নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজরের ছদ্মবেশে ১৭ জন মহিলাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বর পণ বাবদ ৬.৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ধৃত এম শৃণু নায়েক নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে হায়দ্রাবাদে। এই টাকা দিয়ে তিনি একটি বাড়ি কিনেছেন, একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়িও কিনেছেন অবশেষে হায়দ্রাবাদ পুলিশ গ্রেপ্তার করে অভিযুক্তকে।
হায়দ্রাবাদের পুলিশ কমিশনার অঞ্জনি কুমার জানিয়েছেন, ধৃত এম শৃণু নায়েক আসলে অন্ধ্র প্রদেশের প্রকাসম জেলার বাসিন্দা। ২০০২ সালে তাঁর বিয়ে হয় সেখানকার-ই ডিস্ট্রিক্ট মেডিক্যাল এন্ড হেল্থ দপ্তরের এক সুপারিনটেনডেন্টের সঙ্গে। ২০১৪ সালে নায়েক চলে আসেন হায়দ্রাবাদে।
হায়দ্রাবাদে আসার পর অভিযুক্ত এম শৃণু নায়েক, প্রথমে তাঁর পরিবারকে জানান যে, তিনি সেনাবাহিনীতে চাকরি পেয়েছেন। এরপর শুরু হয় তাঁর আসল খেলা, প্রথমে একটি জাল আধার কার্ড তৈরি করেন, এই আধার কার্ড অনুযায়ী তাঁর জন্ম তারিখ ২৭ অগাস্ট ১৯৮৬ যদিও আসল জন্মসাল ১৯৭৯।
আরও পড়ুনঃ স্ত্রীকে ভিডিও কল করে ‘লাইভে’ আত্মঘাতী সিভিক ভলেন্টিয়ার স্বামী
এরপর জোগাড় করেন সেনা বাহিনীর একটি জালি আই ডি কার্ড এম এস চৌহান নামে। অন্যান্য জিনিস পত্রের পাশাপাশি কেনেন, সেনা বাহিনীর ইউনিফর্ম, টুপি, জুতো এবং পদমর্যাদা পরিচয় চিহ্ন (ইনসিগনিয়া), খেলনা পিস্তল। এইসব পোশাকে প্রচুর ছবি তোলেন ও তা পোস্ট করতে থাকেন সোশ্যাল মিডিয়াতে, চরিত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা আনার জন্য। একই সঙ্গে মেঘালয়ের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে একটি এম টেক ডিগ্রির সার্টিফিকেটও জোগাড় করে ফেলেন তিনি।
এরপর শুরু হয় নায়েকের আসল উদ্দেশ্য চরিতার্থের খেলা। বিভিন্ন ম্যাট্রিমনিয়াল এজেন্সি থেকে আর্থিকভাবে সম্পন্ন পরিবারের বিবাহযোগ্যা কন্যাদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করে পরিবারগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করতেন বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে, সুপ্রতিষ্ঠিত পাত্র দেখে কন্যাপক্ষ ও উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়তেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। এরপর তাঁদের বিশ্বাসভাজন হয়ে বাকি কাজ উদ্ধার করতেন এম শৃণু নায়েক ওরফে মেজর এমএস চৌহান। এইভাবে ১৭টি পরিবার থেকে পণ বাবদ তিনি হাসিল করেন মত ৬.৬ কোটি টাকা।
আরও পড়ুনঃ মোহনপুরের রেমু এলাকা থেকে একটি পূর্ণ বয়স্ক বনবিড়াল উদ্ধার
পুলিশ জানিয়েছে গত শুক্রবারও আরেকটি ‘এনগেজমেন্ট’ এর খেলা ছিল তাঁর। তার আগেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেলেন জালিয়াত, হায়দ্রাবাদ পুলিশের কাছে অভিযোগ ছাড়াও রাচাকন্ডা থানায় আরও দুটি অভিযোগ জমা পড়েছিল তার নামে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে সবকটি অভিযোগের অভিযুক্ত একই ব্যক্তি।
এম শৃণু নায়েক পুলিশের হাতে ধরা পড়ার আগে পর্যন্ত ১৭ জন মহিলার অধিকাংশই জানতেন না যে তাঁরা জালিয়াতির শিকার হয়েছেন এবং সেনাবাহিনীর মেজরের ছদ্মবেশে তাঁদের সাথে জালিয়াতি করেছেন নায়েক।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584