‘হজে সুস্থ থাকতে পরামর্শ’ :- ডা:মেহেবুব আলম,
হাউস স্টাফ, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ।
হজ প্রত্যেক মুসলমানের জন্য পরম আরাধ্য। হজের রীতিনীতি বা আনুষ্ঠানিকতা এমনই যে, তাতে শারীরিক সামর্থ্য এবং সুস্থ থাকাটা বেশ জরুরি।
প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক ভারতীয় পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি যান। তাদের অনেকেরই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্নায়ু ও বাতরোগ, কিডনি জটিলতা ইত্যাদি আছে।
অনেকেই আবার সৌদি আরবে গিয়ে প্রচণ্ড গরম আবহাওয়া ও পরিশ্রমে অনেক হাজিই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই হজে যাওয়ার আগেই নিজ নিজ চিকিৎসকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকা ও ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করে নেওয়া ভালো।
হাঁটার অভ্যাস করে নিন: হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় প্রচুর হাঁটতে হয়। তাই খানিকটা হাঁটার অভ্যাস করে নিলে ভালো। আরামদায়ক হাঁটার জুতো কিনে নিন। একেবারে নতুন জুতো না নিয়ে আগেই এটা পরে বেশ হাঁটাহাঁটি করে মানিয়ে নিন।
অতিভোজন বা অল্পাহার থেকে সাবধান: সৌদি আরবের আবহাওয়া শুষ্ক ও উষ্ণ। তাই প্রচুর জল, ফল ও ফলের রস খাবেন। তবে ডায়াবেটিস থাকলে মিষ্টি পানীয় বা জুস পরিহার করবেন। পানি বেশি করে খান। খুব ঘামলে স্যালাইন খেতে পারেন। অতিভোজন বা অল্পাহার কোনোটাই করবেন না।
দরকার শুধু সচেতনতা: আবহাওয়ার এই শুষ্কতায় অভ্যস্ত নন বলে অনেক বাঙালির শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ হয়। আবার জনসমাগম বেশি বলে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ দ্রুত ছড়ায়। খুসখুসে কাশি, গলা ব্যথা, সর্দি, হাঁচি, জ্বর হওয়া বিচিত্র নয়। কুসুম গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করবেন। প্যারাসিটামল, অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ সঙ্গে নিন। মাস্ক ব্যবহার করা ভালো। ভয়ের কিছু নেই, দরকার শুধু একটু সচেতনতা।
একটানা পরিশ্রম করবেন না: গরমের কারণে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। একটানা রোদের মধ্যে হাঁটা বা পরিশ্রম থেকে বিরত থাকুন। মাঝে মাঝেই ঠান্ডা জায়গায় বসে বিশ্রাম নেবেন। অতি রোদে ছাতা ব্যবহার করুন। ঠেলাঠেলি এড়িয়ে চলুন।
ডায়াবেটিস থাকলে: ডায়াবেটিসের রোগীরা ওষুধ গ্রহণ করার পর সময়মতো খাবেন। রক্তচাপ বা হৃদরোগের ওষুধ, হাঁপানির ইনহেলার কখনোই বাদ দেবেন না।
প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে নিন: প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ, খাবার স্যালাইনের প্যাকেট, কাটাছেঁড়ার জন্য কটন ব্যান্ডেজ, আয়োডিন, স্যাভলন, অ্যান্টিসেপটিক ও পোড়ার মলম সঙ্গে নিন। গ্লকোমিটার, থার্মোমিটারও নিন। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র সঙ্গে রাখুন। চশমা নিন কয়েকটা।
সাহায্য নিন হেলথ ক্যাম্পের:অসুস্থবোধ করলে হেলথ ক্যাম্পের সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না।
সবচেয়ে ভালো হয় হজে যাওয়ার আগে একবার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া। তবে নিজের শারীরিক অবস্থার সম্যক ধারণা ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার মানসিকতা মনে থাকতে হবে। এটা আপনাকে খুব কাজে দেবে। এর ফলে আল্লাহতায়ালার রহমতে রোগ প্রতিরোধ করে আপনিও সুস্থ শরীরে সঠিক নিয়মে হজ পালন করতে পারবেন- ইনশাআল্লাহ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584