মনিরুল হক, কোচবিহারঃ
গর্ভের সন্তানকে নষ্ট না করায় স্ত্রীকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে দিনহাটার সাহেবগঞ্জ থানার অন্তর্গত নাজিরহাটের পূর্ব শিকারপুর গ্রামে। মৃতা ওই গৃহবধূর নাম জামিনা খাতুন। তার বাড়ি ভেটাগুড়ি ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের খারিজা বালাডাঙ্গা (শালমারা) এলাকায়।
ওই ঘটনার পর মৃত গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে সাহেবগঞ্জ থানায় অভিযুক্ত স্বামী বাহুল হাসান (সৌরভ) সহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ওই ঘটনার পর অভিযুক্ত স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির লোকেরা পলাতক। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনের মধ্যে ইলেকট্রনিক্সের গোডাউনে চুরি রায়গঞ্জে
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর দেড়েক আগে ভেটাগুড়ি ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের খারিজা বালাডাঙ্গা (শালমারা) এলাকায় জামিনা খাতুনের সাথে বিয়ে হয় নাজিরহাটের পূর্ব শিকারপুর এলাকার যুবক বাহুল হাসানের। বিয়ের কয়েক মাস যাওয়ার পর জামিনার গর্ভে সন্তান আসে। সেই মতে তার স্বামীর খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু তার স্বামী বাহুল, স্ত্রী জামিনার সাথে বিবাদ বাধায়।
মৃতা জামিনার দাদু সামছুল হকের অভিযোগ, জামিনাকে তার স্বামী গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বলে। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় জামিনার উপর অত্যাচার শুরু করে। তাকে না খাইয়ে রাখা হয়, বাড়ির বাইরে বের হতে দেওয়া হত না। ঘরের ভিতরে রেখে স্বামী বাহুল ও তার মা বাবা তাকে শারীরিক নির্যাতন করে বলেও অভিযোগ।
আরও পড়ুনঃ অবসাদের জেরে আত্মঘাতী এক ব্যক্তি, তদন্ত শুরু
গত ১১ মে সোমবার অশান্তি চরমে ওঠে। সেই সময় জামিনার পরিবারকে ফোন করে তার স্বামী ও শাশুড়ি।ফোনে মৃতা গৃহবধূর মাকে তার শাশুড়ি তাদের বাড়ি আসার আমন্ত্রণ জানায়। জামিনার পরিবারের লোকজন জামাইয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখেন বাড়ির সব ঘর বন্ধ। বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে জামিনার শাশুড়ি।
তখন জামিনার পরিবারের লোকজন তার শাশুড়িকে জামিনার কথা জিজ্ঞেস করলে তার শাশুড়ি ঘরের ভিতরে আছে বলে সরে পরে। পরিবারের লোকজন ঘরে গিয়ে দেখেন তাদের মেয়ে জামিলা ঝুলে রয়েছে। এই সুযোগে জামিনার শাশুড়িও পালিয়ে যায়। পরে ওই ঘটনার খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয় লোকজন ওই বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করে। পরে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত স্বামী সহ তিনজনেই পলাতক। মৃতার দাদুর দাবি, যারা আমার নাতিনিকে মেরেছে। তাদের প্রতেক্যের কঠোর শাস্তি চাই। এবিষয়ে সাহেবগঞ্জ থানার আই সি হেমন্ত শর্মা বলেন, পূর্ব শিকারপুর এলাকা থেকে একটি ঝুলন্ত দেহ পাওয়া গেছে। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বামী সহ তিনজনের বিরুদ্ধে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। ঘটনার তদন্ত চলছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584