্চপ্রাথমিকে প্যানেল থেকে শুরু করে মেধাতালিকা, সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কলকাতা হাইকোর্ট৷

তবে আগের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হলেও নিয়োগ বাতিল করা যাবে না বলে জানিয়েছে আদালত৷ আগামী ৪ জানুয়ারি থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে৷ ১০ মের মধ্যে ইন্টারভিউ নিতে হবে৷ ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করতে হবে৷ যারা নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে বাদ গিয়েছিল, তাদের সবাইকে সুযোগ দিতে হবে বলেও জানিয়েছে আদালত৷ চাইলে ভার্চুয়াল মোডেও হতে পারে নিয়োগ৷ আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, এই রায়ে এটা প্রমাণিত হল, যারা নতুন নিযুক্ত হবেন তারা দুর্নীতির মাধ্যমে নিযুক্ত হবেন না৷

আরও পড়ুনঃ আরও চাপে সরকার! কৃষক নেতাদের ইগো সরিয়ে আলোচনার আহ্বান কেন্দ্রের

মামলার শুনানিতে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ৷ শিক্ষক সংখ্যা অত্যন্ত কম৷ কিন্তু এই মূহুর্তে নিয়োগ প্রক্রিয়া যে পদ্ধতিতে চলছিল, সেই অনুযায়ী এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলতে পারে না৷ ফলে, আগের প্রক্রিয়া বাতিল করে সবাইকে সুযোগ দিয়ে নতুন করে নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷

২০১৫ সাল ১৬ আগস্ট প্রথম গোটা রাজ্যবাপী টেট পরীক্ষা হয়েছিল শিক্ষক নিয়োগের জন্য৷ সেখানে প্রশিক্ষিত চাকরি প্রার্থী হিসেবে ১ লক্ষ ২০ হাজার ও অপ্রশিক্ষিত চাকরি প্রার্থী হিসেবে ২ লক্ষ ২৮ হাজার প্রার্থী, সব মিলিয়ে অন্তত ২ লক্ষ ২৮ হাজার পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন৷ কিন্তু বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ না দেখে রাস্তায় নেমেছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ পুলিশের লাঠি, গ্রেপ্তারি, হেনস্থা, রাতভর ধর্না, গভীর রাতে পুলিশের তাণ্ডব, বিকাশ ভবন থেকে চাকরিপ্রার্থীদের তুলে দেওয়ার মতোর বিতর্কের পর ২০১৮ সালে চাকরিপ্রার্থীদের নথি যাচাইয়ের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বাধ্য হয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ তারপরে ২০১৯ সালে এ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়।

আরও পড়ুনঃ করোনা আক্রান্ত মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী

আর এই রায়ের ফলে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের জট খুলতে চলেছে বলেই মনে করছে আইনজীবী ও শিক্ষকদের একাংশ। শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের এজলাসে এই সংক্রান্ত ১৯৭৯ বেশি মামলার একযোগে নিষ্পত্তি হয় এই রায়ে। স্কুল সার্ভিস কমিশন কে নিয়োগ সংক্রান্ত গাইডলাইনও ঠিক করে দিয়েছে হাইকোর্ট।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here