স্ত্রীকে খুন করে দেহ লোপাটের পর নাকা তল্লাশিতে পুলিশের জালে স্বামী

0
64

উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ

arrested | newsfront.co
প্রতীকী চিত্র

বার ড্যান্সার স্ত্রীকে খুন করার পর কয়েক কিলোমিটার দূরে এনে দেহটি ফেলে দিয়ে পালাতে গিয়ে গ্রেফতার হল অভিযুক্ত স্বামী। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বাসন্তী হাইওয়ে নাকা তল্লাশির সময় জীবনতলা থানার পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেফতার হওয়া যুবকের নাম শাহরুখ আহমেদ। নিহত মহিলার নাম হামা কামাল।

পুলিশ সূত্রে খবর, গভীর রাতে জীবনতলা থানার পুলিশ বাসন্তী হাইওয়েতে সরবেড়িয়ার কাছে শুরু করে প্রতিদিনের মতো নাকা চেকিং। সেই সময় কালো রঙের একটি গাড়িতে নাকা চেকিংয়ের সময়ে তল্লাশি চালাতে গিয়ে দেখা যায়, গাড়ির পিছনের সিটে রক্তের দাগ। কী কারণে এই দাগ, তা জানতে চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটির চালক গার্ডরেল ভেঙে পালানোর চেষ্টা করে। তাতে গাড়িটি পড়ে যায় পাশের নয়ানজুলিতে। পালিয়ে যায় গাড়ির মধ্যে থাকা শাহরুখ আহমেদ। পলাতকের খোঁজে জীবনতলা থানার ওসি প্রশান্ত দাসের নেতৃত্বে শুরু হয় তল্লাশি। গাড়ি নয়ানজুলিতে ফেলে প্রায় দুশো মিটার দূরে বাঁশ বাগানের মধ্যে গিয়ে গা ঢাকা দেয় ওই দুষ্কৃতী। রাতের অন্ধকারে বিস্তর খোঁজাখুঁজি পর সেখান থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপর চলে পুলিশের ম্যারাথন জেরা।

পুলিশি জেরায় প্রথম নানা প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেলেও পরে শাহরুখ সব স্বীকার করে নেয় বলে দাবি পুলিশের। সে স্বীকার করে যে, তার স্ত্রীর সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে বনিবনা হচ্ছিল না। সাত বছর আগে কলকাতার রামমোহন সরণি হামা কামারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের ছ’বছরের এক সন্তানও আছে। ইদানিং সে স্বামীর সঙ্গে থাকছিল না। হামা যাদবপুরে বিক্রমগড়ে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করে চলতি বছরের গত পনের জানুয়ারি থেকে। ইতিমধ্যে একটি বারে ড্যান্সার হিসাবে কাজও শুরু করে সে। জেরায় পুলিশ জানতে পারে, তা মেনে নিতে পারেনি শাহরুখ। সে জানিয়েছে, আরও জানায় ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল স্ত্রী হামা।

আরও পড়ুনঃ ভোররাতে পুলিশের হানা, জলঙ্গীতে আটক ঘিরে চাঞ্চল্য

দু-তিনজন পুরুষের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা তাকে যখন যাদবপুরের বিক্রমগড় থেকে নারকেলডাঙার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়, তখনও তার মোবাইলে একাধিক নম্বর থেকে ফোন আসতে শুরু করে। তা নিয়ে শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গন্ডগোল। বচসা চলাকালীনই হামাকে গলা টিপে খুন করা হয়। হত্যা নিশ্চিত করতে নারকেলডাঙা খালপাড়ে স্ত্রীর দেহ নিয়ে গিয়ে ইট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয় তার মাথা। দেহটি গাড়িতে করে নিয়ে এসে প্রগতি ময়দান থানার বানতলার কাছে ফেলে দেওয়া হয়। দেহ ফেলে পালাতে গিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়ে ওই যুবক।

আরও পড়ুনঃ ডোমকলে পথ দুর্ঘটনায় মৃত ১, আহত ২

শুক্রবার সকালে প্রগতি ময়দান থানা এলাকায় এক অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। সেই দেহ ছবি দেখানোর পর সে স্বীকার করে এটি তার স্ত্রী এবং সে খুন করে দেহটি ফেলে রেখে চলে এসেছে। শুক্রবার তাকে আলিপুরে আদালতে তোলা হবে। এ বিষয়ে বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, “খুন হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই নাকা তল্লাশিতে গাড়ি-সহ দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করায় এটি জেলা পুলিশের একটি বড় সাফল্য।“

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here