নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
রাজা নেই,রাজত্বও নেই। রয়ে গিয়েছে রাজার মায়ের প্রতিষ্ঠিত কালী মন্দির। ঐতিহ্য মেনে প্রতিবছরই সেই মন্দিরে পুজো করে আসছে এলাকার বাসিন্দারা। প্রায় চারশো বছরের এই পুজো রাজার মায়ের কালী পুজো নামে পরিচিত।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা পুরসভার ২ নং ওয়ার্ড মিত্রসেনপুর এলাকায় টিনের ছাউনি দেওয়া ছোট্ট মন্দিরে মাটির তৈরি ১৪ ফুট উচ্চতার কালী মায়ের পুজো হয় মহাধুমধাম করে। মিত্রসেনপুর এলাকার মানুষ কমিটি গঠন করে রাজার আমলের প্রতিষ্ঠিত এই কালী মন্দিরে পুজোর আয়োজন করে। রাজার আমলে কালী পুজোয় ছাগ বলি দেওয়া হত,যা এখনও হয়ে আসছে।
এছাড়াও অনেকে মানত করে পুজোর দিন ছাগ বলি দিতে আসেন।সেই মাংস রান্না করে প্রীতিভোজের আয়জন হয়। কিন্তু এবছর করোনার জেরে তা বন্ধ থাকছে। অমাবস্যা তিথিতে মায়ের পুজো শুরু হলেও মা থাকেন ১১ দিন অর্থাৎ পুজোর ১১ দিনে পরে একাদশী, তারপরদিন পড়ে উত্থান একাদশী আর ওইদিনই হয় মায়ের বিসর্জন।রাজার মায়ের কালী চতুর্ভুজা,১৪ ফুট উচ্চতার বিভৎস কালো মূর্তিতে মায়ের রুপ দেখে আজও অনেকেই আঁতকে ওঠেন।
আরও পড়ুনঃ সতর্কতা মেনে শতাব্দী প্রাচীন ডাক-কর্মীদের কালীপুজো বালুরঘাটে
কথিত আছে,১৬১৭ সালে মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন ভানবংশের চন্দ্রকোনার রাজা হরিভান। কিন্তু মোঘলদের সাথে এঁটে উঠতে না পেরে আত্মসমর্পণ করেন এবং রাজা উপাধি পেয়েছিলেন।বিষ্ণুপুরের মল্লরাজ পরিবারের কন্যা লক্ষ্মণাবতী চন্দ্রকোনার রাজা হরিভানের বিধবা পত্নী ছিলেন। হরিভানের পুত্র রাজা মিত্রসেন মিত্রসেনপুর জনপদ তৈরি করেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ অডিটোরিয়াম বাঁচাতে গানে গানে প্রতিবাদ কান্দিতে
রাজা মিত্রসেনের মা লক্ষ্মণাবতী মিত্রসেনপুরে এই কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে ধুমধাম করেই পুজোর আয়োজন করতেন।বর্তমানে সেই পুজোর আয়োজন করে আসছেন মিত্রসেনপুরের অধিবাসীরা। আর কয়েকদিন পর কালী পুজো, রাজার মায়ের কালী পুজোর প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584