শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
সকলেই জানেন, মহালয়ার পর থেকে বাড়ছে সংক্রমণ। কিন্তু ৮ মাস ধরে ঘরবন্দি বাঙালিকে তার শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর আগে আটকে রাখবে, সে সাধ্য বোধহয় করোনারও নেই। যে মহামারীর সংক্রমণ ও মৃত্যুভয়ে কাঁপছে গোটা বিশ্ব, তাকে ফুৎকারে উড়িয়ে পুজোর আগে পরিচিত ঢঙেই রমরমিয়ে পুজোর শপিং সেরে ফেললেন বাঙালিরা।
শহরজুড়ে নতুন জামা, জুতো, গয়না কেনার হিড়িকের মধ্যে শুধু হারিয়ে গিয়েছে করোনার ভয়। মাল কেনাকাটার অছিলায় তাই পুজোর বাজারে শারীরিক দূরত্ব মানা কিংবা মাস্ক পরার প্রবণতা কার্যত উধাও ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে।
নিউ মার্কেট-সহ গোটা এসপ্ল্যানেড চত্বর যেন জনস্রোতের আকার নিয়েছে। কারও মাস্ক ঝুলছে গলায় তো কারও সেটুকুরও বালাই নেই। মাস্ক নেই কেন জানতে চাইলে তখন হয়ত ব্যাগ থেকে বেরিয়ে আসছে মাস্ক।
আরও পড়ুনঃ রোগীর পরিবারকে হেনস্থার অভিযোগে বেহালার বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর, লাঠিচার্জ পুলিশের
নিউমার্কেটের মতো একই ছবি হাতিবাগানেও। ভিতরের মার্কেটে ঢোকার মুখে আগত ব্যক্তিদের জ্বর রয়েছে কিনা, তা মাপা হচ্ছে বটে। কিন্তু ভিড়ে ঠাসা গলিতে দূরত্ববিধি মানার কোনও ব্যবস্থাই চোখে পড়বে না।
দোকানি, ক্রেতাদেরও অনেকেরই মুখে নেই মাস্ক। দোকানি ও ক্রেতাদের একই উত্তর, ‘এতক্ষণ মাস্ক পরে থাকা যায় নাকি!’ গড়িয়াহাটেও চিত্রটা খুব একটা আলাদা নয়।
ব্যাগভর্তি কেনাকাটির পর বাড়ি ফেরা অনেকেরই মাস্ক ঝুলছে গলায়। অনেকের মুখে মাস্কই নেই। আবার সব ভুলে অনেকে রেস্তোরাঁতে খেতেও ঢুকে যাচ্ছেন। যদিও সে ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউই আপলোড করছেন না।
আরও পড়ুনঃ পুজোর পরেই করোনার সুনামি! মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সতর্কবাতা চিকিৎসকদের
দুর্গাপুজোয় কোভিড নির্দেশাবলী প্রয়োগ নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তার আগেই পুজোর শপিংয়ে যেভাবে বাঙালি তার পরিচিত পাগলামি শুরু করেছে, তাতে পুজোর আগেই যে সংক্রমণ ফের মহামারী আকার নেবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ইতিমধ্যেই পুজোর পর করোনার সুনামি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সতর্কবার্তা জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম। পুজোর শপিংয়েই যে চিকিৎসকদের সতর্কবাণী সত্যি হতে চলেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এরপর সংক্রমণের হার কি হতে চলেছে, তা হয়তো উত্তর দেবে সময়ই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584