শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে কোভিড লড়াইয়ের মধ্যে খাবারের বিল নিয়ে বিশাল দুর্নীতি প্রকাশ্যে এল। করোনার বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সীমিত সংখ্যক চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়েই লড়াইটা শুরু করেছিল স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশে রীতিমত নাওয়া খাওয়া ভুলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরাও। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ৭ মে থেকে কোভিড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পর থেকে করোনা চিকিৎসা মোকাবিলার জন্য কয়েকশো অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক চতুর্থ শ্রেণির কর্মীও নিয়োগ করে।
এদের সবার জন্যই দিনরাত দু’বেলা খাবার ব্যবস্থা করা হয় হাসপাতালে তরফ থেকে। সবার খাবারের জন্য কোভিড ফান্ড থেকে খরচের ব্যবস্থা করেছিল মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুনঃ অক্টোবরের শুরুতে তিন দিন বন্ধ থাকবে শিয়ালদহ উড়ালপুল
গত ২৭ জুলাই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের নতুন পদে যোগ দেন মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার পরেই তার আগের সময়ের খাবারের বিল খতিয়ে দেখতে গিয়ে রীতিমত চক্ষু চড়কগাছ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
নতুন অধ্যক্ষ দেখেন, তাঁর আসার আগে গত ২ মাস ২০ দিনে খাবারের বিল এসেছে দেড় কোটি টাকা। খাবারের পিছনে এই বিপুল খরচের কথা জানতে পারে স্বাস্থ্য দফতর।
আরও পড়ুনঃ করোনা যুদ্ধে আগামী এক মাস রাজ্যের ডাক্তার-নার্সদের থাকতে হবে হাসপাতালেই!
তদন্তে দেখা যায়, সকালের ডিউটি বা নাইট শিফটে আসা ডাক্তার-নার্স,স্বাস্থ্যকর্মীরাও দুপুরের বা রাতের খাবারে ভাগ বসিয়েছেন। অর্থাৎ চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের খাবারের বিল নিয়ে যে বিশাল মাপের দুর্নীতি হয়েছে, তা দিনের আলোর মত পরিষ্কার।
প্রসঙ্গত, কোভিড যুদ্ধ চলাকালীন এসএসকেএম হাসপাতালে উডবার্ন ওয়ার্ডে খাবার সরবরাহকারী একটি বেসরকারি সংস্থা এই খাবারের দায়িত্ব পেয়েছিল। প্রতিটা খাবারের প্যাকেটের দাম ২২০ টাকা করে। প্রতিদিন প্রতি বেলায় হাসপাতালে ৪০০ থেকে ৪৫০ প্লেট খাবার সরবরাহ করেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত এই বেসরকারি সংস্থা।
আরও পড়ুনঃ ৮০ দিনে কলকাতা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের খাবারের বিল দেড় কোটি
অর্থাৎ প্রতিদিন ৮০০ থেকে ৯০০ প্লেট খাবার দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই ২ মাস ২০ দিনের খাবারের বিল দেড় কোটিতে পৌঁছে গিয়েছে। যদিও এত পরিমাণ খাবার চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরাই খেয়েছেন না কি বাইরের লোকজন, তা এখনও পরিষ্কার করে জানা যায়নি।
এই ঘটনার পরই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবার থেকে প্রতিদিন ১০০-র বেশি খাবারের প্লেট সরবরাহ করা হবে না। আর ১৬০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে প্রতি প্লেটের দাম রাখা হবে।
এমনকি যে চিকিৎসক-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি থেকে যাতায়াত করছেন, তাঁদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা রাখা হবে না৷ এর পাশাপাশি আগের এই বিপুল পরিমাণ খাবার শুধু চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীরাই খেয়েছেন না কি অন্যরা, তা তদন্ত করে দেখা হবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584